
টমেটো ক্ষেতের পরিচর্চা করছেন ওহিদুল ইসলাম, ইনসেটে উৎপাদিত টমেটো
চারিদিকে মানুষে যখন হতাশা আর উদ্বেগ। তখন বাহুবলী জাতের টমেটো হাসি ফুটাল সৈয়দপুরে অহিদুলের। উন্নত জাতের টমেটো আবাদে মিলছে আশানুরূপ ফলন। তিনি এ টমেটো চাষাবাদে তাঁর ব্যয়ের তিন-চার গুন বেশি লাভের আশা করছেন। ইতোমধ্যে দৈনিক শতশত কেটি টমোটো বিক্রি করেন এই জনপ্রতিনিধি।
জানা গেছে, উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের দক্ষিণ অসুরখাই সরকারপাড়া গ্রামের কৃষক অহিদুল ইসলাম। বর্তমানে তিনি একজন জনপ্রতিনিধিও। অহিদুল তাঁর বাড়ি সাথে ২০ শতক জমিতে উচ্চমূল্য ও নিরাপদ সবজি উৎপাদন প্রদর্শনী প্লটে উন্নত বাহুবলী জাতের টমেটো আবাদ করেছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের রংপুর বিভাগ কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের আর্থিক সহযোগিতায় ওই টমেটো আবাদ করা হয়েছে।
এই প্রকল্প থেকে কৃষক অহিদুল ইসলামকে টমেটো চাষের প্রয়োজনীয় বীজ ও সার সরবরাহ করা হয়। গেল বছরের ১০ নভেম্বর জমিতে ওই টমেটোর চারা রোপন করেন তিনি। অহিদুল ও তাঁর পরিাবরের সদস্যদের সার্বিক পরিচর্যায় এবং সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দিকনিদের্শনা ও তদারকিতে চারা রোপনে পর নির্দিষ্ট সময়ে টমেটো ক্ষেতে ফলন আসেন। বিপুল সংখ্যক টমেটো ধরে ক্ষেতের প্রতিটি টমেটো গাছে। আর এর পর ৪০ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে গাছের টমেটোগুলো খাবার উপযোগী হয়ে উঠে। সেই থেকে কৃষক অহিদুল প্রতি সপ্তাহে দুই দিন করে ক্ষেত থেকে টমেটো উত্তোলন করে বাজারে বিক্রি করে আসছেন। ক্ষেত থেকে ২০০ কেজিরও বেশি টমেটো মিলছে একদিনেই।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কৃষক অহিদুলে ক্ষেত থেকে পরিবারের সদস্যরা টমেটো ছিঁড়ছেন। গাছ থেকে টমেটো ছিঁড়ে প্লাষ্টিকের ক্যারেটে রাখা হচ্ছে। ওই দিন তাঁর ক্ষেত থেকে টমেটো তুলে সে সব ১১টি প্লাষ্টিকের ক্যারেটে ভর্তি করা হয়েছে। প্রতিটি ক্যারেটে ২১/২২ কেজি করে টমেটো রয়েছে। সে হিসেবে ওই দিন প্রায় ২৩০ কেজি থেকে ২৪০ কেজি পর্যন্ত টমেটো মিলেছে তাঁর ক্ষেত থেকে।
কৃষক অহিদুল ইসলাম বলেন, টমেটো আবাদে জৈব সার ব্যবহার করা হয়। কোন রকম রাসায়নিক সার কিংবা কীটনাশক ব্যবহার করা হয়নি। আর পোকামাড়কের উপদ্রব থেকে টমেটো ক্ষেত বাঁচাতে ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করেছেন। তাঁর ২০ শতক জমিতে টমেটো চাষে ২০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। ইতোমধ্যে তিনি প্রায় ৩৫ হাজার টাকার টমেটো বাজারে বিক্রি করেছেন। আর তাঁর টমেটো ক্ষেত থেকে চলতি মার্চ ও আগামী এপ্রিল মাস পর্যন্ত টমেটোর ফলন এবং টমেটো আবাদের খরচের চেয়ে ৪/৫ গুন টাকা বেশি টাকার টমেটো বিক্রি করে আসবে বলে আশা করছেন তিনি ।
সম্প্রতি কৃষক অহিদুলের টমেটো ক্ষেত পরিদর্শন করেছেন রংপুর বিভাগ কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়ন প্রকল্পের প্রজেক্ট কো -অর্ডিনেটিং ডিরেক্টর ড. মো. আব্দুস সালাম, ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (আইএসডিবি) ঢাকা রিজিয়ন হাব এর অপারেশন টীম লিডার নাসের মোহাম্মদ ইয়াকুবু, এলজিইডির স্থানীয় সরকারের প্রজেক্ট অর্ডিনেটর কান্তেশ্বর বর্মা, সিনিয়র মনিটরিং অফিসার আবু ফাত্তাহ মো. রওশন কবিরসহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ধর্তন কর্মকর্তারা।
এ সময় প্রকল্পের কর্মকর্তারা কৃষক অহিদুলের টমেটো ক্ষেত ও ফলন দেখে সন্তোষ প্রকাশ এবং প্রশংসা করেন। সেই সঙ্গে তারা টমেটো চাষাবাদ ও বাজারজাতকরণ বিষয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন।
সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ ধীমান ভুষণ, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কৃষিবিদ মো. সালাহউদ্দিন, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ডিপ্লোমা কৃষিবিদ মমিনুর মোস্তফা জামান, কৃষি উদ্যোক্তা মো. আহসান উল- হক বাবু, মো. মাজাহ্রাুল ইসলাম মিজু বসুনিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আপন দেশ/এবি