Apan Desh | আপন দেশ

চাষীর মাথায় হাত, আমের কেজি ২ টাকা!

রাজশাহী ব্যুরো

প্রকাশিত: ১২:৪৭, ২৯ এপ্রিল ২০২৩

আপডেট: ১৫:১৭, ২৯ এপ্রিল ২০২৩

চাষীর মাথায় হাত, আমের কেজি ২ টাকা!

ছবি : সংগৃহীত

টানা প্রায় এক মাস ধরে দাবদাহে পুড়ছিল দেশ। তীব্র খরায় বোঁটা শুকিয়েছিল গুটি আমের। হঠাৎ কালবৈশাখীতে রাজশাহী অঞ্চলে ঝরে পড়ে সেই আম। ঝরে পড়া আম এখন বাজারে বিক্রি হচ্ছে মাত্র ২ টাকা কেজি দরে। এ অবস্থায় চরম হতাশায় পড়েছেন স্থানীয় আম চাষিরা।

রাজশাহীর চারঘাট ও বাঘা উপজেলা আমের জন্য বিখ্যাত। এ দুই জেলাতেই বাগান বেশি। জেলায় ১৭ হাজার ৯৪৩ হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। এর মধ্যে চারঘাট ও বাঘা রয়েছে ১২ হাজার ২১৮ হেক্টর, যা পুরো জেলার দুই-তৃতীয়াংশ। চলতি মৌসুমে এ দুই উপজেলায় ৭৫-৮০ শতাংশ আম গাছে মুকুল এসেছিল। 

তবে বুধবারের ঝড়ে বেশিরভাগ বাগানের আম ঝরে পড়েছে। ঝরে পড়া আম দুদিন ধরে রাজশাহীর বিভিন্ন বাজারে বিক্রি হচ্ছে। আম কেনার ধুম পড়েছে ফড়িয়া ব্যবসায়ীদের মধ্যে। তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রতি কেজি আম কিনছেন মাত্র দুই টাকা কেজি দরে। 

চাষিরা বলছেন, মৌসুমের শুরুতেই তীব্র খরায় আম নিয়ে বিপাকে পড়েন তারা। গাছের গোঁড়ায় রস না থাকায় বোঁটা শুকিয়ে গুটি ঝরে পড়া শুরু হয়। এর মাঝে আবার আঘাত হানে কালবৈশাখী। সব মিলিয়ে কয়েকশ মণ আম ঝরে গেছে। বেশিরভাগই ল্যাংড়া, ফজলি ও হিমসাগর জাতের। 

চারঘাটের রাওথা গ্রামের চাষি রবিউল ইসলাম বলেন, ‘আমার ছয় বিঘা বাগানে প্রায় পাঁচ মণ আম ঝরে গেছে। দুই টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি।’

একই এলাকার আম ব্যবসায়ী সেতাব আলী জানান, গ্রামে ঘুরে ঘুরে ঝরে পড়া আম ৮০ টাকা মণ দরে কিনেছেন। এসব আম প্রতি মণে ২০ থেকে ২৫ টাকা লাভে আড়তদারের কাছে বিক্রি করবেন।

পরানপুর এলাকার আম চাষি আনোয়ার হোসেন বলেন, ঝরে পড়া আম আড়তে এনে দুই-তিন টাকা কেজি বিক্রি করছি। এতে গাড়ি ভাড়া ও শ্রমিক খরচই উঠবে না। এখানে সংরক্ষণাগার থাকলে এতটা লোকসান হতো না।

ভায়ালক্ষ্মীপুর এলাকার আড়তদার মোজাম্মেল হক বলেন, ফড়িয়াদের কাছে থেকে ১০০-১১০ টাকা মণ দরে ঝরে পড়া আম কিনছি। ঢাকায় পাঠাব। কিন্তু আমের চেয়ে পাঠানোর খরচই বেশি। ট্রাক ভাড়া ৩০ হাজার টাকা দেয়ার পর এই আম বিক্রি করে লাভ করা কঠিন।

চারঘাট উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা খন্দকার ফিরোজ মাহমুদ বলেন, ঝড়ের সঙ্গে বৃষ্টি আমের জন্য খুব উপকারই হয়েছে। এতে আমের বোঁটা শক্ত ও পরিপক্ব করে হবে। বড় ধরনের ঝড় না হলে এখনো গাছে যে পরিমাণ আম আছে, তাতে চাষিরা লাভবান হবেন। তবে ঝড়ে কিছু আম ঝরে পড়েছে।

রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোজদার হোসেন বলেন, বিভিন্ন উপজেলায় শিলাবৃষ্টি হয়েছে। এতে যেমন উপকার হয়েছে ফসলের, কিছুটা ক্ষতিও হয়েছে। তবে বিশেষ করে আমের ক্ষতি হয়েছে শিলাতে। আর ঝরে ঝরে পড়েছে। ক্ষয়ক্ষতির নিরূপণের কাজ চলছে।

আপন দেশ/আরএ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ