Apan Desh | আপন দেশ

‘মা ও দুই সন্তানকে গলা টিপে হত্যা করে সাগর’

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৯:০৬, ৩ অক্টোবর ২০২২

আপডেট: ২০:৩০, ৩ অক্টোবর ২০২২

‘মা ও দুই সন্তানকে গলা টিপে হত্যা করে সাগর’

ছবি: সংগৃহীত

সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে মা ও ২ সন্তান হত্যার মূল ঘাতক সাগরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের ২৪ ঘণ্টা না পেরুতেই মূল ঘাতককে গ্রেফতারের মাধ্যমে রহস্য উদঘাটন করে সিরাজগঞ্জ পুলিশ।

জিজ্ঞাসাবাদে ট্রিপল মার্ডারের লোমহর্ষক বর্ণনা দেয় সাগর। ঘাতক সাগর সম্পর্কে নিহত রওশন আরার সৎ মামা। শনিবার বিকালে বেলকুচি উপজেলার মধুপুর গ্রামের সুলতান আলীর স্ত্রী রওশন আরা বেগম (৪০) এবং দুই পুত্র জিহাদ (১০) ও মাহিম (৪) এর মরদেহ তালাবদ্ধ ঘর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। ৩দিন আগে তাদের হত্যা করার কারণে লাশগুলো ফুলে দুর্গন্ধ বের হয়।

এ ঘটনায় ২ অক্টোবর নিহত রওশন আরার ভাই নুরুজ্জামান বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে বেলকুচি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। 
ট্রিপল মার্ডারের বিস্তারিত তুলে ধরতে সোমবার দুপুরে সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল। এতে তিনি বলেন, উল্লাপাড়া উপজেলার নন্দিগাতী গ্রামের মৃত মোকছেদ আলীর ছেলে আইয়ুব আলী সাগর ট্রিপল মার্ডারের মূল ঘাতক।

সাগরকে গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন। সাগর পেশায় একজন তাঁত শ্রমিক। তার পেশার আয় দিয়ে সংসার নির্বাহ না হওয়ায় বিভিন্ন সময় ব্র্যাক, সাউথ বাংলা, মানবমুক্তি ও তাঁতী সমিতির এনজিও থেকে ক্ষুদ্র ঋণ নেয়। সংসারের খরচ মেটানো এবং এনজিওর কিস্তি এক সাথে চালানো কঠিন হয়ে পড়ে।

খরচ ঋণগ্রস্ততার কারনে সে চরম হতাশাগ্রস্ত ছিলো। নিহত রওশন আরা সাগরের সৎ ভাগনি। প্রায়ই সে তার ভাগনির বাসায় যাতায়াত করতো। গত ২৬শে সেপ্টেম্বর সাগর রওশন আরার বাড়িতে যায় এবং ভাগনির কাছে টাকা হাওলাত চায়। কিন্তু কোন টাকা পায় না। পরে ঐদিন বাড়ীতে ফিরে কিস্তির টাকা যোগাড় করতে না পারায় তার ভাগনির বাসায় চুরি করার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই জন্য ২৮শে সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় সাগর আবার তার ভাগনি রওশন আরার বাড়িতে যায়। রাতে সবার সঙ্গে খাবার খেয়ে একই ঘরে ঘুমিয়ে পরে।

মাঝরাতে ভাগনির ঘরে চুরি করার উদ্দেশ্যে রওশন আরার আঁচল থেকে সিন্ধুকের চাবি খুলে নেয় এবং সিন্ধুক খুলে টাকা ও গহনা খুঁজতে থাকে। এক পর্যায়ে রওশন আরা জেগে উঠলে সাগর পাশে থাকা পাথরের শিল দিয়ে রওশন আরার বুকে আঘাত করে গলা চিপে হত্যা নিশ্চিত করে। এরপর  সে ধারাবাহিকভাবে আবার সিন্ধুকে টাকা গহনা খুঁজতে থাকে।

একপর্যায়ে রওশন আরার ছোট ছেলে মাহিন জেগে কান্না শুরু করলে সাগর তাকেও গলা চিপে হত্যা করে। সে আবার সিন্ধুকের কাছে যায়। এসময় বড় ছেলে জিহাদ জেগে উঠলে তাকেও গলা চিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। কিন্তু রওশন আরার ঘরে থাকা সিন্ধুকে কোন টাকা বা গহনা আর খুজে পায়নি সাগর। পরে ফজরের আযান হলে ঘর থেকে বের হয়ে বাইরে শিকলে তালা দিয়ে চলে যায়।  জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাগরকে আদালতে প্রেরণ করা হবে বলে পুলিশ সুপার জানান।  

 

আপন দেশ ডটকম/কেএস
 

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়