Apan Desh | আপন দেশ

পরিবহন ধর্মঘট: আগেভাগেই রংপুর চলে আসছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা

রংপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২১:২০, ২৭ অক্টোবর ২০২২

আপডেট: ১৩:২৮, ২৮ অক্টোবর ২০২২

পরিবহন ধর্মঘট: আগেভাগেই রংপুর চলে আসছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা

ছবি-সংগৃহীত

আগামী শনিবার রংপুরের কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সেই সমাবেশকে ঘিরে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই ৩৬ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট ডেকেছে জেলা মটর মালিক সমিতি।

পরিবহন সঙ্কটের কথা ভেবে দুদিন আগেই রংপুর শহরে চলে এসেছেন আশপাশের জেলা-উপজেলার বিএনপি নেতাকর্মীরা। ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে এখনও আসছেন তারা। কেউ হোটেলে উঠেছেন। আবার তাদের কেউ আত্মীয়ের বাড়িতে রয়েছেন। যেকোনো উপায়ে গণসমাবেশ সফল করতে চান দলটির নেতারা।

বৃহস্পতিবার  সরেজমিনে রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে দেখা যায়, বিভিন্ন জেলা থেকে এসে অবস্থান নিয়েছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। তারা বলছেন, সরকার এর আগে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও খুলনায় গণসমাবেশ ঠেকাতে পরিবহন ধর্মঘটের নামে বাধা সৃষ্টি করেছিল। একই অবস্থা এখন রংপুরেও বিরাজ করছে। ধর্মঘটের বিষয়টি মাথায় রেখে অনেকে আগেই সমাবেশস্থলে এসেছেন।

মোস্তাফিজুর রহমান ও রহিদুল ইসলাম নামে বিএনপির দুই  লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের আজিজপুর গ্রাম থেকে সমাবেশস্থলে এসেছেন। সঙ্গে চিড়া-মুড়ি-কম্বলও নিয়ে এসেছেন তারা।

রহিদুল ইসলাম বলেন, ‘হামরা জানি সরকার বাধা দিবে, ওই তকনে আগোতে চলি আসছি। বুধবার চাচাক নিয়্যা পাটগ্রাম থাকি ট্রেনোত করি রংপুর আসছি। আইতোত স্টেশনোতে ঘুমাইছি। আইজ সকালে হাঁটতে হাঁটতে মাঠোত চলি আসছি। হামার সাথে চিড়া, মুড়ি, কম্বল সোগে আছে। কষ্ট হইলেও সমাবেশ দেখি তারপর বাড়ি যামো।’

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বাস বন্ধের আশঙ্কা থেকে আমরা তিনদিন আগেই রংপুর এসেছি। আমাদের মতো আরও অনেকেই আসছেন। যত সমস্যাই হোক আমরা রাতে মঞ্চের আশপাশে কম্বল বিছিয়ে ঘুমাব। সমাবেশের মাঠেই থাকব।’

তাদের মতো আরও অনেকেই  বিএনপির সমাবেশে যোগ দিতে এখন রংপুরে অবস্থান করছেন। মাঠে কথা হয় দিনাজপুর থেকে আসা মামুনুর রশিদের সঙ্গে। তিনি জানান, তাদের অন্তত ২০ জন একসঙ্গে রংপুরে এসেছেন। কেউ হোটেলে উঠেছেন। আবার তাদের কেউ আত্মীয়ের বাড়িতে রয়েছেন। সন্ধ্যার দিকে দিনাজপুরের বিভিন্ন উপজেলা থেকে আরও অনেকেই রংপুরে আসবেন।

রংপুর জেলা যুবদলের সভাপতি নাজমুল আলম নাজু বলেন, ‘সমাবেশ হবে শনিবার, অথচ দলের নেতা-কর্মীরা বুধবার থেকেই রংপুরে আসতে শুরু করেছেন। সরকার যেভাবে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর নির্যাতন, নিপীড়ন ও সভা-সমাবেশ বাধাগ্রস্ত করছে, তারই প্রতিবাদ জানাতে তৃণমূল প্রস্তুত। বিভাগীয় এই গণসমাবেশ সফল করতে দলের অনেক কর্মী ও সমর্থক নিজের জমি পর্যন্ত বন্ধক রেখে, কেউবা গরু-ছাগল বিক্রি করে এখানে ব্যয় করছেন। এই ভালোবাসা দেশের জন্য, বিএনপির জন্য। কারণ বিএনপি বর্তমানে যে দাবি নিয়ে আন্দোলন করছে, তা গণমানুষের দাবিতে রূপ নিয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, শনিবার রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে সবচেয়ে বড় গণজমায়েত হবে।’  

এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা থেকে রংপুরে পৌঁছেছেন রংপুর বিভাগীয় গণসমাবেশের দলনেতা বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সংসদ সদস্য হারুন অর রশীদ। সমাবেশস্থল পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তারা নাকি ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় খেলা দেখাবেন। আমরা তো খেলা দেখছি। আগামী ২৯ অক্টোবর রংপুরে আমরাও খেলা দেখাব। স্মরণকালের সবচেয়ে বড় গণসমাবেশ হবে এদিন। এর মধ্য দিয়ে প্রমাণ হবে যে, সারাদেশের মানুষ বিএনপির সঙ্গে আছে। রংপুরের সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার, খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ নানা দাবিতে বিএনপি দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরে গণসমাবেশ করছে। ৮ অক্টোবর চট্টগ্রাম, ১৫ অক্টোবর ময়মনসিংহ ও ২২ অক্টোবর খুলনায় সমাবেশ করেছে দলটি। এর ধারাবাহিকতায় তারা ২৯ অক্টোবর রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে চতুর্থ গণসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে।

 

আপন দেশ ডটকম/কেএস

 

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

জনপ্রিয়