Apan Desh | আপন দেশ

বন্ধুকে খুন করল বন্ধু, ফ্রি ফায়ার খেলায় দ্বন্দ্ব

বাগেরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৯:৫০, ৩১ জানুয়ারি ২০২৩

আপডেট: ২০:১১, ৩১ জানুয়ারি ২০২৩

বন্ধুকে খুন করল বন্ধু, ফ্রি ফায়ার খেলায় দ্বন্দ্ব

ফাইল ছবি

বাগেরহাটে মোল্লাহাটে কিশোর ভ্যানচালক সাব্বির শেখ (১৫) হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) বাগেরহাট। হত্যার সঙ্গে জড়িত একমাত্র আসামি সাব্বিরের বন্ধু কিশোর গ্যারেজ মেকানিক মো. ফেরদৌসকে (১৭) গ্রেফতার করেছে পিবিআই। বাগেরহাট পিবিআই নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও থানার মেঘনা ব্রিজ এলাকা থেকে মো. ফেরদৌসকে গ্রেফতার করে।

ভার্চুয়াল গেম-ফ্রি ফায়ার খেলার দ্বন্দ্বে মো. ফেরদৌস তার বন্ধুকে হত্যা করেছে। মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) বিকালে পিবিআই বাগেরহাট কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানানো হয়।

গ্রেফতার মো. ফেরদৌস বাগেরহাট সদর থানার ডিংসাইপাড়া এলাকার মো. মনিরুল শেখের ছেলে। মোল্লাহাট উপজেলার ছোট কাচনা এলাকায় ভ্যান রিকশা ও সাইকেল মেরামতের গ্যারেজ রয়েছে তার।

হত্যার শিকার সাব্বির শেখ খুলনা জেলার তেরখাদা উপজেলার কুশলা গ্রামের শেখ বোরহানের ছেলে। সে তেরখাদা ও মোল্লাহাটের ছোট কাচনাসহ বিভিন্ন এলাকায় ভ্যান চালাতো।

পিবিআই বাগেরহাটের পুলিশ সুপার মো. আব্দুর রহমান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্যারেজ মেকানিক মো. ফেরদৌস ভ্যানচালক সাব্বির শেখকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছে। প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া শেষে মো. ফেরদৌসকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।

জিজ্ঞাসাবাদে মো. ফেরদৌস পিবিআইকে জানায়, হত্যার শিকার ভ্যানচালক সাব্বির শেখ  ও গ্রেফতার গ্যারেজ মেকানিক মো. ফেরদৌস ভালো বন্ধু ছিল। তারা দুইজনে এক সাথে ফ্রি ফায়ার গেম খেলতো। কোনো একদিন ফেরদৌসের সঙ্গে গেম খেলে হেরে যায় সাব্বির। তখন সাব্বির ফেরদৌসকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এই গালিগালাজের প্রতিশোধ হিসেবে সাব্বিরের ভ্যান বিক্রি করে দেয়ার কথা চিন্তা করে ফেরদৌস। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ৯ জানুয়ারি পৌনে ৩টার সময় বায়জিদ নামের একটি শিশুর মাধ্যমে ফেরদৌস সাব্বিরকে ডেকে আনে। পরে নিজের গ্যারেজের পেছনে থাকা কক্ষের একটি খাটের উপর বসে দুইজন ফ্রি ফায়ার গেম খেলা শুরু করেন। গেম খেলার এক পর্যায়ে মো. ফেরদৌস পেছন থেকে একটি গামছা গলায় পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে সাব্বিরকে হত্যা করে। পরে খাটের পাশে সাব্বিরের মরদেহ কম্বল দিয়ে ঢেকে রাখে। পরে সাব্বিরের ভ্যানটি কেটে ভাঙ্গারি হিসেবে বিক্রি করে দেয়। ভ্যানের চারটি ব্যাটারিও স্থানীয় একটি দোকানে বিক্রি করে দেয়। ওই রাতেই গ্যারেজের পার্শ্ববর্তী শেখ ওবায়দুর রহমানের গোডাউনের নিচে সাব্বিরের মরদেহ ফেলে নারায়ণগঞ্জ পালিয়ে যায় মো. ফেরদাউস।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রবিবার (৩০ জানুয়ারি) বিকালে বাগেরহাট পিবিআই নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও থানার মেঘনা ব্রিজ এলাকা থেকে মো. ফেরদৌসকে গ্রেফতার করে।

এর আগে নিখোঁজের দুই দিন পরে ১১ জানুয়ারি তেরখাদা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন সাব্বির শেখের বাবা শেখ বোরহান। ১৭ জানুয়ারি ছোট কাচনার শেখ ওবায়দুর রহমানের গোডাউনের নিচ থেকে শেখ সাব্বিরের পচা-গলা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সাব্বিরের বাবা পড়নের কাপড় দেখে মরদেহ শনাক্ত করেন। পরে ২৩ জানুয়ারি তেরখাদা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন সাব্বিরের বাবা। পরে মামলাটি পিবিআই তদন্ত শুরু করে। এক সপ্তাহের মধ্যে হত্যার রহস্য উদঘাটন ও হত্যাকারীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পিবিআই।

আপন দেশ ডটকম/ এবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

জনপ্রিয়