Apan Desh | আপন দেশ

পার্বত্য চট্টগ্রামে জিয়া বিভেদ, শেখ হাসিনা সম্প্রীতি গড়েছেন : তথ্যমন্ত্রী 

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২২:৪৬, ১১ মার্চ ২০২৩

পার্বত্য চট্টগ্রামে জিয়া বিভেদ, শেখ হাসিনা সম্প্রীতি গড়েছেন : তথ্যমন্ত্রী 

ছবি : আপন দেশ

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘জিয়াউর রহমান পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালি-পাহাড়িদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করেছেন, আর শেখ হাসিনা সেই বিভেদ দূর করে পার্বত্য শান্তি চুক্তি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সম্প্রীতির বন্ধন সৃষ্টি করেছেন।’

এখন বাঙালি-পাহাড়িদের মধ্যে আস্থার সংকট নেই, সম্প্রীতি সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিচ্ছিন্ন যে সব ঘটনা, তা শুধু চাঁদাবাজির কারণে। 

শনিবার (১১ মার্চ) দুপুরে খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ মাঠে জেলা কৃষক লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন। 

ড. হাছান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পাহাড়ে-সমতলে আমূল পরিবর্তন হয়েছে। বিশ্বে আয়তনের দিক দিয়ে ৯২তম ও মাথাপিছু সর্বনিম্ন কৃষিজমির দেশ হয়েও আমরা ঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস মোকাবিলা করে পৃথিবীতে ধান উৎপাদনে তৃতীয়, মিঠাপানির মাছ উৎপাদনে দ্বিতীয়-তৃতীয়তে ওঠানামা, সবজিতে চতুর্থ, আলুতে সপ্তম, আম উৎপাদনে দ্বিতীয়, ইলিশ উৎপাদনে প্রথম। এটি শুধুমাত্র শেখ হাসিনা এবং তার জাদুকরী নেতৃত্বেই সম্ভব হয়েছে।’

‘কিন্তু, বিএনপির পলাতক নেতা তারেক রহমানের দেশের এ পরিবর্তন সহ্য হচ্ছে না, খালেদা জিয়ার অন্তর জ্বলে যাচ্ছে আর মির্জা ফখরুল বকবক করছেন’, মন্তব্য করেন তিনি।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের ‘সরকারকে দড়ি ধরে টান দেয়ার সময় এসেছে’ বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘১০ ডিসেম্বর সরকারকে দড়ি ধরে টান দিতে গিয়ে তারা নিজেরাই চিৎপটাং হয়ে গেছে। এরপর টান দিলে দড়ি ছিঁড়ে তাদের হামাগুড়ি দিতে হবে। সরকারের ভিত অনেক গভীর প্রোথিত এবং আওয়ামী লীগ গণমানুষের দল, কৃষক-শ্রমিকের দল, রাজপথ থেকে গড়ে ওঠা দল। আমরা রাজপথ কাউকে ইজারা দেইনি, রাজপথে আছি, রাজপথে থাকবো।’

কৃষক লীগের সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর কৃষিপ্রীতি তুলে ধরে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৯ সালে আমরা সরকার গঠনের পর প্রথম মন্ত্রিপরিষদ সভার প্রথম সিদ্ধান্ত ছিল কৃষি ও কৃষকের জন্য ভর্তুকি প্রদান। আর জননেত্রী শেখ হাসিনা কৃষক ও কৃষিকে কত ভালোবাসেন, গণভবনে কৃষি উৎপাদনের কথা আপনারা টিভিতে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখেছেন। গণভবনে মৌমাছির চাষ করে একশ কেজি মধু হয়েছে। অন্যান্য শাকসবজি উৎপাদন হচ্ছে, ধানও হচ্ছে। সেখানে অন্য প্রধানমন্ত্রীরাও ছিলেন, খালেদা জিয়াও ছিলেন, তারা কেউ এটি করতে পারেননি।’

‘বঙ্গবন্ধুকন্যা সেই প্রধানমন্ত্রী যিনি রাত বারোটার আগে ঘুমুতে যেতে পারেন না, ফজরের আজানের আগে উঠে তাহাজ্জুতের নামাজ পড়েন, আজানের পর ফজরের নামাজ পড়েন, কোরআন তেলাওয়াত করেন, দেশ পরিচালনা করেন, দল পরিচালনা করেন আবার কিষাণী হিসেবেও কাজ করেন’, বলেন হাছান মাহমুদ। 

কৃষক লীগ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষক লীগ বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া সংগঠন যা সমগ্র দেশে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত সুসংগঠিত। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দেশে ফিরে কৃষক লীগের মাধ্যমে সারাদেশে বৃক্ষরোপণ অভিযান পরিচালনা করেছেন। সেই সময় থেকে প্রথমে বছরে এক মাস, পরে বছরে তিন মাসব্যাপী এ অভিযান চলে আসছে। আমরা যখন ক্ষমতায় ছিলাম না, তখনো কৃষক লীগ কৃষকের কল্যাণে কাজ করে গেছে।’

এর আগে সকালে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরী এবং খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে  সম্মেলন উদ্বোধন করেন। 

জেলা কৃষক লীগের আহবায়ক পিন্টু ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ বিশ্বনাথ সরকার বিটু প্রধান বক্তা এবং ভারত প্রত্যাগত শরনার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, বাসন্তি চাকমা, কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আকবর আলী চৌধুরী বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন। আরো বক্তব্য রাখেন কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা,  আইন সম্পাদক রাবেয়া হকসহ খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগ, কৃষক লীগ ও অঙ্গ সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ।

সম্মেলন শেষে পিন্টু আচার্য্যকে সভাপতি এবং খোকন চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক করে খাগড়াছড়ি জেলা কৃষক লীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়।

আপন দেশ/আরএ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

জনপ্রিয়