
ইঞ্জিনিয়ার সাইফুজ্জামান চুন্নু ও সিলগালা কক্ষ
ইঞ্জিনিয়ার সাইফুজ্জামান চুন্নু। তিনি গণপূর্তের বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী। ঠিকাদারের কাজ দেখে-বুঝে নেয়া যার দায়িত্ব তিনি নিজেই ঠিকাদার। এবার পকেটস্থ করেছেন রাষ্ট্রের ২৫ লাখ টাকা। কাজের কাজ কিছুই করা হয়নি। এ অভিযোগ পড়েছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে।
অভিযোগের খবরে তড়িঘড়ি করে কাজ উঠানোর আয়োজন করেন তিনি। কিন্তু বিধি বাম অভিযোগ আমলে নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির গণপূর্ত অধিদফতরের সংস্থাপন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী। সত্যতা যথাযথ। তাই সিলগালা করে দিয়েছে মেরামত কাজে।
অভিযোগে উল্লেখ, ইঞ্জিনিয়ার সাইফুজ্জামান চুন্নু গণপূর্ত বিভাগ-৪, মিরপুর-এ নির্বাহী প্রকৌশলীর দায়িত্বে থাকার সময় মিরপুরের পাইক পাড়ায় পিডব্লিউডি ট্রেনিং সেন্টার (পুরাতন) এর ২য় তলায় সিড়ির পূর্ব পাশের পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত ৭ ও ৮ নং কক্ষ দুটি পরিদর্শন বাংলোতে রূপান্তরের লক্ষ্যে আনুসঙ্গিক সংস্কার ও আধুনিকায়নের জন্য ২০২২-২৩ অর্থবছরের বরাদ্দকৃত অর্থ ইতোমধ্যে তুলে নিয়েছেন তিনি। এ অর্থের পরিমান ২৫ লাখ টাকা।
অভিযোগ পেয়ে সরেজমিনে তদন্তের জন্য যান গণপূর্ত অধিদফতরের যুগ্ন-সচিব মুহাম্মদ সোহেল হাসান। সঙ্গে ছিলেন ই/এম বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পবিত্র কুমার দাস। ঘটনাস্থল মিরপুর ডিভিশনে পূর্ত সার্কেলে আইবি বাংলো গিয়ে অভিযোগের সতত্যা মিলে। এ সময় উল্লেখিত ৭ ও ৮ নং কক্ষ দুটি সিলগালা করে দেন। সেই সাথে এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়।
মিরপুর গণপূর্ত বিভাগে কর্মরত থাকাকালীন ঢাকা গণপূর্ত বিভাগ-৪ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সাইফুজ্জামান চুন্নু ২০১৯-২০ অর্থবছরে যে কাজ সম্পাদন করা হয়েছে সেই একই কাজ ২০২২-২৩ অর্থবছরে সম্পাদন করার নামে ৮০ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। এছাড়াও সাইফুজ্জামান চুন্নুর বিরুদ্ধে একাধিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে।
জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে মিরপুরের পাইকপাড়ায় পিডব্লিউডি ট্রেনিং সেন্টার (পুরাতন) এর ২য় তলায় ৪টি কক্ষ, ৩য় তলায় পশ্চিম পাশের ৪টি কক্ষ, ২টি বাথরুম ও বারান্দায় টাইলস লাগানোর কাজ বাস্তবায়িত হলেও সেই একই কাজ ২০২২-২৩ অর্থ বছরে দেখিয়ে সরকারি অর্থ আত্মসাত করা হয়েছে। এছাড়াও ২০১৯-২০ অর্থবছরে ওই একই ভবনে সম্পাদিত ৪টি দরজার পাল্লা, চৌকাঠ, এলুমিনিয়াম ও ঘন্টাসের কাজ ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেখানো হয়। মাত্র ১০ টি কক্ষে কাজ করার জন্য ১ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছে যা বাস্তবতা বিবর্জিত। এই খাতে অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জার নামে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে গণপূর্ত অধিদফতরে।
এর আগে ময়মনসিংহ গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী থাকাকালীন সময়ের একটি মো. সাইফুজ্জামান চুন্নুর বিরুদ্ধে ময়মনসিংহে র্যাবের কমপ্লেক্স স্থাপনে দুর্নীতির অভিযোগ উঠে।
সাইফুজ্জামান চুন্নুর বিরুদ্ধেগণপূর্তমন্ত্রীর নাম ভাঙ্গিয়ে একছত্রভাবে অধিদফতরের নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি ও টেন্ডার বাণিজ্যের নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ রয়েছে।
পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সহসভাপতি আব্দুস সালাম মৃধার ছেলে ইঞ্জিনিয়ার সাইফুজ্জামান চুন্নু। চাকুরির নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে তিনি দীর্ঘদিন ধরেই সরকার বিরোধী তৎপরতায় জড়িত। ২০১৯ সালে সরকারি পটুয়াখালীর ৫নং কমলাপুর ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী ও সাবেক চেয়ারম্যান পিতার পক্ষে মাঠে নেমে নির্বাচন করেন এই ইঞ্জিনিয়ার।
এসব বিষয়ে জানতে প্রকৌশলী চুন্নুর সেল ফোনে যোগযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি এখন মিরপুরে নেই। একটু ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল। সিলগালা করা হয়েছিল পরে খুলে দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিষয়টি মিটমাট হয়ে গেছে। নিউজটি না লেখার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।