ফাইল ছবি
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার তেবাড়িয়া গ্রামের নিঃসন্তান বিধবাকে অপহরণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শতবর্ষী বৃদ্ধার নাম ডালিমন বেগম। ওই নারীর নামে থাকা সম্পত্তি লিখে নিতে পারে এমন শঙ্কা থেকে থানা-পুলিশে অবতি করেছেন বৃদ্দার স্বজনরা। অভিযোগের তথ্য ভূমি রেজিষ্টারকে অবহিত করেছেন পুলিশ।
অপহরণের তিনদিন আগে ডালিমনের ভাইয়ের ছেলে ও স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতার ভাইদের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী ডালিমনের বোনের ছেলে কহিনুরকে আটক ও মারধর করে দুই লক্ষ টাকা আদায় করে। জোর করে টাকা আদায়ের ঘটনাকে ধামাচাপা দেয়ার উদ্দেশ্যে ডালিমনকে বাড়ি থেকে উঠিয়ে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় মামলা না করতে চাপ ও ভয়ভীতি প্রয়োগ করে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, স্থানীয় বাসিন্দা মুস্তি বেপারীর স্ত্রী ডালিমন বিশ বছর আগে বিধবা হন। তিনি তার বোনের ছেলে (ভাগিনা) কহিনুরের সংসারে বসবাস করেন। নিঃসন্তান ডালিমন সংসারে থাকার কারণে ভাগিনা কহিনুরকে ভালবেসে তার নিজের নামে থাকা জমি থেকে বিশ শতাংশ লিখে দেন।
জমি লিখে নেয়ার পর থেকেই মামাত ভাইদের সাথে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয় কহিনুরের। সম্প্রতি কহিনুর খালার সম্মতি নিয়ে আট শতাংশ জমি একই এলাকার আব্দুর রহমানের কাছে বিক্রি করে। জমি বিক্রির পর গত ৩০ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ছানোয়ার হোসেন, নাইমুর রহমান, হাসমত, শামীম, আবুল হোসেনসহ আরও কয়েকজন পূর্ব পরিকল্পিতভাবে কহিনুরকে ফোনে ডেকে নেয়। ওই এলাকার ছানোয়ারের ডেকোরেটরের গোডাউনে আটকে রেখে মারধর করে দশ লক্ষ টাকা দাবি করে। তারা ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী বলে জানা যায়।
পরে কহিনুরের ভাই আ. ছামাদ খবর পেয়ে বাড়ি থেকে দুই লক্ষ টাকা দিয়ে কহিনুরকে ছাড়িয়ে আনে। ঘটনা জানাজানি হয়ে গেলে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার উদ্দেশ্যে গত ২ জানুয়ারি বিকালে কহিনুরের বাড়ীতে যায় গেদু মিয়া, আবুল হোসেন, দারোগ আলী, ইউপি সদস্য তোতা মিয়া, সালাম মিয়াসহ আরও কয়েকজন। কহিনুর বাড়ীতে ছিল না। তার অনুপস্থিতিতে কহিনুরের বাড়ি থেকে বৃদ্ধা ডালিমনকে জোরপূর্বক উঠিয়ে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। অপহরণের সময় কহিনুরের স্ত্রীকে মারধর করে উল্লিখিতরা।
এ ব্যাপারে সাটুরিয়া থানায় জড়িত ব্যক্তিদের নাম উল্লেখ করে সতের জানুয়ারি একটি চাঁদাবাজি এবং সাত ফেব্রুয়ারি একটি মামলা নথিভুক্ত করে পুলিশ। বাদী পক্ষের অভিযোগ, ঘটনা দীর্ঘদিন গড়ালেও পুলিশ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
অপর কহিনুরের পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, গত ৭ ফেব্রুয়ারি ডালিমনের বাকি সম্পত্তি লিখে নেয়ার জন্য মুহুরী খলিলের মাধ্যমে দলিল সম্পাদন করে রেজিস্ট্রি অফিসে যায় অপহরণকারীরা। পরে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়। সাটুরিয়া থানা পুলিশ রেজিস্ট্রি অফিসে ডালিমনের নামে কোন দলিল সম্পাদন না করতে অবহিত করেন অফিস কতৃপক্ষকে। ওই দিন রাতে অপহরণ মামলাটি নথিভুক্ত করে পুলিশ।
অফিসার ইনচার্জ সুকুমার বিশ্বাস জানান, ঘটনা ডালিমনের ভাগিনা আর ভাতিজার মধ্যেকার। মূলত সম্পত্তির অংশীদারিত্ব নিয়েই বিবাদ। তারা পরস্পর আত্মীয়। অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত চলছে। চাঁদাবাজির বিষয়ে কিছু বলেননি।
আপন দেশ ডটকম/ এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।