Apan Desh | আপন দেশ

দাম চড়া তাই গরুর টুকরা, মুরগীর বন্ট বিক্রি হচ্ছে!

আপন দেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২:৫৮, ৫ মার্চ ২০২৩

দাম চড়া তাই গরুর টুকরা, মুরগীর বন্ট বিক্রি হচ্ছে!

ছবি: আপন দেশ

জিনিষপত্রের দাম এখন বিক্রেতার মর্জির ওপর চলছে। শপিংমলগুলোতে পণ্যের গায়ে দাম নির্ধারণ থাকলেও কাঁচামালের ক্ষেত্রে ভিন্ন রয়েছে। নিত্য পণ্যের মতোই হাহাকার চলছে গোস্তের বাজারেও। তবে বারো মুশকিল তের আহসানের মতোই নানা কৌশল অবলম্বন করে চলছে জীবন। আজ জানব গোস্তের বাজারের চিত্র।

ছাগলের গোস্তের আলাপ বাদই থাক। গরুর গোস্তের দাম দিনকেদিন যাচ্ছে নাগালের বাইরে। যে ক্রেতা আগে ২/৩ কেজি কিনতেন, এখন এক কেজির হিসেব মেলাতে পারছেন না। ছাগল-গরুর পর ভরসা ছিল  মুরগীতে। মুরগীর মধ্যে নিন্মমানের ব্রয়লার মুরগীর কেজিও ১৪০ টাকা থেকে বেড়ে এখন ২৬০ টাকা। তাহলে গোস্ত খাবার পথ কি? এমন অবস্থায় নয়া উদ্যোগ নিয়েছেন রাজধানীর খিলগাও বাজারের গোস্ত বিক্রেতারা। আমাদের চ্ট্গ্রাম প্রতিনিধির পাঠানো তথ্যও একই।     

বিক্রেতা খলিল জানালেন, ছাগলের কেজি ১১শ, গরুর গোস্ত ৭৫০/৮শ’টাকা কেজি। সবার কেনার সামর্থ নাই। তাই গোস্তের কেজিকে ২/৪ বন্টন করে বিক্রি করছি। মানে ২৫০ গ্রাম গরুর গোস্তও মিলছে তার দোকানে। খলিলুর রহমানের উদ্যোগের মতোই মুরগী বিক্রেতা আব্দুল আওয়াল মুরগীর গোস্ত বিক্রি করছেন খন্ড খন্ড করে।

এদিকে চট্টগ্রামের চকবাজারের কাঁচাবাজারে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি পিস বা টুকরা হিসেবে মুরগির মাংস বিক্রি শুরু হয়। বিক্রেতা ইসমাইল হোসেন স্থানীয় প্রতিবেদককে জানালেন, ক্রেতার সুবিধা ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি সামাল দিতে চট্টগ্রামে আগেই মুরগি পিস বা টুকরা করে বিক্রি শুরু হয়। এখন গরুর মাংসও কম পরিমাণে বিক্রি শুরু হয়েছে। ন্যূনতম ২৫০ গ্রাম মাংস বিক্রির জন্য বিক্রেতারা দোকানে নোটিশ টানিয়েছেন। বিক্রেতারা বলছেন, এই উদ্যোগের কারণে স্বল্প আয়ের মানুষের পাতেও মুরগি ও গরুর মাংস উঠবে।

নিজ উদ্যোগে ব্যবসায়ীরা মুরগি টুকরা করে বিক্রি করতে রাজি হন। এর দেখাদেখি শনিবার থেকে একই বাজারে ‘ন্যূনতম ২৫০ গ্রাম গরুর মাংস বিক্রয় করা হয় নোটিশ ঝুলিয়েছেন দোকানিরা। পাশের দোকানে আগে থেকেই ঝোলানো আছে ‘এখানে মুরগির মাংস পিস হিসেবে বিক্রয় করা হয়। তাঁরাও চাইছেন এই পদ্ধতি চালু হোক।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফার্ম (ব্রয়লার) সোনালি- দুই ধরনের মুরগিকে পিস হিসেবে বিক্রির হচ্ছে। উদ্যোগের কারণ জানতে চাইলে তারা বলছেন, এলাকার বেশির ভাগ মানুষই  শ্রমজীবী, চাকরিজীবী ও নিন্ম আয়ের। এই শ্রেণির মানুষের কাছে মুরগিই ছিল কম দামে খাওয়ার বড় সম্বল। সম্প্রতি মুরগির দাম অনেক বেড়ে যাওয়ায় আমি নিজে দেখেছি ক্রেতার ধস নেমেছে। অনেকেই ইচ্ছা থাকলেও আস্ত মুরগি কিনতে পারছিলেন না। তাঁদের জন্যই আমার মাথায় এই আইডিয়া আসে।

খিলগাঁও বাজারের বিক্রেতা আওয়াল বলেন, পিস হিসেবে খুব বেশি বিক্রি হচ্ছে তা কিন্তু নয়। আর এতে আমারও কোনো বাড়তি লাভ নেই। কিন্তু একটি মানসিক স্বস্তি আছে; জন্যই এই উদ্যোগ আমার মালিকের।

ইসমাইল হোসেন বলেন, চট্টগ্রামের বাজারে বর্তমানে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা কেজি। অন্যদিকে সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩১০ থেকে ৩২০ টাকায়। সেই হিসাবে ব্রয়লার মুরগির চার ভাগের এক ভাগ প্রতি টুকরার দাম পড়বে ৫৫ থেকে ৫৭ টাকা। আর সোনালি মুরগির মাংসের প্রতি টুকরার দাম পড়বে ৭৭ থেকে ৮০ টাকা।

মুরগির দাম বাড়ার কারণ হিসেবে বিক্রেতাদের বক্তব্য হলো পোলট্রি ফিডের দাম বৃদ্ধি, খামারিরা পুঁজি হারিয়ে পথে বসে যাওয়া অন্যতম। এখন যে মুরগির দাম আছে সেটি স্ট্যান্ডার্ড; এর কম হলে আবারও সংকট তৈরি হবে।

আপন দেশ/এবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়