Apan Desh | আপন দেশ

রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১০:৪০, ২০ মার্চ ২০২৩

আপডেট: ১১:২০, ২০ মার্চ ২০২৩

রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে

ফাইল ছবি

রমজান মাস সামনে রেখে রেমিট্যান্স প্রবাহে গতি ফিরেছে। চলতি মাসের ১৭ দিনে ১১৬ কোটি ৪২ লাখ (এক দশমিক ১৬ বিলিয়ন) ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। দেশীয় মুদ্রায় যা ১২ হাজার ৪৫৬ কোটি টাকা। প্রতিদিন গড়ে এসেছে ছয় কোটি ৮৫ লাখ ডলার বা ৭৩৩ কোটি টাকা।

রোবার (১৯ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, সব মিলিয়ে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের আট মাস ১৭ দিনে (২০২২ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৩ সালের ১৭ মার্চ) এক হাজার ৫১৮ কোটি (১৫ দশমিক ১৮ বিলিয়ন) ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এই অঙ্ক গত ২০২১-২২ অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় সাড়ে চার শতাংশ বেশি।

রোজা ও ঈদকে সামনে রেখে আগামী দিনগুলোতে রেমিট্যান্স বাড়বে বলে আশা করছেন ব্যাংকার ও অর্থনীতিবিদরা।

টানা তিন মাস বাড়ার পর ফেব্রুয়ারিতে হোঁচট খায় অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচক। ওই মাসে ১৫৬ কোটি ১২ লাখ ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। তার আগের তিন মাস- নভেম্বর, ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে এসেছিল যথাক্রমে ১৫৯ কোটি ৫২ লাখ, ১৬৯ কোটি ৯৭ লাখ এবং ১৯৫ কোটি ৮৯ লাখ ডলার। প্রতিদিন এসেছিল পাঁচ কোটি ২৫ লাখ ডলার। ফেব্রুয়ারি মাস ২৮ দিন হওয়ায় ওই মাসে রেমিট্যান্সপ্রবাহ খানিকটা কমেছিল বলে জানিয়েছেন ব্যাংকাররা।

তবে মার্চ মাসে এই সূচকে আবারো গতি ফিরেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক রেমিট্যান্সপ্রবাহের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, এই মাসের প্রথম ১৭ দিনে (১ থেকে ১৭ মার্চ) ১১৬ কোটি ৪২ লাখ ডলারের যে রেমিট্যান্স এসেছে, তার মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে প্রায় ১৫ কোটি ডলার। বিশেষায়িত কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে দুই কোটি ৫২ লাখ ২০ হাজার ডলার। ৪২টি বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ৯৮ কোটি ৬১ লাখ ১০ হাজার ডলার। আর নয়টি বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৩৭ লাখ ৪০ হাজার ডলার। এই গতিতে রেমিট্যান্স এলে মাস শেষে দুই বিলিয়ন বা ২০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন ব্যাংকাররা।

বর্তমান বিশ্ব প্রেক্ষাপটে অর্থনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর সূচক বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভের অন্যতম প্রধান উৎস প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স। গত ফেব্রুয়ারিতে ১৫৬ কোটি ১২ লাখ ৬০ হাজার (এক দশমিক ৫৬ বিলিয়ন) ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা; যা ছিল চার মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম। তবে গত বছরের ফেব্রুয়ারির চেয়ে চার দশমিক ৪৭ শতাংশ বেশি ছিল। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ১৪৯ কোটি ৪৪ লাখ ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।

গত ২০২১-২২ অর্থবছরে দুই হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ (২১ দশমিক শূন্য তিন বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা; যা ছিল আগের বছরের (২০২০-২১) চেয়ে ১৫ দশমিক ১২ শতাংশ কম। তবে বেশ উল্লম্ফনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছর; প্রথম মাস জুলাইয়ে ২১০ কোটি (দুই দশমিক এক বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স পাঠান প্রবাসীরা। দ্বিতীয় মাস আগস্টে আসে ২০৩ কোটি ৬৯ লাখ (দুই দশমিক শূন্য তিন বিলিয়ন) ডলার। পরের মাস সেপ্টেম্বরে হোঁচট খায়, এক ধাক্কায় নেমে আসে ১৫৩ কোটি ৯৬ লাখ ডলারে। অক্টোবরে তা আরও কমে ১৫২ কোটি ৫৫ লাখ ডলারে নেমে আসে।

পরের তিন মাস টানা বেড়েছে, নভেম্বরে আসে ১৫৯ কোটি ৫২ লাখ ডলার। গত বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে আসে ১৭০ কোটি ডলার। ২০২৩ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে আসে আরও বেশি, ১৯৬ কোটি ডলার। কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে তা বেশ কমে ১৫৬ কোটি ১২ লাখ ডলারে নেমে এসেছে।

২০২০-২১ অর্থবছরে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ২৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে, যা ছিল আগের বছরের চেয়ে ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি।

গত ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স কমার কারণ জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, ‘প্রতি বছরই ফেব্রুয়ারি মাসে অন্যান্য মাসের চেয়ে রেমিট্যান্স কিছুটা কম আসে। এর কারণ, ফেব্রুয়ারি মাস ২৮ দিনে শেষ হয়।’ 

রেমিট্যান্স বাড়ার কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রতি বছরই রোজা ও দুই ঈদের আগে রেমিট্যান্স বাড়ে; এবারও তাই হচ্ছে। দুই-তিন দিন পর রোজা শুরু হবে। রোজাকে সামনে রেখে প্রবাসীরা পরিবার-পরিজনের বাড়তি প্রয়োজন মেটাতে বেশি রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। এই ইতিবাচক ধারা রোজার ঈদ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে আশা করছি।’

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে চলতি অর্থবছরের শেষ মাস জুনেও রেমিট্যান্স বাড়বে বলে আশার কথা জানান তিনি।

আপন দেশ/আরএ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়