Apan Desh | আপন দেশ

ঋণ নির্ভরতা-চাপ বাড়বে সরকারের ওপর

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১১:৫৩, ২ জুন ২০২৩

আপডেট: ২৩:৫১, ২ জুন ২০২৩

ঋণ নির্ভরতা-চাপ বাড়বে সরকারের ওপর

ফাইল ছবি

সঞ্চয়পত্র বিক্রি তলানীতে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর হাতে ঋণ দেয়ার মতো তহবিল কম। অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সরকারের ঋণ চাহিদার বেশিরভাগই মেটাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে আগামী অর্থবছর ব্যাংক থেকে রেকর্ড ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।

চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে যা ছিল ১ লাখ ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ১ লাখ ১৫ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা করা হয়েছে। এদিকে নতুন অর্থ বছরে ৯৪ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা সুদ পরিশোধ করতে হবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সরকারের খরচ বাড়লেও আশানুরূপ রাজস্ব আদায় হচ্ছে না। আবার সঞ্চয়পত্রে বিক্রির চেয়ে পরিশোধ হচ্ছে বেশি। বিদেশি উৎস থেকে আগের তুলনায় ঋণ কমেছে। এসব কারণে এখন ব্যাংক ব্যবস্থা থেকেই সরকারকে বেশি ঋণ নিতে হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের ১০ মে পর্যন্ত ব্যাংক থেকে সরকার নিট ৭৮ হাজার ৫৬০ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক দিয়েছে ৬৭ হাজার ৯০৬ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণ সরবরাহ করার বিষয়টি সরাসরি টাকা ছাপানোর মতো। এ রকম প্রবণতা মূল্যস্ফীতিকে উস্কে দেয়। এমনিতেই এখন ৯ শতাংশের বেশি মূল্যস্ফীতি। এর মধ্যে ব্যাংক ঋণ আরও বাড়লে মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ অনেক বাড়বে।

অন্যদিকে, আগামী অর্থবছরের জন্য সঞ্চয়পত্র থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে ৩৫ হাজার কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। তবে ঋণ না বেড়ে উল্টো গত এপ্রিল পর্যন্ত কমেছে ৩ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা। এরপরও সংশোধিত বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে।

সরকারের ঋণ বৃদ্ধির সঙ্গে বাড়ছে সুদ পরিশোধের চাপ। অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি উৎসে ঋণস্থিতি রয়েছে প্রায় ১৫ লাখ কোটি টাকা। এ ঋণের পরিমাণ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এতে করে বাড়ছে সুদ পরিশোধের চাপ। আগামী অর্থবছর অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি উৎসে সুদ পরিশোধে সরকারের ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ৯৪ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎসে সুদ পরিশোধে ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ৮২ হাজার কোটি টাকা। আর বিদেশি উৎসে ১২ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে সুদ পরিশোধ বাবদ ৮০ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছিল। তবে সংশোধিত বাজেটে তা ৯০ হাজার ১৩ কোটি টাকা করা হয়েছে।

গত এপ্রিল পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ উৎসে সরকারের ঋণ ছিল ৭ লাখ ১৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। আর বিদেশি উৎসে গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণের পরিমাণ ছিল ৭ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে সঞ্চয়পত্রে সরকারের ঋণস্থিতি দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৬০ হাজার ৪৩০ কোটি টাকা। ব্যাংক ব্যবস্থায় রয়েছে ৩ লাখ ৫৬ হাজার ৩৬৯ কোটি টাকা।

আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, এডিবির মতো আন্তর্জাতিক সংস্থার ঋণের সুদহার অনেক কম থাকে। আবার এসব সংস্থার ঋণে বাস্তবায়িত প্রকল্পে তদারকি বেশি হয়। যে কারণে দুর্নীতির সুযোগ থাকে কম। অর্থনীতিবিদরা সব সময় এ ধরনের সংস্থা থেকে ঋণ নেওয়ায় উৎসাহিত করেন। রিজার্ভের ধারাবাহিক পতন, ডলারের দর অনেক বেড়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন সংকটের মধ্যে কয়েক বছর পর এ ধরনের সংস্থা থেকে ঋণ নিচ্ছে সরকার। এরই মধ্যে আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের প্রথম কিস্তি পাওয়া গেছে।

আপন দেশ/এবি
 

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়