ছবি : আপন দেশ
রাফসান জামান; রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ থেকে এসএসসি-এইচএসসি পাস করেছেন। দুটিতেই পেয়েছেন গোল্ডেন জিপিএ-৫। ছোটবেলা থেকে শিক্ষাজীবনের প্রতিটি স্তরে মেধার স্বাক্ষর রাখা রাফসান মেডিক্যালে ভর্তি পরীক্ষায় ৯৪ দশমিক ২৫ নম্বর পেয়ে প্রথম হয়েছেন।
রাফসানের বাবা সিটি গ্রুপের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (শিপিং) হিসেবে কর্মরত। দুই ভাই-বোনের মধ্যে রাফসান দ্বিতীয়। বড় বোন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) আর্কিটেক্ট বিভাগ থেকে স্নাতক পাস করেছেন। তিনি স্নাতকে দ্বিতীয় হয়েছেন।
ছোটবেলা থেকেই প্রচণ্ড মেধাবী রাফসান। পড়াশোনা ছাড়া তার কোনো ভাবনা ছিল না। মেডিক্যালে ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হয়ে নিজেও কিছুটা অবাক হয়েছেন। তিনি বলেন, প্রথম আমি নিজেও অবাক হয়েছি। কারণ, এ বছর প্রশ্ন কঠিন হয়েছে। তবে, পরীক্ষা ভালো হয়েছিল। তারপরও এতটা প্রত্যাশা করিনি। মনে হয়েছিল, বাংলাদেশে আমার চেয়ে অনেক ভালো স্টুডেন্ট আছে।
তিনি জানান, ১০০টি প্রশ্ন। প্রথম ৩০ মিনিটেই তিনি ৭০টি ও পরের ২৫ মিনিটে বাকি প্রশ্নের উত্তর দিয়ে ফেলেন। সব উত্তর দিতে তার সময় লাগে মাত্র ৫৫ মিনিট।
রাফসান বলেন, আমার কোনো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নেই। স্মার্টফোনের প্রতি আমার কোনো আসক্তি ছিল না। আমি তো ক্যাডেট কলেজে ছিলাম। সেখানে কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করা যায় না। যে কারণে আমি এসব থেকে বেশ দূরে ছিলাম। ক্যাডেট কলেজ থেকে আসার পর যে সময়টা পেয়েছি, আড়াই মাস বা তিন মাস, ওই সময়ে পড়াশোনার ব্যস্ততার কারণে ডিভাইস খুব দরকার ছাড়া ব্যবহার করতাম না। যেটুকু ব্যবহার করেছি পড়ালেখার উদ্দেশ্যে করেছি।
তিনি বলেন, মেডিক্যালে পড়ার সুযোগ পেয়েছি, এটা অনেক বড় বিষয়। ডাক্তারির মধ্যে অনেক ভালো বিষয় আছে। তবে, আমি নিউরোসায়েন্স বা নিউরোলজি নিয়ে পড়তে চাই।
রাফসানের বাবা এ কে এম সামশুজ্জামান বলেন, ‘রেজাল্ট আমি এখনো দেখিনি। সবার কাছ থেকে শুনেছি। আমি অনেক খুশি। আমরা এতটা আশা করিনি। কারণ, পরীক্ষা দিয়ে এসে খুব একটা খুশি ছিল না সে। একটু হতাশ ছিল। তারপরও দেখলাম সে প্রথম হয়েছে।’
রাফসানের মা বলেন, ছেলের সাফল্যে খুব আনন্দ হচ্ছে। আল্লাহ আমাকে পুরস্কৃত করেছেন। আমার ছেলে যাতে ভালো ডাক্তার হয়ে গরিব ও অসহায় মানুষের সেবা করতে পারে। তিনি বলেন, রাফসান ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় মনোযোগী ছিল। খুব বেশি সময় না পরলেও যতোটুকু পড়ত ততটুকু মনোযোগ দিয়েই পড়ত। ক্লাসে বরাবরই ভালো রেজাল্ট ছিল তার।
রোববার (১২ মার্চ) দুপুরে সরকারি-বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। এতে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন রাফসান জামান। তিনি চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজে পরীক্ষা দিয়েছেন।
এবারের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন এক লাখ ৩৫ হাজার ৮০০ জন। পাস করেছেন ৪৯ হাজার ১৯৫ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার ৩৫ দশমিক ৩৪ শতাংশ। পরীক্ষায় সর্বমোট পাসের মধ্যে ছেলে ২০ হাজার ৮১৩ জন ও পাসের হার ৪২ দশমিক ৩১ শতাংশ। মেয়ে পাস করেছেন ২৮ হাজার ৩৮১ জন ও পাসের হার ৫৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ।
আপন দেশ/আরএ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।