
এবাবে আর কখনোই ক্যামোরর পেছনে দেখা যাবে না এই গুণী নির্মাতাকে
ঢাকা: স্ত্রী মারা যাওয়ার একদিন পরই অনন্তলোকে পাড়ি দিয়েছেন ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় ও সফল নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহান। বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় উত্তরার ক্রিসেন্ট হাসপাতালে নেওয়া হলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
নির্মাতা অপূর্ব রানা গণমাধ্যমকে জানান, বুধবার দুপুরে তিনি ঘুমানোর পর সন্ধ্যা নাগাদ সাড়া মিলছিল না। এরপর পরিবারের সদস্যরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে নিয়ে যান। সন্ধ্যা ৭টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ক্রিসেন্ট হাসপাতালের চিকিৎসক জরুরি মেডিকেল কর্মকর্তা তানভীর ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, ৬টা ৪০ মিনিটে সোহানকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। সোহানকে মৃত অবস্থায় পেয়েছেন তারা। মৃত্যুর কারণ এখনো জানা যায়নি।
এর আগে মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার স্ত্রীর মৃত্যু হয়।
নব্বই দশকে গুণী এই নির্মতার সিনেমা দেখে হলে হলে ভিড় জমান দেশের কোটি দর্শক। তার হাত ধরে সিনেমার তারকা হয়েছেন অনেকে। তাকে তারকা গড়ার কারিগর বলা হয়।
সোহানুর রহমান সোহান ১৯৭৭ সালে খ্যাতিমান পরিচালক শিবলী সাদিকের সহকারী হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেন। এরপর তিনি শহীদুল হক খানের ‘কলমিলতা’ (১৯৮১), এজে মিন্টুর ‘অশান্তি’ (১৯৮৬) ও শিবলি সাদিকের ‘ভেজা চোখ’ (১৯৮৮) সিনেমায় সহকারী হিসেবে কাজ করেছেন।
তিনি ১৯৮৮ সালে ‘বিশ্বাস অবিশ্বাস’ সিনেমা দিয়ে পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। তবে তিনি সাফল্য পান ১৯৯৩ সালে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ দিয়ে। বলিউডের সিনেমার রিমেক এই সিনেমার মাধ্যমে সিনেমায় আত্মপ্রকাশ এবং তারকা খ্যাতি পান প্রয়াত নায়ক সালমান শাহ, নায়িকা মৌসুমী ও কণ্ঠশিল্পী আগুন। এরপর থেকে তুমুল ব্যস্ত হয়ে পড়েন এ নির্মাতা।
সোহানুর রহমান সোহান নির্মিত অন্যান্য সিনেমার মধ্যে রয়েছে- ‘আমার ঘর আমার বেহেশত’, ‘আমার দেশ আমার প্রেম’, ‘স্বজন’, ‘অনন্ত ভালোবাসা’, ‘স্বামী ছিনতাই’, ‘আমার জান আমার প্রাণ’, ‘পরাণ যায় জ্বলিয়া রে’, ‘কোটি টাকার প্রেম’, ‘সে আমার মন কেড়েছে’, ‘দ্য স্পিড’ ও ‘লোভে পাপ পাপে মৃত্যু’ ইত্যাদি।
তার ‘অনন্ত ভালোবাসা’ সিনেমার মাধ্যমেই আত্মপ্রকাশ করেছিলেন বর্তমানে ঢাকাই সিনেমার সুপার স্টার নায়ক শাকিব খান।
তথ্যমন্ত্রীর শোক
এদিকে, গুণী এই চলচ্চিত্র নির্মাতার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। এক শোক বার্তায় তিনি বলেন, সোহানুর রহমান সোহানের চলে যাওয়া দেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনে এক বেদনাবিধূর অধ্যায়। করোনার ক্রান্তিকাল পেরিয়ে সিনেমা জগৎ আবার ঘুরে দাঁড়ানোর এই সময় তার মৃত্যু এক অপূরণীয় ক্ষতি। এর সাথে মঙ্গলবার রাতে সোহানুর রহমান সোহানের স্ত্রীর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে ইন্তেকাল আরেক বিয়োগান্তক ঘটনা।
সালমান শাহ, মৌসুমী, শাকিব খানকে রুপালি পর্দায় নিয়ে আসা চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সাবেক সভাপতি সোহান তার নির্মিত ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’, ‘স্বজন’, ‘আমার ঘর আমার বেহেশত’, ‘অনন্ত ভালবাসা’ এমন সব চলচ্চিত্রের মাঝে বেঁচে থাকবেন, বলেন হাছান মাহমুদ।
আপন দেশ/এমএমজেড
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।