Apan Desh | আপন দেশ

বৈশাবি উৎসব শুরু বিজুর ফুল ভাসিয়ে 

আপন দেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:২৬, ১২ এপ্রিল ২০২৩

আপডেট: ০১:৪২, ২৯ এপ্রিল ২০২৩

বৈশাবি উৎসব শুরু বিজুর ফুল ভাসিয়ে 

ছবি: সংগৃহীত

পার্বত্য চট্টগ্রামের অর্থাৎ রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে পাহাড়িদের প্রধানতম সামাজিক ও ধর্মীয় উৎসব বৈসাবি উৎসবকে ঘিরে গানে গানে মেতে উঠেছে ওই এলাকা। 

বুধবার (১২ এপ্রিল) নদীতে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী বৈসাবি উৎসব। প্রাণের এই উৎসব ঘিরে পাহাড় এখন রঙিন। ত্রিপুরাদের বৈসু, মারমাদের সাংগ্রাই ও চাকমাদের বিজু উৎসবের নামের প্রথম অক্ষর দিয়ে নামকরণ করা হয়েছে বৈসাবি। আর আজ বিজু দিয়ে পাহাড়ে শুরু হয়েছে বর্ষবরণের এই উৎসব। সকালে গঙ্গাদেবীর উদ্যেশ্যে নদীতে ফুল দিয়ে প্রার্থনায় পুরাতন বছরের গ্লানি ভুলে নতুন বছরের শুভ কামনা করা হয়।

ভোরের আলো ফোটার আগেই তরুণ-তরুণীসহ সব বয়সের মানুষ ঐহিত্যবাহী পোশাকে সেজে নদীর পাড়ে আসতে শুরু করে। ছোটরা এসেছে বাবা-মার হাত ধরে। বছরের গুরুত্বপূর্ণ ও আনন্দদায়ক দিন বলে কথা।

চাকমারা উৎসবের প্রথম দিনে বন পাহাড় থেকে সংগৃহিত ফুল দিয়ে ঘর সাজায়। সবার মঙ্গল কামনায় কলাপাতায় করে ভক্তি শ্রদ্ধাভরে গঙ্গাদেবীর উদ্দ্যেশে ফুল ভাসিয়ে পুরাতন বছরের গ্লানী ভুলে নতুন বছরের শুভ কামনা করে। প্রত্যাশা করা হয় পাহাড়ে হানাহানি ভুলে সকল সম্প্রদায়ের মধ্যে আসবে শান্তি ও সম্প্রীতি।

১৩ এপ্রিল চাকমাদের বিজুর দ্বিতীয় দিন। এই দিন তারা ঐতিহ্যবাহী খাবার তৈরি করে আপ্যায়ন করবেন। ৩০ পদের সবজি দিয়ে তৈরি করা হবে বিশেষ পাজন। এই দিন থেকে তিনদিনব্যাপী ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বৈসু উৎসব শুরু হবে। এই দিন তারও দেবী গঙ্গার উদ্দেশ্যে ফুল দিয়ে প্রার্থনা করবেন।

মারমাদের সাংগ্রাই উৎসব শুরু হয় বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে। উৎসবের অন্যতম অনুষঙ্গ জলকেলী। সব দুঃখ ও পাপ ধুয়ে দিতে মারমারা একে অপরের দিকে পানি ছুঁড়ে মেতে উঠেন।

এই উৎসবকে কেন্দ্র করে গোটা পার্বত্য চট্টগ্রাম পরিণত হয় সব সম্প্রদায়ের মানুষের মিলন মেলায়। এদিকে এই উৎসব দেখতে খাগড়াছড়িতে বেড়েছে পর্যটকের সংখ্যা। বলা যায় উৎসবে রঙিন পার্বত্য চট্টগ্রাম।

রাঙ্গামাটিতে ফুল ভাসিয়ে সুদর্শন চাকমা বলেন, আমরা এই দিনে পুরাতন বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর জন্য প্রস্তুত হই। হ্রদের পানিতে গঙ্গা দেবীর উদ্দেশে ফুল নিবেদনের মাধ্যমে আমরা আমাদের নতুন বছরের জন্য শুভ কামনা আর প্রার্থনা জানাই। পাশাপাশি পানি যেহেতু আমাদের মানব জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তাই জলের দেবীকে গঙ্গার উদ্দেশে আমরা ফুল নিবেদন করি।

রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, আজ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে সর্ববৃহৎ সামাজিক উৎসব বৈসাবির তিন দিনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলো। চাকমা, মারমা, ত্রিপুরাসহ পাহাড়ের বসবাসরত সমগ্র ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীদের আমি রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বৈসাবির শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। আমি আশা করি, এই উৎসব আমাদের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধনকে আরও দৃঢ় করবে।

আপন দেশ/আরএ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ