Apan Desh | আপন দেশ

সাংবাদিক হাবিবকে অশ্রুসিক্ত নয়নে স্মরণ করল সহপাঠী, সহকর্মীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০২:১৮, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সাংবাদিক হাবিবকে অশ্রুসিক্ত নয়নে স্মরণ করল সহপাঠী, সহকর্মীরা

সংগৃহীত ছবি

দৈনিক যুগান্তরের সদ্য প্রয়াত সিনিয়র রিপোর্টার হাবিবুর রহমান খানকে অশ্রুসিক্ত নয়নে স্মরণ করেছেন তার সহপাঠী, সহকর্মী ও বন্ধুরা। তারা হাবিবের ব্যক্তি, শিক্ষা ও কর্মজীবনের নানা স্মৃতি তুলে ধরেন। এ সময় তারা বলেন, সহজ, সৎ আর মিশুক হাবিব ছিল সত্য কথা শক্ত করে বলা মানুষ। শতভাগ পেশাদারিত্বকে লালন করতেন তিনি।

মৃত্যুর ১৬ দিন পর শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী লেকচার হলে শোকসভা ও দোয়া মাহফিল আয়োজন করে তার সহপাঠীরা।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই সাংবাদিক হাবিবুর রহমান খানের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এর পর পবিত্র কুরআন শরীফ থেকে তেলাওয়াত করা হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাইফুল হক।

সভায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক ইলিয়াস খান বলেন, হাবিবের এই অকালে চলে যাওয়া মেনে নেয়ার মতো নয়। তার মতো সংবাদকর্মীদের এ সমাজে বড্ড প্রয়োজন। তবে হাবিবের শোক সভায় এসে আমাকে বক্তব্য দিতে হবে এটা আমরা কখনোই কামনা করিনি। মুখে যা ছিল, অন্তরেও তাই ছিল। এ কারণে হয়ত হাবিবকে কারো ভালো নাও লাগতে পারে। তবে যারা তার সঙ্গে মিশেছেন তারা জানেন এটাই হাবিবের বড় শক্তি ছিল।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি মোরসালিন নোমানী বলেন, হাবিব ছিলেন একজন পেশাদার এবং সৎ সাংবাদিক। এ প্রজন্মের অন্যতম সেরা একজন সাংবাদিক ছিলেন তিনি। তার স্পষ্টবাদিতা ছিল প্রশংসনীয়। তার স্মৃতি ধরে রাখতে তার নামে আমরা কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করব।

হাবিবুর রহমানের বন্ধু পলাশ মাহবুব বলেন, হাবিবের মন আকাশের মতো উদার ছিল। ভনিতা ছাড়াই কথা বলতেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বড় প্রতিষ্ঠানে পড়াশুনা শেষ করে সুনামের সঙ্গে সাংবাদিকতা করছিলেন। তার অকাল মৃত্যুতে আমাদের দেশের অনেক বড় ক্ষতি হয়েছে।

‘হাবিব কেবল আমার স্বামী ছিল না। সে ছিল আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু। আমি আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধুকে অকালে হারালাম’- সর্বশেষ এভাবে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদেন হাবিবের সহধর্মিণী ফারজানা মাহমুদ সনি। এ সময় পুরো হলরুম শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়ে। এ সময় তার সঙ্গে ছিল সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া একমাত্র কন্যা ফারিহা তাজমীন জারা।

হাবিবের সহধর্মিণী বলেন, আমার পথচলা এখন অনেকটাই কঠিন হয়ে গেল। হাবিব সবার সঙ্গে মিশতে পারত অনায়াসে। এটা তার সবচেয়ে বড় গুণ ছিল। সবাই তার জন্য দোয়া করবেন।

ফারজানা মাহমুদ সনি, সব সময় ভাবতাম মানুষ কেন নানা কথা বলে থাকে। এখন বুঝি আপনজন হারানো মানুষের আসলে কথা বলার ভাষা থাকে না। ২০০৬ সাল থেকে হাবিব আমার পাশে ছিল। যেটা আমার জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় সময় হয়ে আছে। আজকে আমি শুধু আমার স্বামীকেই হারায়নি, বরং আমার কাছের বন্ধুকে হারিয়েছি।

সভায় আরও বক্তব্য দেন- রাকিব হাসনাত সুমন, মঈন উদ্দিন খান, আহমেদ পিপুল, সাঈদ খান, সাইফুল ইসলাম, তরিকুল ইসলাম খান রবিন, মীর মোহাম্মদ জসিম, সাব্বির আহমেদ প্রমুখ।

শোক সভায় হাবিবের জন্য শোকগাঁথা লেখা হয়। তাকে নিয়ে একটি স্মৃতিগ্রন্থ তৈরির কথা জানানো হয়। হাবিবুর রহমান খান জাতীয় প্রেস ক্লাব, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সদস্য ছিলেন। গত ২২ আগস্ট বিকালে হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ৪১ বছর বয়সী হাবিবুর রহমান খান।

আপন দেশ/এবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়