Apan Desh | আপন দেশ

সংসদে সর্বজনীন পেনশন বিল পাস

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০:০৭, ২৪ জানুয়ারি ২০২৩

আপডেট: ২১:৫৫, ২৪ জানুয়ারি ২০২৩

সংসদে সর্বজনীন পেনশন বিল পাস

ফাইল ছবি

দেশের সব প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিককে পেনশন–ব্যবস্থার আওতায় আনতে জাতীয় সংসদে বিল পাস করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা বিল-২০২৩’ জাতীয় সংসদে পাস হয়।

বর্তমানে শুধু সরকারি কর্মচারীরা অবসরের পর পেনশন- সুবিধা পান। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল, সবার জন্য পেনশন চালু করা হবে। এই বিল পাস হওয়ার ফলে সবার জন্য পেনশন স্কিম চালু করার আইনি ভিত্তি তৈরি হলো। অবশ্য কোনো ব্যক্তিকে মাসিক পেনশন- সুবিধা পেতে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর ধারাবাহিকভাবে কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দিতে হবে। 

এ উদ্যোগের প্রশংসা করার পাশাপাশি বিরোধী দলের একাধিক সংসদ সদস্য বলেছেন, এই পেনশন- ব্যবস্থা ব্যাংকের ডিপিএস স্কিমের মতো। জনগণ চাঁদা দেয়ার পর সরকার কী পরিমাণ অর্থ দেবে, সরকারের অংশগ্রহণ কী হবে, তা আইনে পরিষ্কার নয়। এই আইন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলেও দাবি করেন কেউ কেউ।

অবশ্য বিরোধীদের এসব বক্তব্য আমলে নেননি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বিলের ওপর আনা জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি শেষে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়।

বিলে যা আছে
বিলে বলা হয়েছে, জাতীয় পরিচয়পত্রকে ভিত্তি ধরে সর্বজনীন পেনশনের আওতায় ১৮ বছর বা তার বেশি বয়স থেকে ৫০ বছর বয়সী সব বাংলাদেশি নাগরিক অংশ নিতে পারবেন। বিশেষ বিবেচনায় পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিদেরও পেনশন স্কিমের আওতায় রাখার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে মাসিক পেনশন- সুবিধা পেতে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর চাঁদাদাতাকে ধারাবাহিকভাবে কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দিতে হবে। ১০ বছর চাঁদা দেয়া শেষে তিনি যে বয়সে উপনীত হবেন, সে বয়স থেকে আজীবন পেনশন পাবেন। বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীরাও এতে অংশ নিতে পারবেন।

এ চাঁদার হার কত হবে, তা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। আইন হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এটি নির্ধারণ করবে। মাসিক বা ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে চাঁদা দেয়া যাবে এবং অগ্রিম ও কিস্তিতেও চাঁদা দেয়ার সুযোগ থাকবে।

আইনে বলা হয়েছে, চাঁদাদাতা ধারাবাহিকভাবে কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দিলে মাসিক পেনশন পাবেন। চাঁদাদাতার বয়স ৬০ বছর পূর্তিতে পেনশন তহবিলে পুঞ্জীভূত মুনাফাসহ জমার বিপরীতে পেনশন দেয়া হবে। একজন পেনশনার আজীবন পেনশন- সুবিধা পাবেন।

সরকার গেজেট জারি করে বাধ্যতামূলক না করা পর্যন্ত এই পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণ হবে ঐচ্ছিক।
বিলে বলা হয়েছে, পেনশনে থাকাকালে কোনো ব্যক্তি ৭৫ বছর পূর্ণ হয়ার আগে মারা গেলে তাঁর নমিনি অবশিষ্ট সময়ের জন্য (মূল পেনশনারের বয়স ৭৫ বছর পর্যন্ত) মাসিক পেনশন প্রাপ্য হবেন। চাঁদাদাতা কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দেয়ার আগে মারা গেলে জমাকৃত অর্থ মুনাফাসহ তার নমিনিকে ফেরত দেয়া হবে।

পেনশন তহবিলে জমা দেয়া অর্থ কোনো পর্যায়ে এককালীন তোলার প্রয়োজন পড়লে চাঁদাদাতা আবেদন করলে জমা দেয়া অর্থের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ঋণ হিসেবে তুলতে পারবেন। যা ফিসহ পরিশোধ করতে হবে। পেনশন থেকে পাওয়া অর্থ আয়করমুক্ত থাকবে। পেনশনের জন্য নির্ধারিত চাঁদা বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য করে কর রেয়াতের জন্য বিবেচিত হবে।

বিলে বলা হয়েছে, নিম্ন আয়সীমার নিচের নাগরিকদের অথবা অসচ্ছল চাঁদাদাতার ক্ষেত্রে পেনশন তহবিলে মাসিক চাঁদার একটি অংশ সরকার অনুদান হিসেবে দিতে পারবে। বিলে সর্বজনীন পেনশন–পদ্ধতিতে সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত অথবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অংশ নেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কর্মী ও প্রতিষ্ঠানের চাঁদার অংশ কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করবে। তবে সরকার সিদ্ধান্ত না দেওয়া পর্যন্ত সরকারি ও আধা সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তিরা এই পেনশন- ব্যবস্থার আওতাবহির্ভূত থাকবেন।

আপন দেশ ডটকম/ এবি

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

জনপ্রিয়