Apan Desh | আপন দেশ

নির্বাচনে অংশ নিলে দেখা যাবে কার জামানত হারায়: ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২১:১৪, ১৪ মার্চ ২০২৩

নির্বাচনে অংশ নিলে দেখা যাবে কার জামানত হারায়: ওবায়দুল কাদের

ফাইল ছবি

বিএনপিকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, আগামীতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেই বোঝা যাবে কাদের জামানত থাকবে আর কাদের থাকবে না।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ‘রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও উসকানিমূলক বক্তব্যের প্রতিবাদ’ জানিয়ে মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন কাদের।

তিনি অভিযোগ করেন, চিরাচরিত ভঙ্গিতে মিথ্যাচার করছেন বিএনপি নেতারা। তারা কখনোই নিজেদের জনগণের আয়নায় দেখতে প্রস্তুত নয়। সর্বদা জনমত যাচাইয়ের গণতান্ত্রিক পন্থা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে ভয় পায়। নির্বাচন আতঙ্ক থেকে তারা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনষ্টের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠিয়েছেন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, অসাংবিধানিক ও অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান এ দেশের গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠিয়েছিল। জিয়াউর রহমান জাতিকে কারফিউ মার্কা গণতন্ত্র উপহার দিয়েছিল এবং সামরিক আইন বহাল রেখে ১৯৭৭ সালে হ্যাঁ-না ভোট, ১৯৭৮ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন এবং ১৯৭৯ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করেছিল। তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে জিয়াপত্নী খালেদা জিয়া। যার ধারাবাহিকতায় রাষ্ট্র ক্ষমতা কুক্ষিগত করার অভিপ্রায়ে খালেদা জিয়া ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রহসনের নির্বাচন করেছিল।

‘বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিকে বিরোধীদলীয় নেতার আসনে বসিয়ে মহান জাতীয় সংসদকে কলঙ্কিত করেছিল। আবার গণআন্দোলনের মুখে বিএনপি ‘জেনারেল ক্লোজেস অ্যাক্ট-১৮৯’ আইনের অধীনে ২০০৭ সালে তাদের একতরফা নির্বাচন বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছিল। বলেন ওবায়দুল কাদের।

খালেদা জিয়া ও মির্জা ফখরুলের বিভিন্ন সময় দেয়া বক্তব্য তুলে ধরে কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ ৩০টি আসনের বেশি পাবে না বলে বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুল। তাদের নেত্রী খালেদা জিয়াও বলেছিল, আওয়ামী লীগ ১০০ বছরেও ক্ষমতায় আসতে পারবে না। অথচ ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে বিএনপিই আসন পেয়েছিল মাত্র ২৯টি। জামানত বাজেয়াপ্তের বিষয়টি এ রকম রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া বিএনপির ক্ষেত্রেই মানায়। আগামীতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেই বোঝা যাবে কাদের জামানত থাকবে আর কাদের থাকবে না।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ঐতিহাসিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ ঐতিহ্যগতভাবে অসাম্প্রদায়িক নীতি ধারণ ও লালন করে আসছে। অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থা মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম অঙ্গীকার। অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র বিনির্মাণে আওয়ামী লীগ সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ। আওয়ামী লীগ বিরোধী চিহ্নিত রাজনৈতিক শক্তিই এ দেশে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির পরিচর্যা করে আসছে। যার গোড়াপত্তন হয়েছিল সামরিক স্বৈরাচার জিয়াউর রহমানের হাত ধরে। বিএনপিই এ দেশের সাম্প্রদায়িক অপশক্তির প্রধান পৃষ্ঠপোষক। তার ধারাবাহিকতায় আমরা দেখেছি, বিএনপি ও তার দোসররা সর্বদা সুপরিকল্পিতভাবে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে আসছে। বাংলাদেশকে তারা সংখ্যালঘু ও ভিন্নমতাবলম্বীদের জন্য বাস অযোগ্য করে তোলার অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে। ২০০১ সালের নির্বাচনের পরে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর অকথ্য ও বর্বরোচিত নির্যাতন চালিয়েছিল।

বিএনপির শাসনামলে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে কাদের বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার ওপরে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে এই সন্ত্রাসের বিবরণী সুস্পষ্টভাবে উঠে আসে। তাতে দেখা যায়, ২৭ জন এমপি ও মন্ত্রীসহ বিএনপির প্রথম সারির নেতারা এই সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত ছিল। হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপরে নির্বিচারে এই সন্ত্রাস চালানো হয়। যেখানে মায়ের সামনে মেয়েকে ধর্ষণ করে বিএনপির সন্ত্রাসীরা। বিএনপি-জামায়াত শাসনামলে বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায় এক ভয়াল বিভীষিকাময় সময় অতিবাহিত করে। আওয়ামী লীগ বিরোধী মতাদর্শ থেকে এবং বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে ভূ-লুণ্ঠিত করার জন্যই বিএনপি নীতিগতভাবে সাম্প্রদায়িকতার পথকে বেছে নিয়েছে। অতীত ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, নির্বাচনের আগে বিএনপি সর্বদা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার মাধ্যমে বিভাজনের রাজনীতি শুরু করে। রাজনীতিতে বিভেদের এই খেলা বিএনপিকে আর খেলতে দেয়া হবে না। সব অসাম্প্রদায়িক শক্তিকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করবে আওয়ামী লীগ।

আপন দেশ/এবি

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়