Apan Desh | আপন দেশ

বামের বুদ্ধি, ডানের কৌশল বিএনপির বাড়তি পুজিঁ

আফজাল বারী

প্রকাশিত: ১৩:১৬, ১৮ ডিসেম্বর ২০২২

আপডেট: ১৮:৩৪, ২৮ ডিসেম্বর ২০২২

বামের বুদ্ধি, ডানের কৌশল বিএনপির বাড়তি পুজিঁ

ফাইল ছবি

সরকার পত আন্দোলনে বাম-ডানপন্থি দলকে কাছে টানতে চায় মধ্যপন্থি দল বিএনপি। বাম রাজনীতিবিদদের চৌকশ বুদ্ধি আর ডানপন্থি সংগঠনগুলোর আন্দোলনের কলা-কৌশলকে বাড়তি পুজিঁ হিসাবে ধরতে চায় দলটি। একমঞ্চের বদলে যুগপৎ আন্দোলনে নানামুখি সুফল মিলবে বলেও মনে করছেন বিএনপির বোদ্ধারা। 

এদিকে দলের চেয়ারপারসন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, মহাসচিবসহ কিছু নেতা কারাবন্দি থাকলেও তাতে আন্দোলনে প্রভাব পড়বে না বলে মনে করেন বিএনপি অন্য নেতারা। একই ভাষ্য জামায়াতে ইসলামিরসহ শরিকদেরও।

বিএনপির নীতি নির্ধারনী ফোরামের সদস্যরা বলছেন, লক্ষ্য অভিন্ন হলে রাজপথে আন্দোলনে ভূমিকাও এক হবে। মতাদর্শ ভিন্নতা থাকতেই পারে। অতীতে এমন কর্ম কৌশল ভালো ফল দিয়েছে বলে মনে করে বিএনপি।

বিএনপিতে বাম রাজনীতিবিদদের সংখ্যা একেবারে কম নয়। তারপরও দলের বাইরে অনেক বোদ্ধা রয়েছে যারা দেশ স্বাধীন থেকে শুরু করে নানা আন্দোলনে নেপথ্যে ভূমিকা রেখেছেন। বুদ্ধি-পরামর্শ দিয়েছে। তাদেরকেও এবারের আন্দোলনে সঙ্গে রাখতে চায় বিএনপি।

অন্যদিকে আন্দোলনে কৌশলে সফল ডানপন্থি সংগঠনের শক্তিকেও হাতছাড়া করতে নারাজ। দলটির শীর্ষ নেতাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত হলো- উগ্রপন্থি ছাড়া সবপন্থিদের প্লাটফর্ম গড়বে বিএনপি।  

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে আন্দোলনের মাধ্য ক্ষমতাচ্যুত করার ইতোমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছে। তাতে জোটের শরিকদলগুলো ছাড়াও বামপন্থি দল মিলে অন্ত:ত ৩২টি রাজনৈতিক দল রয়েছে। আরও যোগ হবে বেশ কয়েকটি দল। 

বিএনপি দেশের নগর-মহানগর মিলে ১০টি স্থানে সমাবেশ করেছে। গত ১০ ডিসেম্বর ১০ দফা ঘোষণা করেছে। আর আগামী ২৪ ডিসেম্বর সারা দেশে গণমিছিলের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় ধাপের আন্দোলন শুরু হবে। অবশ্য ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের কারণে রাজধানীতে গণমিছিল পিছিয়েছে। ৩০ ডিসেম্বর হবে রাজধানীর কর্মসূচিটি।

এদিকে বামপন্থি রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপির এই কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। তারা বলছে, সরকার পতনের যেকোন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পূর্ণ সমর্থন থাকবে বামদলগুলো। তাদেরও রয়েছে ছোট ছোট মোর্চা বা মঞ্চ।

গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম শরিক দল নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না আপন দেশ ডটকম’কে বলেন, ক্ষমতাসীন সরকার শাসনব্যবস্থা বদলের লক্ষ্যে ১৪ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছি। গণতন্ত্র মঞ্চ থেকে হবে এই আন্দোলন। লক্ষ্য এক ও অভিন্ন থাকায় এই আন্দোলন বিএনপির সঙ্গে মিলে যাবে বলে মনে করেন মান্না।

অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীও গণমিছিলের কর্সূচির ঘোষণা দিয়ে রখেছে। তবে তাদের দলের শীর্ষ নেতা ডা. শফিকুর রহমানের গ্রেফতারের পর তা স্থগিত রেখেছে।

জামায়াতের সহকারি সেক্রেটারি পর্যায়ের এক নেতা আপন দেশ ডটকম’কে বলেন, শীর্ষ নেতা বা প্রথম সারির সব নেতা কারাবন্দি থাকলেও সংগঠনের কর্মসূচি চলবে। মাঠ নেতাকর্মীরা ইতোমধ্যে দিকনির্দেশনা পেয়েছে।

লক্ষ্য এক তবে আন্দোলনের মঞ্চ ভিন্ন কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আন্দোলনের অদৃশ্য রং, চলার ঢং আছে। স্থান কাল ভেদে তা বদলে যায়। কৌশল পরিবর্তন হয়। যখন এক মঞ্চের প্রয়োজন তখন হবে। তবে যুগপৎ আন্দোলনের সফলতা দ্রুত বলে মনে করেন সাবেক এই মন্ত্রী।

তিনি বলেন, এই সময়ে সবারই উপলব্ধি হচ্ছে যে, সরকার পতন ছাড়া দেশের মানুষের শান্তি, স্বস্তি মিলবে না। মানুষ তাদের সব ধরনের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে, হচ্ছে। এ অবস্থায় ফ্যাসিবাদ, দানব সরকারকে হঠাতে আন্দোলনের বিকল্প নেই। এটা শুধু বিএনপিরই না সব দলের কথা। তাই যার যার অবস্থান থেকে আন্দোলন করছে। করবে। অভিন্ন লক্ষ্য থাকায় এ আন্দোলনের ছোট ছোট ঢেউ এক হয়ে বিশাল জোয়ারের সৃষ্টি করবে। তাতেই সরকারের গদি ডুবে যাব, মানুষ মুক্ত হবে।

দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বন্দি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান হাজার মাইল দুরে, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস সহ এবং স্থানীয় পর্যায়ের অনেক নেতা কারাবন্দি- এ অবস্থায় আন্দোলনের সফলতার আশা কতটুকু বাস্তবায়ন ঘটবে?

এমন প্রশ্নের জবাবে ড. আব্দুল মঈন খান আপন দেশ ডটকম’কে বলেন, বিএনপির প্রতিটি কর্মীই নেতার ভূমিকা নেবে। দিকনির্দেশনাও পাবেন। কিছু নেতা বন্দি রাখলেই সরকারের শেষ রক্ষা হবে না। বিএনপি শুধু একা নয়, সাধারণ মানুষও একাকার হয়ে গেছে।   

আপন দেশ ডটকম/ এবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

জনপ্রিয়