নন্দ দুলাল সাহা।
কতো বছর বয়স হলে মেলে বয়স্ক ভাতা? কী ভূমিকা রাখলে রাষ্ট্রীয় সম্মান পাওয়া যাবে? এমন প্রশ্ন আশরাফ আলীর। ঝিনাইদহের পার্ক পাড়াবাসিন্দা তিনি।
আপন দেশ`এর সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ওই গ্রামের নন্দ দুলাল সাহা। বয়স ৮৮ বছর। এখনো অবিচল দুলাল সাহা। কিন্তু মনোকষ্ট একটাই কেউ তাঁর খোঁজ রাখে না। বৃদ্ধ হলেও বয়স্ক ভাড়া জোটেনি তাঁর জন্য। ভাষা সৈনিক কিন্তু রাষ্ট্রীয় সম্মাননা মেলেনি। তাঁকে সম্মান দেয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন আশরাফ আলীর মতো সেবাই।
এলাকার একাধিকজন জানান, বয়স ৮৮ হলেও এখনো কোনো সাহায্য ছাড়াই একাই প্রিয় শহরে চলাচল করেন নন্দ দুলাল সাহা। ৮ বছর আগে স্ত্রী মারা যাওয়ায় সম্পূর্ণ একাই কষ্টের জীবন-যাপন করছেন ঝিনাইদহের পার্ক পাড়ায়। পাঁচ মেয়ে ও দুই ছেলের জনক ভাষা সৈনিক নন্দ দুলাল সাহা। সবাই যে যার মতো বিভিন্ন জেলায় থাকায় এখন একেবারেই নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েছেন। এক বাড়িতে একা বসবাস করছেন তিনি।
ভাষা সৈনিক নন্দ দুলাল সাহা জানান, ওই সময় ছবিঘর সিনেমা হলের পাশে তিনি গোপনে পোস্টার লিখছিলেন। দেখামাত্রই এক পুলিশ পা দিয়ে পোস্টারগুলো মাড়িয়ে দেয়। রাগে পুলিশকে ঘুষি মেরে পালিয়ে যান। এ জন্য দুলাল সাহাকে
দীর্ঘদিন পালিয়ে থাকতে হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময়ও তিনি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
তিনি বলেন, জাতীয়ভাবে তিনি কোনো স্বীকৃতি পাননি। তবে এ নিয়ে তার কোনো ক্ষোভ নেই। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার একটি হাতের পাতায় গুলিও লাগে। কিন্তু তিনি কখনো মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতিও পাননি। তবে সরকারের পক্ষ থেকে কেউই তার খোঁজ নেন না।
এলাকাবাসীরও একই কথা। তাদের ভাষ্য, আসলেই দুলাল সাহা অনেক কষ্টে আছেন। তাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে একাকীত্ব। এই সৈনিকের জন্য দরকার সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া জেরিন আশ্বাস দিলেন। তিনি জানান, ভাষা সৈনিক নন্দ দুলাল সাহার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সেমিনার, অনুষ্ঠানে তাকে অতিথি হিসাবে রাখার পরিকল্পনা চলছে। যেনো তার সময়টা ভালো কাটে। আর নতুন প্রজন্ম যেনো আমাদের ভাষার গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস জানতে পারে। তাঁর জন্য বয়স্ক ভাতারও ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান তিনি।
আপন দেশ/ এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।