Apan Desh | আপন দেশ

নীলফামারীতে আমনের বাম্পার ফলন

নীলফামারী প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১১:৩২, ২৯ নভেম্বর ২০২৩

নীলফামারীতে আমনের বাম্পার ফলন

ছবি: সংগৃহীত

আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে নীলফামারীতে। জেলার ছয় উপজেলায় ফসলের মাঠজুড়ে এখন শুধু ধান আর ধান। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার ভালো ফলন হয়েছে। ভালো দাম পেলে কৃষকরা এবার লাভবান হবেন বলে আশা করছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, জেলায় এবার এক লাখ ১৩ হাজার ১৭২ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। আর গত বছর চাষ হয়েছিল এক লাখ ১৩ হাজার ১০৫ হেক্টর জমিতে। এবার বেশি আবাদ হয়েছে ৬৭ হেক্টর জমিতে। জেলায় চলতি মৌসুমে ইতোমধ্যে ৫০ হাজার ৭৯৫ হেক্টর জমির আমন ধান কাটা হয়েছে।

সূত্র জানায়, বিভিন্ন জাতের আমনের মধ্যে উফশি ৯১ হাজার ২৬৬ হেক্টর, স্থানীয় জাত ৩৪৩ হেক্টর এবং হাইব্রিড ২১ হাজার ৫৬৩ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন, আগামী ১৫ থেকে ১৬ দিনের মধ্যে মাঠের ধান কাটা শেষ হবে। ধান থেকে চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তিন লাখ ৫৩ হাজার ৪২৮ মেট্রিক টন।

সদর উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের বাহালী পাড়া গ্রামের কৃষক আশরাফ আলী বলেন, ‘এবার বর্ষার প্রথম দিকে আশানুরূপ বৃষ্টি না হওয়ায় স্যালো মেশিন দিয়ে সাড়ে তিন বিঘা জমিতে ধান রোপণ করি। পরে আল্লাহর রহমতে অনেক বৃষ্টি নামায় আরও তিন বিঘা জমিতে ধান লাগাই। সব জমিতে উফসি জাতের রোপা আমন চাষ করেছি। ফলনও বেশ ভালোই হয়েছে। বাজারে দাম ভালো পেলে গত দুই বছরের ধকল কাটিয়ে ওঠা যাবে।’

আরও পড়ুন <> খেজুর রস সংগ্রহে ব্যস্ত বরিশালের গাছিরা

একই এলাকার চাষি আইয়ুব আলী বলেন, ‘বর্ষার শুরুতে আকাশের পানির অভাব ছিল। প্রথম দিকে স্যালো মেশিনের পানি দিয়ে হাইব্রিড জাতের ধান লাগিয়ে বিপাকে পড়েছিলাম। এরপরে ব্যাপক বৃষ্টি হয়। ধান আবাদে তেমন কোনো সমস্যা হয়নি। ধানের ফলনও বাম্পার হয়েছে। আশা করি, বিঘায় ১৬ থেকে ১৭ মণ ধান হবে। শুনছি, বাজারে নাকি দামও ভালো। এবার খরচ বাদে লাভও হবে।’

পঞ্চপুকুর ইউনিয়নের দীঘলটারি গ্রামের কালাম মিয়া বলেন, ‘প্রতি বছর বর্ষায় আকাশের পানিতে ১০ থেকে ১২ বিঘা জমিতে ধান লাগাই। এবার বর্ষার শুরুতে প্রচণ্ড খরার কারণে শ্যালো মেশিন চালিয়ে ধানের চারা রোপণ করেছিলাম। দু-একটি সেচও দিয়েছি। পরে পর্যাপ্ত বৃষ্টি নামে। ওই বৃষ্টির পানি দিয়ে ধান লাগানো শেষ করি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের বাম্পার ফলনও হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে সব ধান কাটা ও মাড়াই করে ঘরে তুলতে পারবো। বাজার দর ভালো থাকলে লাভবান হতে পারবো।’

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আতিক আহমেদ জানান, মাঠ পর্যায়ে উপসহকারী কর্মকর্তারা উঠান বৈঠক করে ধানের রোগবালাই দমনসহ সঠিক সময়ে কাটার পরামর্শ দিচ্ছেন। এবার সদরে ২৮ হাজার ২৪৯ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলন হয়েছে। এতে কৃষক অর্থনৈতিকভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. এসএম আবু বকর সাইফুল ইসলাম জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরেও গত দু-তিন বছরের তুলনায় এবার ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। গত আমন মৌসুমের তুলনায় এবার বেশি আবাদ হয়েছে ৬৭ হেক্টর জমিতে। চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত ৫০ হাজার ৭৯৫ হেক্টর জমির আমন ধান কাটা হয়েছে। আগামী ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ ধান ঘরে তুলতে পারবেন কৃষক।

আপন দেশ/আরএ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়