
ফাইল ছবি
হাওরাঞ্চলের একমাত্র ফসল বোরো। বীজতলা স্থাপনের কাজ শেষে কৃষকরা এখন জমিতে লাঙ্গল চাষের ব্যস্ত। পানি সরে যাওয়ার অপেক্ষা করছেন তারা। যেখানে পানি সরে যাচ্ছে সেখানেই পরিবারের ছোট বড় সবাইকে নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন। এটা যেমন হাওরবাসীর জন্য সুখবর, তেমনি সবকিছুতে বাড়তি দামের দুঃসংবাদের মধ্যেই চলছে জীবন।
দেখা গেছে, কৃষি নির্ভর জেলা নেত্রকোনা। এরমধ্যে হাওরাঞ্চল হচ্ছে ধান উদ্বৃত্ত। কিন্তু প্রতি বছর পানি সরতে দেরি করায় ধানের চারা রোপনে বিলম্ব হয়। অপরদিকে ধান পাকতে পাকতে আগাম বন্যায় প্রায় বছর ধান তলিয়ে যায়। এরপরও কৃষকরা নিজেদের সর্বস্ব দিয়েই ফসলটি করে দেশের খাদ্য ঘাটতি মেটায়। প্রতিবারের ন্যায় এবারও কৃষকরা আবাদে মাঠে নেমেছেন। তবে হাওরের ভেতরের কিছু এলাকার পানি না নামায় শুধুমাত্র উঁচু জমিগুলোতেই শুরু হয়েছে পুরোদমে আবাদ।
খারিয়াজুরীর চাকুয় ইউনিয়নের কৃষক ইসমাইল হোসেন। তিনি জানান, নিচু জমিতে মাছের কারণে প্রভাবশালীরা পানি আটকে রাখায় দেরিতে নামে। এই কারণে চাষ দেরি হওয়ায় পরে জোয়ারের পানি ঠেলা দেয়।
এদিকে মোহনগঞ্জের হারিস আলিম জানান, তাদের এলাকার পানি দ্রুত নেমে যাওয়ায় জমিগুলোতে সেচ দিতে হচ্ছে মেশিনে। ফলে খরচের খাতা বড় হচ্ছে। এগুলো কৃষকের ক্রয় ক্ষমতায় রাখতে তারা সরকারের প্রতি দাবি জানান।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ নুরুজ্জামান জানান, এবছর জেলায় ১ লাখ ৮৪ হাজার, ৪৭০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ৬০ ভাগ ধানের চারা রোপন হয়ে পড়েছে। এবার ঠাণ্ডায় বীজতলা নষ্ট না হওয়ায় সময় মতো সম্পন্ন হয়েছে।
ফলে রোপন আবাদের সময়ও ঠিক রয়েছে। এদিকে হাওর রক্ষা বাঁধের নির্মাণ মেরামতেও এবার মনিটিরং কমিটি কাজ করছে। ফলে আশা করা যাচ্ছে কৃষক ভাইরা সর্ম্পূণ ধানই ঘরে তুলতে পারবেন।
তিনি আরও জানান, কৃষক ভাইয়েরা ধানের জাত ২৮ এর পরিবর্তে ব্রি ধান ৮৮ চাষ করে তবে আবাদ বাড়বে। এর জীবনকালও কম। ২৮ জাত পাকতে ১৪৫ দিন সময় লাগলেও ব্রি ধান ৮৮ ১৪০ দিনেই কর্তন সম্ভব হয়। ফলে তিন চারটা দিনও যদি এগিয়ে যায় হাওরে তবে এটাই লাভ। কেননা পানিটা হুট করে চলে আসে।
আপন দেশ ডটকম/ সবুজ