Apan Desh | আপন দেশ

ম্যাকাও পাখির ছানা ফুটল বাংলাদেশে

গাজীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১১:৪২, ২২ মে ২০২৩

ম্যাকাও পাখির ছানা ফুটল বাংলাদেশে

ছবি: সংগৃহীত

দেশে প্রথমবারের মতো ফুটল ম্যাকাও পাখির ছানা। গাজীপুরের শ্রীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের পাখিশালায় সপ্তাহ খানেক আগে ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানোর কথা জেনেছে পার্ক কর্তৃপক্ষ।

দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন জঙ্গলের উন্মুক্ত পরিবেশে বেড়ে উঠা ম্যাকাও সাফারি পার্কে বাচ্চা ফোটায় ভিন্ন আনন্দ বিরাজ করছে সবার মাঝে।

পার্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বহুদিন চেষ্টা করে উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করায় এ সফলতা পাওয়া গেল। তাদের দাবি সবার প্রচেষ্টায় এ সফলতা। আরও বেশ কিছু পাখি ডিম দিতে পারে বাচ্চাও ফোটতে পারে। তাদের দিকে আলাদা নজরদারি করা হচ্ছে।

মেটিং করা পাখিগুলোকে দর্শনার্থীদের বিরক্ত করা থেকে নিরাপদ অবস্থানে রাখা হয়েছে। আর এতেই প্রথমবার সফলতা আসলো। আরও উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে নানা পদক্ষেপ দেয়া হচ্ছে পার্কের পাখিশালায়। তবে সদ্য ফোটা বাচ্চার লিঙ্গ নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি।

পাখি বিশেষজ্ঞ শিবলী সাদিক বলেন, আমাদের দেশে এটাই প্রথম কোনো ম্যাকাও পাখি যুগল বাচ্চা ফুটালো। ব্রাজিলের আমাজান ফরেস্টে উন্মুক্ত পরিবেশে বেড়ে উঠা পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর পাখি ম্যাকাওয়ের বাচ্চা দেয়ার ঘটনার বিলর দৃষ্টান্ত হলো সাফারি পার্ক।

তিনি বলেন, উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে পেরেছে পার্ক কর্তৃপক্ষ আর তাতেই এ সফলতা আসলো। যখনই কোনো পাখি যুগলের মেটিং করা চোখে পরবে তখনই সুবিধামত এদের আলাদা স্থানে নীরবে বসবাসের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। বেশি বিরক্তের শিকার হলে এদের কাছ থেকে বাচ্চা পাওয়া প্রায় অসম্ভব। পার্কে এ ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হলে উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি।

জানা যায়, দৃষ্টিনন্দন পাখিগুলো দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন জঙ্গলে বসবাস করে। সেখানেই উপযুক্ত পরিবেশে নিয়মিত বাচ্চার জন্ম দেয়। এদের আদি নিবাসও আমাজন জঙ্গল। এদিকে ভেনিজুয়েলা, ব্রাজিল, বলিভিয়া, প্যারাগুয়ে ও পেরুর বনাঞ্চলে পাখিগুলোকে অবাদে দেখা যায়। গ্রিন ম্যাকাও ও রেড ম্যাকাও চোখে পড়ে এ সব বনের গাছে গাছে। খুব নিরিবিলি পরিবেশ পেলে এরা বাসায় ডিম দেয়। পরে ডিমে নিয়মিত তা দিয়ে বাচ্চা ফুটায়।

পার্কের ওয়াইল্ড লাইফ সুপারভাইজার আনিসুর রহমান জানান, ম্যাকাও বেশ মূল্যবান পাখি। পৃথিবী জুড়েই এদের কদর আকাশ ছোঁয়া। দেখতেও বেশ নান্দনিক আর্কষণীয়। তিনি বলেন, আবদ্ধ (ক্যাপটিভে) পরিবেশে ৫০ বছর বাঁচে ম্যাকাও আর প্রকৃতিক পরিবেশে বাঁচে ৩০ বছর পর্যন্ত। ফলমূল ও বিভিন্ন ফলের বীজ জাতীয় খাবার এদের প্রিয়। পাখির ওজন এক থেকে দেড় কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। ম্যাকাও সাধারণত এক সঙ্গে ৩টি ডিম দেয়। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ১ থেকে ২টি বাচ্চার জন্ম হয়। পালা করে বাবা ও মা পাখি ডিমে তা দেয়। ২৮ দিনের মতো তা দিয়ে বাচ্চা ফোটায় পাখি যুগল।

ঘটনা নিশ্চয় আনন্দের উল্লেখ করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনিরুল এইচ খান বলেন, ভালো পরিবেশ পেলে ম্যাকাও বাচ্চা ফুটায়। তবে দেশে কোথাও এর আগে বাচ্চার জন্ম হয়েছে কি না জানা নেই। পার্কে ম্যাকাও পাখির বাচ্চা ফোটার ঘটনা নিশ্চয় আনন্দের।

পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (এসিএফ) রফিকুল ইসলাম জানান, এটাই পার্কে ম্যাকাও পাখির বাচ্চা ফোটার প্রথম ঘটনা। আগেও ডিম পেরেছে তবে বাচ্চা ফোটেনি। তিনি বলেন, এটি গ্রিন ম্যাকাও পাখির বাচ্চা। উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারায় এ সফলতা আসলো। এ সাফল্য সবার পরিশ্রমে। পার্কে দুই ধরনের ম্যাকাও পাখি রয়েছে। একটি গ্রিন ম্যাকাও অন্যটি রেড ম্যাকাও। আমরা বেশ আনন্দিত। আশা করছি রেড ম্যাকাও পাখিও বাচ্চা ফোটাবে।

আপন দেশ/এবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়