Apan Desh | আপন দেশ

ইবিতে মুক্তমঞ্চ তৈরির জন্য বৃক্ষনিধন

ইবি প্রতিনিধি 

প্রকাশিত: ১১:১১, ৪ মার্চ ২০২৪

ইবিতে মুক্তমঞ্চ তৈরির জন্য বৃক্ষনিধন

ছবি: আপন দেশ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) মুক্তমঞ্চ তৈরির জন্য কাটা হয়েছে বড় বড় তিনটি গাছ। বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলার এসব গাছ কাটায় ক্ষোভ জানিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, পরিবেশ ধ্বংস করে চিত্তবিনোদনের আয়োজন অযাচিত কর্মকাণ্ড। বৈশ্বিক উষ্ণায়নে পৃথিবী যখন হাঁসফাঁস করছে তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় বৃক্ষনিধন করা হচ্ছে। এটা প্রকৃতির সঙ্গে বর্বতা।

জানা গেছে, গাছগুলো বটতলার সৌন্দর্যের পাশাপাশি বিরাট এলাকায় ছায়া দিত। নব নির্মিত মুক্তমঞ্চ থেকে মাত্র ৩০ মিটার দূরে দুটি একাডেমিক ভবন রয়েছে। এতে অন্তত এক ডজন বিভাগের ল্যাব ও ক্লাস রুম আছে। ক্লাব বা ল্যাবের ফাঁকে শিক্ষার্থীরা এ বটতলায় এসে বিশ্রাম নিত। গাছাঘেরা হওয়ায় স্বস্তির বাতাসও পাওয়া যেত।

প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের শিক্ষার্থীদের দাবি, ক্লাস রুমের কাছে মুক্তমঞ্চ তৈরি হলে আমাদের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান কাজ হচ্ছে শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টি করা। কৃত্রিম সৌন্দর্য বৃদ্ধি কিংবা এ ধরনের অপ্রয়োজনীয় কাজের জন্য বৃক্ষনিধন সত্যি হতাব্যঞ্জক। অবিলম্বে মুক্ত মঞ্চ অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার দাবি জানান সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

আরও পড়ুন>> ইবিতে ফের শিক্ষার্থীকে বিবস্ত্র করে রাতভর নির্যাতন

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আইরিন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীন গাছগুলো আমাদের সম্পদ। এগুলো সংরক্ষণ করা নৈতিক দায়িত্ব। আমাদের বাংলা মঞ্চ আছে। অথচ সেখানে সারাবছরে ৪/৫টা প্রোগ্রামও হয়না। নতুন করে মুক্তমঞ্চ তৈরির নামে বৃক্ষনিধন সত্যিই কষ্টদায়ক।’

ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান ড. শরিফ মো. আল-রেজা বলেন, ‘বটতলায় প্রোগ্রাম হলে ক্লাস পরীক্ষায় ডিস্টার্ব হয়। তারপর যদি আবার একই এলাকায় মুক্তমঞ্চ তৈরি করা হয়, সেক্ষেত্রে ক্লাস পরীক্ষায় আরও ডিস্টার্ব হবে। আমাদের দাবি থাকবে জিনিসটা যাতে অন্য জায়গায় করা হয়।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবাদী সংগঠন অভয়ারণ্যের সভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ ইমন বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরনো গাছগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ। আমাদের আহ্বান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেন আর একটি গাছেও হাত না দেয়।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী এ. কে. এম শরীফ উদ্দিন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় আমাকে একটি কাজ দিয়েছিল। আমি ওইকাজের চাহিদা প্রশাসনকে জানিয়েছি। এর বেশি কিছু আমি জানি না।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদাৎ হোসেন আজাদ বলেন, ‘বিষয়টি প্রক্টরের কোন ফাংশন না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভালো বলতে পারবে।’

এ বিষয়ে এস্টেট অফিসের দায়িত্বরত উপ-রেজিস্ট্রার শামসুজ্জামান জোহা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলের অনুমতি নিয়ে গাছগুলো কাটা হয়েছে। এখানে আমার ব্যক্তিগত কোন সিদ্ধান্ত নেই।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়ার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

আপন দেশ/এমসি/এসএমএ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়