Apan Desh | আপন দেশ

প্রধানমন্ত্রী ভারত যাচ্ছেন শুক্রবার, সন্ধ্যায় মোদির সঙ্গে বৈঠক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০৯:৪৯, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

প্রধানমন্ত্রী ভারত যাচ্ছেন শুক্রবার, সন্ধ্যায় মোদির সঙ্গে বৈঠক

ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জি-২০ সম্মেলনে যোগ দিতে ভারত যাচ্ছেন আগামীকাল শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর)। সংগঠনটির সদস্য না হয়েও ভারতের বিশেষ আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী এ সফরে যাচ্ছেন। এদিন সন্ধ্যায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসবেন শেখ হাসিনা। এদিন দুপুরে নয়াদিল্লিতে পৌঁছানোর কথা রয়েছে তার।

ঢাকা ও দিল্লির সূত্রগুলো বলছে, আগামী জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনের আগে এটিই হবে শেখ হাসিনার সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির শেষ দ্বিপক্ষীয় বৈঠক। বাংলাদেশের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের কারণে হাসিনা-মোদির দ্বিপক্ষীয় এই বৈঠক দুই দেশের কাছেই খুব গুরুত্বপূর্ণ। তবে দ্বিপক্ষীয় এই বৈঠকে কোনো সমঝোতা স্মারক বা চুক্তি হবে কিনা, সে বিষয়ে ঢাকা বা নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে কোনো কিছু জানানো হয়নি। সাধারণত দুদেশে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের সমঝোতা স্মারক বা চুক্তি সই হয়ে থাকে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ আগামী রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকা আসবেন। সেই প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনার ভারত সফর দুদিন কমিয়ে আনা হয়েছে। ঢাকার পক্ষ থেকে শুক্রবার দুদেশের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের প্রস্তাব করা হয়েছিল। দিল্লির পক্ষ থেকে সেদিন সন্ধ্যায় সময় দেয়া হয়েছে। তবে নিদির্ষ্টি করে সময় এখনো ঘোষণা করা হয়নি।  

কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন ঘিরে পশ্চিমা বিশ্বের আগ্রহ এবং ভূ-রাজনৈতিক কারণে বেশ আলোচনা চলছে। এই সময় নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে শেখ হাসিনার বৈঠক সবার কাছেই আগ্রহের বিষয়। প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারত সরাসরি কোনো কিছু না বললেও তাদের কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আঞ্চলিক শান্তি ও শৃঙ্খলার দিক থেকে ভারত বাংলাদেশের নির্বাচনকে বেশ গুরুত্ব দেয়। যার কারণে হাসিনা-মোদির এই দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের দিকে সবার নজর রয়েছে। দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে বাংলাদেশের নির্বাচনসহ আঞ্চলিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিও উঠে আসবে বলে কূটনৈতিক সূত্রগুলো মনে করছে।

ঢাকার কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের টানাপোড়ন প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে। আবার একই ইস্যুতে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে চীন। বিষয়টি উদ্বিগ্ন করে তুলেছে আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতিতে ভারতকে। এ কারণে নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন দিল্লি সফরে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে টানাপোড়ন প্রশমনে মধ্যস্থতাকারীর হিসেবে ভারত ভূমিকা পালন করবে।

পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, আমাদের তিস্তার পানি ভাগাভাগির যে বিষয়টি আছে, সেটি নিশ্চয়ই প্রধানমন্ত্রী উত্থাপন করবেন। আমাদের প্রায় ৫৪টি অভিন্ন নদ-নদী আছে। গঙ্গা নদীর পানিবণ্টন চুক্তিসহ সব বিষয়ে আমাদের যৌথ নদী কমিশনের আলোচনা চলছে। ভারতের শীর্ষ রাজনৈতিক পর্যায়ে আমরা সবসময় তিস্তার হিস্যা নিয়ে আলোচনা করে এসেছি, আলোচনায় রেখেছি। এবারো আশা করি, প্রধানমন্ত্রী আলোচনা করবেন।

আরও পড়ুন <> সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় বদ্ধপরিকর সরকার: প্রধানমন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনও প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন ভারত সফর নিয়ে কথা বলেছেন। সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমরা ভারতকে ধন্যবাদ জানাই। দক্ষিণ এশিয়া থেকে তারা শুধু আমাদেরই আমন্ত্রণ জানিয়েছে। তাই আমরা অনেক সম্মানিত।

নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক সম্পর্কে তিনি বলেন, সরকারপ্রধানদের মধ্যে অ্যাপয়েন্টমেন্টগুলো শেষ মিনিটে চূড়ান্ত হয়। আমরা বিশ্বাস করি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের সম্ভাবনা অবশ্যই আছে। তারা আমাদের দ্বিপক্ষীয় ও আন্তর্জাতিক ইস্যুগুলো নিয়ে আলোচনা করবেন।

শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতে যাবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। এ ছাড়া রেলমন্ত্রী ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীরও যাওয়ার  কথা রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, জি-২০-এর সদস্য না হয়েও বাংলাদেশ ওই জোটের সম্মেলনে যাচ্ছে ভারতের আমন্ত্রণে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) নয়াদিল্লিতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ বিশ্বনেতাদের সঙ্গে এক মঞ্চে বসবেন। তাদের সামনেই তিনি ‘গ্লোবাল সাউথের’ পক্ষে বক্তব্য দেবেন। এটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বাংলাদেশের জন্য একটি অনন্য সুযোগ। ভারত যে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে বিশেষ গুরুত্ব দেয়, এটি তারও বহিঃপ্রকাশ।

নয়াদিল্লি থেকে পাওয়া খবরে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী যখন নয়াদিল্লি সফরে যাচ্ছেন তখন সেখানে ২৫টিরও বেশি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকারপ্রধান পর্যায়ের প্রতিনিধিরা থাকবেন। নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে শেখ হাসিনার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকটি হবে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের আগে। 

প্রধানমন্ত্রী তিন দিনের নয়াদিল্লি সফর শেষে আগামী রোববার ঢাকায় ফিরবেন। সেদিন তিনি ঢাকায় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে স্বাগত জানাবেন।

আপন দেশ/আরএ

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

শীর্ষ সংবাদ:

ঢাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচলের অনুমতি দিতে বলেছেন প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বিতীয় দফায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আগামীকাল মঙ্গলবার কিশোরগঞ্জে র‍্যাব হেফাজতে নারী মৃত্যুর ঘটনায় ক্যাম্প কমান্ডার প্রত্যাহার সৌদি আরব পৌঁছেছেন ৩০ হাজার ৮১০ হজযাত্রী, দুইজনের মৃত্যু সাগরে মাছ ধরায় ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা আজ শুরু দেশের পাঁচ অঞ্চলে দুপুরের মধ্যে ঝড়ের পূর্বাভাস রাঙামাটিতে ইউপিডিএফের অর্ধদিবস অবরোধ চলছে ইরানি প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মৃত্যু, জরুরি বৈঠক ডেকেছে ইরানের মন্ত্রিসভা ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি মারা গেছেন ভারতে লোকসভা নির্বাচনের পঞ্চম দফার ভোটগ্রহণ শুরু