Apan Desh | আপন দেশ

কমলাপুর থানায় মামলা

মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে আগুন: পিবিআই’র সন্দেহে তিন ব্যক্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১০:০২, ২০ ডিসেম্বর ২০২৩

আপডেট: ১৩:১৫, ২০ ডিসেম্বর ২০২৩

মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে আগুন: পিবিআই’র সন্দেহে তিন ব্যক্তি

ছবি : সংগৃহীত

নেত্রকোনা থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসা মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দেয়ার ঘটনায় তিন ব্যক্তিকে সন্দেহ করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

এ ঘটনায় কমলাপুর রেলওয়ে থানায় মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে রেলওয়ের ট্রেন পরিচালক খালেদ মোশাররফ বাদী হয়ে এই মামলা করেন। কমলাপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদাউস আহমেদ বিশ্বাস জানান, মামলায় কারো নাম উল্লেখ করা হয়নি। অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

অন্যদিকে পিবিআই’র পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্ত প্রমাণ করে যে এটি একটি নাশকতামূলক কাজ। এতে জড়িত থাকতে পারে তিন ব্যক্তি। তারা বিমানবন্দর স্টেশন থেকে ট্রেনের তিনটি বগিতে উঠেছিলেন।তারাই ট্রেনের সিটে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দিতে পারেন।’

পুলিশ সুপার জানান, বিমানবন্দর স্টেশনের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে ট্রেনে কারা উঠেছিলেন, তেজগাঁও স্টেশন থেকে কারা নেমেছেন তা জানার চেষ্টা চলছে।

পুলিশ জানায়, ট্রেনটি ভোর রাতে ঢাকার বিমানবন্দর স্টেশনে থেমেছিল। এরপর সেখানেই ট্রেনের বগিতে আগুন দিয়ে দুর্বৃত্তরা নেমে যায় বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

চালক ট্রেনে আগুন লাগার খবর পান সেখান থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার পর তেজগাঁও স্টেশনে- জানিয়ে সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, কেন তিনি তাৎক্ষণিকভাবে ট্রেনে আগুনের খবর পেলেন না, সেটি এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে।

প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া তথ্যের উদ্ধৃতি দিয়ে পুলিশ বলছে, বিমানবন্দর স্টেশনেই যাত্রীবেশে কে বা কারা ট্রেনে আগুন দিয়েছে। ওই স্টেশন পার হওয়ার পরই আগুন ট্রেনে ছড়িয়ে পড়ে। তবে চালক সেটি টের পাননি।

রেলওয়ে পুলিশ বলছে, ট্রেনে রেলওয়ের পক্ষ থেকে একজন পরিচালক থাকেন, যিনি ট্রেনের সার্বিক তত্ত্বাবধান করেন। তা ছাড়া প্রতিটি বগিতে একজন করে সুপারভাইজার থাকেন। আগুন লাগার তথ্য দ্রুততম সময়ে চালককে (লোকোমাস্টার) জানানোর দায়িত্বও তাদের। কিন্তু সেটি তারা তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেননি। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ট্রেনের বগিতে জিআরপি পুলিশও থাকেন। তবে তারাও আগুনের খবর প্রথমে পাননি।

রেলওয়ে জেলা ঢাকার পুলিশ সুপার (এসপি) আনোয়ার হোসেন বলেন, বগির সুপারভাইজারের কাছে ট্রেনের পরিচালক ও চালকের ফোন নম্বর ছিল না। এ কারণে তিনি আগুন লাগার তথ্য তাদের জানাতে পারেননি বলে জানতে পেরেছেন তারা। 

আরও পড়ুন <> তেজগাঁওয়ে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে আগুন, মা–শিশুসহ নিহত ৪

ওই ট্রেনের চালক দিলীপ কুমার মণ্ডল বলেন, বগিতে আগুন লাগলে সেই তথ্য আমাকে না জানালে সেটি চালকের আসনে বসে বোঝা প্রায় অসম্ভব। তবে তেজগাঁও রেলস্টেশনে আসার পর আগুনের খবর জানালে সঙ্গে সঙ্গে ট্রেন থামাই। 

ট্রেনটির পরিচালকের দায়িত্বে থাকা খালেদ মোশারফ জানান, ট্রেনটিতে ১৪টি বগি ছিল। তিনি ছিলেন একেবারে শেষ বগিতে। আগুন লাগে সামনের দিক থেকে ছয় নম্বর বগিতে। আর পেছন থেকে আট নম্বর বগিতে। তেজগাঁও রেলস্টেশনে আসার পর তিনি দেখতে পান ট্রেনের সামনের দিকে ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে আছে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ট্রেনের চালককে বিপজ্জনক সংকেত দেন। তখনই ট্রেন থামানো হয়।

তেজগাঁও রেলওয়ে স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার পার্বত আলী বলেন, ট্রেনটি সোমবার রাত ১১টার দিকে মোহনগঞ্জ স্টেশন থেকে ছেড়ে ভোর ৪টা ৫০ মিনিটে বিমানবন্দর স্টেশনে পৌঁছায়।

তিনি বলেন, ট্রেনটি সরাসরি কমলাপুর রেলস্টেশনে যাওয়ার কথা ছিল এবং এর জন্য সবুজ সংকেত দেয়া হয়েছিল। ভোর ৪টা ৫৮ মিনিটের দিকে ট্রেনটি তেজগাঁও স্টেশনে পৌঁছালে ট্রেনের বগি থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখি। আমি তখনই জরুরি সুইচ চালু করে ট্রেন থামিয়ে দেই। লাল বাতি দেখে ট্রেনটি থেমে গেলেও ট্রেন তেজগাঁও রেলগেটে পৌঁছে গেছে সে সময়।

পার্বত জানান, চ, জ এবং ঝ নম্বর বগিতে আগুন লেগেছে। আমরা প্রথমে স্টেশনে ফায়ার ফাইটিং টুল দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করি এবং একই সঙ্গে জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল করে ফায়ার সার্ভিসকে জানাই।  

আপন দেশ/এমআর

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়