Apan Desh | আপন দেশ

সামুদ্রিক প্রাণী প্লাস্টিক খায়!

আপন দেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩:৩৮, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

সামুদ্রিক প্রাণী প্লাস্টিক খায়!

ছবি: সংগৃহীত

অনেক সামুদ্রিক প্রাণীই প্লাস্টিক খায়। কারণ সাগরে ভাসা প্লাস্টিকে খাবারের মতোই গন্ধ বের হয়। একেবারে ক্ষুদ্রতম প্ল্যাংকটন থেকে শুরু করে অতিকায় প্রাণী- সব ধরণের সামুদ্রিক প্রাণীই যে প্লাস্টিক খাচ্ছে, তার অনেক প্রমাণও পাওয়া গেছে। প্লাস্টিক তো দেখতে কোন খাবারের মতো নয়। এর কোন গন্ধও নেই। তারপরও কেন প্লাস্টিক খাচ্ছে তারা?

বিজ্ঞানী এরিক জেটলার অবশ্য এ কথার সঙ্গে একমত নন। তিনি একজন মাইক্রোবায়াল ইকোলজিস্ট। কাজ করেন নেদারল্যান্ডসের রয়্যাল ইনস্টিটিউট ফর সী রিসার্চে। 

তিনি বলেছেন, এরপরের বার যখন সৈকতে যাবেন তখন এক টুকরো প্লাস্টিক কুড়িয়ে নিয়ে সেটার গন্ধ শুঁকে দেখুন। মেছো গন্ধ পাবেন। সমুদ্রে সব প্লাস্টিকের ওপরই দ্রুত এক ধরণের মাইক্রোব বা ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জীবাণুর আস্তরণ পড়ে। বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় একে বলা হয় ‘প্লাস্টিস্ফেয়ার’।

এই পিচ্ছিল জীবন্ত আস্তরণ থেকে যে রাসায়নিক নির্গত হয়, সেটাই আসলে প্লাস্টিককে লোভনীয় খাদ্যে পরিণত করে। কারণ প্লাস্টিক থেকে তখন খাদ্যের মতোই গন্ধ বের হয়, এর স্বাদও হয় সেরকম। সাগরে প্লাস্টিকের বর্জ্য আগামী এক দশকে আরও তিন গুণ বাড়তে পারে। একটি বিশেষ যৌগ ডাইমিথাইল সালফাইড (ডিএমএস) এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

আরও পড়ুন>> সেন্টমার্টিনে বিপদ বাড়ছে মা কচ্ছপের

যেসব সামুদ্রিক পাখি প্লাস্টিক খায়, তাদের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা এরকম। তবে কিছু কিছু প্রাণী, যেমন তিমি যখন প্ল্যাংকটন খাওয়ার জন্য পানি ছাঁকে, তখন আসলে তারা এর সঙ্গে প্লাস্টিকও গিলে ফেলে।

বিশ্ব জুড়েই সমুদ্রে প্লাস্টিকের আবর্জনা বাড়ছে। ২০১৫ সালের এক সমীক্ষা অনুযায়ী, বছরে সমুদ্রে গিয়ে পড়ছে প্রায় ৮০ লাখ মেট্রিক টন প্লাস্টিক। কিছু প্লাস্টিক সামুদ্রিক স্রোতে গিয়ে ঘুরপাক খেতে থাকে। এরকম স্রোতে পড়লে, তখন প্লাস্টিক ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে ‘মাইক্রোপ্লাস্টিক কনা’য় পরিণত হয়। তখন এই মাইক্রোপ্লাস্টিক চলে যায় সামুদ্রিক জীবের পেটে।

রসকাইলড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ক্রিস্টিয়ান সাইবার্গ বলেছেন, ‘প্লাস্টিকের কারণে সামুদ্রিক প্রাণী শ্বাসরুদ্ধ হয়ে বা খাদ্যাভাবে মারা যেতে পারে। কারণ প্লাস্টিক তাদের পরিপাকনালী রুদ্ধ করে দিচ্ছে।’ প্লাস্টিকের কারণে ইতোমধ্যে কিছু জাতের অ্যালবাট্রস পাখির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

বিশ্বের দুর্গমতম অঞ্চলের সাগর তীরেও গিয়ে পৌঁছেছে প্লাস্টিকের বর্জ্য। কিন্তু সমুদ্রকে কীভাবে প্লাস্টিকের দূষণমুক্ত রাখা যাবে? প্রশান্ত মহাসাগরে এক বিরাট পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এর আওতায় সাগরে ৬০০ মিটার লম্বা ‘ফ্লোটার’ পাঠানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। যা প্রতি মাসে পাঁচ টন করে প্লাস্টিক ছেঁকে তুলতে পারবে।

ক্রিস্টিয়ান সাইবার্গ মনে করেন সাগরে এরকম পরিচ্ছন্নতা অভিযান অবশ্যই ভালো পদক্ষেপ। কিন্তু তার মতে, এই সমস্যার চূড়ান্ত সমাধান আসলে সাগরে প্লাস্টিক ফেলা পুরোপুরি বন্ধ করা। সেটা একমাত্র সম্ভব আমরা সবাই যদি প্লাস্টিক ব্যবহার, ছুঁড়ে ফেলার অভ্যাস পুরোপুরি পাল্টে ফেলতে পারি। সূত্র: বিবিসি

আপন দেশ/এসএমএ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়