Apan Desh | আপন দেশ

ব্রাহ্মণপাড়ার প্রকৃতি সেজেছে শিরীষ ফুলে 

কুমিল্লা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১২:৩১, ৫ মে ২০২৪

আপডেট: ১২:৩১, ৫ মে ২০২৪

ব্রাহ্মণপাড়ার প্রকৃতি সেজেছে শিরীষ ফুলে 

ছবি : সংগৃহীত

কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার বিভিন্ন সড়কের দুই পাশে ফুটে রয়েছে শিরীষ ফুল। এর নয়নাভিরাম সৌন্দর্যে বিমোহিত হচ্ছেন ফুলপ্রেমীসহ নানা বয়সী পথচারী। ছোট ছোট পাতা ছাপিয়ে গাছের শাখা-প্রশাখার অগ্রভাগে থোকায় থোকায় শিরীষ ফুটে থাকার সৌন্দর্যে প্রকৃতিতেও যেন এক নতুনমাত্রা যোগ হয়েছে।

কিশোরী ও তরুণীরা এ ফুল সৌন্দর্য বাড়াতে খোঁপায় ও চুলের বেনিতে পড়ছে। কোমলমতি শিশুরাও ঝরা এ ফুল নিয়ে খেলা করছে। এ ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন সৌন্দর্য প্রেমীরা। ফুলের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য নজর কাড়ছে পাখিদেরও। ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করার পাশাপাশি তীব্র রোদ এড়াতে পথিক ও শ্রমজীবীরা শিরীষের ছায়ায় বিশ্রাম নিচ্ছেন। উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা ও বিভিন্ন সড়ক ঘুরে এমনটিই দেখা গেছে।

বাংলা সাহিত্যের খ্যাতিমান কবি সাহিত্যিকের কলমেও উঠে এসেছে শিরীষ ফুলের সৌন্দর্য। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার কবিতায় শিরীষ ফুলকে তুলে এনেছেন এভাবে, ‘প্রাঙ্গণে মোর শিরীষ শাখায় ফাগুন মাসে কী উচ্ছ্বাসে, ক্লান্তিবিহীন ফুল ফোটানোর খেলা।’ প্রকৃতির কবি জীবনানন্দ দাশ লিখেছেন, ‘শিরীষ-গাছে পেঁচা ডাকছে বুঝি-/অন্ধকারের ভিতর কেমন শিরশির মধুরতা।’

জানা গেছে, আকারে বটগাছ সদৃশ্য শিরীষ এর বৈজ্ঞানিক নাম Albizia lebbeck । এটি Albizia গণের একটি প্রজাতি। এদের কয়েকটি প্রজাতি রয়েছে। এর ফুল দেখতে খুব সুন্দর হয়। এই গাছের আদি নিবাস ইন্দোনেশিয়া, উত্তর অস্ট্রেলিয়া ও নিউগিনিতে। এ ছাড়া মালেশিয়া, শ্রীলঙ্কা, ভারত, পাকিস্তান ও চীনেও এই গাছ জন্মে। অ্যামেরিকা ও আফ্রিকায়ও এই গাছের কদর বেড়েছে। এ দেশে শিরীষকে কড়ই, সৃষ্টি কড়ই, রেইনট্রি বা এন্ডিকড়ই নামেও চেনে অনেকে।

আরও পড়ুন <> হিট অ্যালার্টের মধ্যে ঝড়ের পূর্বাভাস

শিরীষগাছ বট গাছের মতো অনেক জায়গা দখল করে। এই গাছ লম্বায় ১৮ থেকে ৩০ মিটার পর্যন্ত হতে পারে। এর পাতাগুলো ছোট ছোট আকারের সবুজ রঙের হয়। এর ফুল গোলাপি ও সাদার মিশেল, সাদা ও হলুদ রঙের মিশেলে চিকন চিকন কেশরযুক্ত নজরকাড়া হয়ে থাকে। এদের কয়েকটি প্রজাতি হওয়ায় অন্য রঙের ফুল হয় শিরীষের। ফুল শেষে এই গাছে ফল ধরে। ফলের বীজের মাধ্যমে এ গাছ বংশবিস্তার করে থাকে। এ গাছের কাঠ শক্ত ও মজবুত হয়।

আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে, শরীষের রয়েছে ঔষধি গুণ। এই গাছের মূলের ছাল চূর্ণ করে নিয়মানুযায়ী ব্যবহার করলে একজিমা নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং হাঁপানি রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। বিষাক্ত পোকামাকড়ের বিষক্রিয়া নষ্ট করতে এই গাছের ছাল ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া চোখ ওঠা রোগে এই গাছের ফলের বীজ চোখে কাজলের মতো ঘষলে আরোগ্য পাওয়া যায়।

ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইউনানি চিকিৎসক সোহেল রানা বলেন, শিরীষ কাঠ গাছ হলেও এর ঔষধি গুণ রয়েছে। এ গাছের মূলের ছাল ও গাছটির ফলের বীজ নানা রোগ নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়। উপজেলার বিভিন্ন সড়ক, মহাসড়ক, গ্রামীণ সড়কসহ বাড়ির পাশে এ গাছ দেখা যায়। এ ছাড়া এটি প্রকৃতিবান্ধব গাছ। এটি ঝড়ের কবল থেকেও রক্ষা করে থাকে।

আপন দেশ/এমআর

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

জনপ্রিয়