Apan Desh | আপন দেশ

সাতক্ষীরার আম বাজারে, ২৫০ কোটি বিক্রির আশা

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১১:২৭, ৯ মে ২০২৪

সাতক্ষীরার আম বাজারে, ২৫০ কোটি বিক্রির আশা

ছবি : সংগৃহীত

সাতক্ষীরার গোপালভোগ, বোম্বাই, গোলাপঘাস, বৈশাখীসহ আরও কয়েকটি প্রজাতির আম আজ বৃহস্পতিবার দেশের বাজারে উঠছে। জেলায় এবার ২৫০ কোটি টাকার আম বিক্রির আশা করছে কৃষি বিভাগ। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, এ বছর সদর উপজেলায় এক হাজার ২৩৫ হেক্টর, কলারোয়ায় ৬৫৮, তালায় ৭১৫, দেবহাটায় ৩৮০, কালিগঞ্জে ৮২৫, আশাশুনিতে ১৪৫ ও শ্যামনগরের ১৬০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। সবমিলে চার হাজার ১১৮ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। জেলায় সরকারি তালিকাভুক্ত পাঁচ হাজার ২৯৯টি আমবাগান ও ১৩ হাজার ১০০ চাষি রয়েছেন। জেলায় এবার আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ হাজার মেট্রিক টন। 

ইউরোপের বিভিন্ন দেশে প্রতি বছর রফতানি হয় সাতক্ষীরা জেলার আম। ভৌগোলিক কারণে দেশে প্রথম আম পাকে সাতক্ষীরায়। তাই মৌসুমের প্রথম আম পেতে অপেক্ষায় থাকেন আমপ্রেমীরা। 

সাতক্ষীরা বড় বাজারের আড়তদার নুরুজ্জামান বলেন, সাতক্ষীরার আম বিশ্ববিখ্যাত, এ জেলার আম রফতানি হয়। তবে এবছর আবহাওয়ার কারণে অনেক আম ঝরে গেছে। এখন যা আছে তা খুবই কম। গতবারের তুলনায় এ বছর আমের দাম একটু বেশি যাবে। 

তিনি আরও বলেন, আমাদের বাজার প্রস্তুত হয়ে গেছে আম বিক্রির জন্য। বিভিন্ন জায়গা থেকে ক্রেতারাও আসা শুরু করেছেন।

আরও পড়ুন <> কুমিল্লায় তিল চাষ জনপ্রিয় হচ্ছে

আমচাষি মিজানুর রহমান বলেন, আমার পাঁচ বিঘা জমি রয়েছে। ৫০টি আম গাছ লাগানো। এবার ২৫টি গাছে কিছু আম হয়েছে। বাকিগুলোতে তেমন আম হয়নি। তাপমাত্রার কারণে অর্ধেক গাছে আম হয়েছে, অর্ধেক গাছে হয়নি। এবার আমাদের মনে হয় পুঁজি থাকবে না। 

উপজেলা কর্মকর্তা মনির হোসেন জানান, আবহাওয়া এবং পরিবেশগত কারণে অন্য জেলার চেয়ে সাতক্ষীরায় আম আগে পরিপক্ব হয়। এজন্য দেশের বাজারে সবার আগে এখানকার আম বিক্রি শুরু হয়। এরইমধ্যে বিভিন্ন জায়গা থেকে ব্যবসায়ীরা আসা শুরু করেছেন। যারা আম ব্যবসায়ী ও চাষি রয়েছেন তাদেরকে আমরা অনুরোধ জানাচ্ছি সাতক্ষীরার আমের যে সুনাম রয়েছে সেই সুনাম ধরে রাখতে। কোনো রাসায়নিক মিশ্রিত আম যেন বাজারজাত না হয় সেজন্য জেলা প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতায় আমরা মাঠে কাজ করে যাচ্ছি। আশা করছি বাংলাদেশসহ বিদেশি মানুষের সাতক্ষীরার ভালো আম খাওয়াতে পারব।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, সাতক্ষীরার হিমসাগর, গোবিন্দভোগ, ল্যাংড়া ও আম্রপালি আম স্বাদে-গুণেমানে অনন্য। এই বিশেষত্ব কাজে লাগিয়ে ২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো সাতক্ষীরার আম রফতানি শুরু হয়।

জানা যায়, সাতক্ষীরা থেকে ২০১৫ সালে ২১ টন, ২০১৬ সালে ২৩, ২০১৭ সালে ৩২, ২০১৮ সালে সাড়ে ১৯, ২০১৯ সালে এক, ২০২১ সালে ১১ দশমিক ৩৬, ২০২২ সালে ২১ ও ২০২৩ সালে ১৫৩ টন আম রফতানি হয়। এসব আমের অধিকাংশই রফতানি হয়েছে ইতালি, ফ্রান্স, হংকং, যুক্তরাজ্য ও মধ্য এশিয়ার বিভিন্ন দেশে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সাতক্ষীরা জেলার উপপরিচালক সাইফুল ইসলাম জানান, এ বছর জেলার চার হাজার ১১৮ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ হাজার মেট্রিক টন। 

সাইফুল ইসলাম আরও বলেন, যদিও প্রতিকূল আবহাওয়া ছিল। ন্যাচারাল সিলেকশন বলে একটি কথা রয়েছে, এ কারণে আম কম হলেও আমের সাইজ বড় হয়েছে। আশা করছি আমাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে। স্থানীয় জাত গোপালভোগ, বোম্বাই, গোলাপঘাস, বৈশাখীসহ আরও কয়েকটি প্রজাতির আম দিয়ে আম সংগ্রহ শুরু হবে। তিনি জানান, ১১ মে গোবিন্দভোগ, ২২ মে হিমসাগর, ২৯ মে ল্যাংড়া ও ১০ জুন আম্রপালি আম সংগ্রহ হবে। 

আপন দেশ/এমআর

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়