Apan Desh | আপন দেশ

পেঁয়াজের বাজারে ডিবি, দাম বেশি বিক্রি কম

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৫:১২, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩

পেঁয়াজের বাজারে ডিবি, দাম বেশি বিক্রি কম

ফাইল ছবি

রাজনৈতিক আন্দেপালনের ঝাঁজ বাড়িয়ে দিয়েছে পেঁয়াজ। রাতিারাতি দ্বিগুনেরও বেশি দাম বাড়ায় অস্থির করে তোলেছে সাধারণ মানুষকে। হাতাহাতির ঘটনাও ঘটছে ক্রেতা বিক্রেতার মধ্যে। সূর্য উঠানামার সঙ্গে দাম বাড়ানোর অপকর্ম ঠেকাতে মাঠে নেমেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ-ডিবি।

এদিকে খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম ২৪০ টাকা হওয়ার পর কমেছে বিক্রি। খুচরা বিক্রেতারাও পেঁয়াজ বিক্রি কমে যাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। হঠাৎ করে পেয়াজের দাম বাড়ার প্রতিবাদ করায় ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে হাতাহাতি থেকে মারামারির ঘটনাওে ঘটেছে। 

অন্যদিকে সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ অভিযোগ করেছেন, নিত্যপণ্যের সংকট তৈরি হলেই অনেক ব্যবসায়ী এর সুযোগ নিয়ে থাকেন।তিনি বলেন, যিনি এক দিন আগে ১২০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ বিক্রি করলেন পরের দিন কিভাবে সেটার দাম ২০০ টাকা হয়ে গেল। দাম বাড়তে তো সময় লাগার কথা। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ব্যাবসায়ীরা বাড়তি লাভের আশায় কোনো নৈতিকতাই রাখলেন না।

বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) ভারত থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের কথা জানানো হয়। তাদের অভ্যন্তরীণ বাজারের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে আগামী বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ রাখবে তারা।

এর আগে গত ২৯ অক্টোবর ভারত থেকে প্রতি টন পেঁয়াজের রফতানি মূল্য ৮০০ ডলার নির্ধারণ করে দেয়। ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তা চালু থাকবে বলা হয়েছিল। কিন্তু তার আগেই দেশটি পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের ঘোষণা দিল।

শুক্রবার এ ঘোষণা আসার পর রাজধানীসহ সারা দেশের খুচরা বাজারে কয়েক ঘন্টার ব্যাবধাসে পেঁয়াজের দাম হুহু করে বাড়ে। পরে দেশি পেঁয়াজের কেজি দাঁড়ায় ২২০ থেকে ২৪০ টাকায়। ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকায়।

দাম বাড়ায় খুচরা বাজারে পেঁয়াজের বিক্রির পরিমাণ আগের চেয়ে কমে গেছে।

রাজধানীর রামপুরা এলাকার বাজারে দেখা গেছে বেশিরভাগ দোকানেই আগের পেঁয়াজ ছিল; কিন্তু বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে পেঁয়াজের দাম বাড়ার খবরে খুচরা বিক্রেতারা পেঁয়াজেরও দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।

এই বাজারের বিক্রেতা হেলালুদ্দিন জানান, বৃহস্পতিবার দেশি পেঁয়াজ ছিল ১৩০ টাকা আর ভারতীয় পেঁয়াজ ১১০ টাকা কেজি। রোববারে এসে দেশি ২২০ থেকে ২৪০ আর ভারতীয় পেঁয়াজ ২০০ থেকে ২২০ টাকা হয়েছে। আগে যে ক্রেতা ২ কেজি পেঁয়াজ কিনতো সে এখন আধা কেজি কিনছে।

রোববার (১০ ডিসেম্বর) সকালে কারওয়ান বাজার থেকে পাইকারি দামে পেঁয়াজ কিনে এনেছেন মধ্য বাড্ডা বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী মোরশেদুল হাসান। তিনি বলেন, আজকে সকালে ডবল দামে পেঁয়াজ কিনলাম। প্রতি কেজি পড়েছে ২০০ টাকার কাছাকাছি। এরপর শ্রমিক খরচ আছে , পরিবহন খরচ আছে। ২২০ টাকার নিচে বিক্রি করতে পরবো না। গত দুই দিন ১০ কেজি পেঁয়াজও বিক্রি করতে পরিনি। এত দামে কেউ কিনতে চাচ্ছে না।

খিলগাঁও রেলগেট বাজারের ক্রেতা বেসরকারি চাকরিজীবী। তিনি বলেন, আগে ১-২ কেজি করে পেঁয়াজ কিনলেও আজকে অতিরিক্ত দামের কারণে পেঁয়াজ কিনলাম ২৫০ গ্রাম। পেয়াজের কেজি ২২০ থেকে ২২৪ টাকা। এত দামে আমাদের মত সাধারণ ক্রেতারা পেঁয়াজ কিনতে পারছে না।

জানা গেছে, বাংলাদেশে প্রতি বছর পেঁয়াজের চাহিদা ২৫ লাখ টনের বেশি। গত বছর উৎপাদন হয়েছে ৩৬ লাখ টনের মতো। কিন্তু ক্ষেত থেকে তুলে সংরক্ষণ করতে না পারায় প্রায় ৪০ শতাংশ পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে। এ কারণে প্রতিবছর ১০ থেকে ১২ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। আমদানি করা পেঁয়াজের ৯০ শতাংশই আসে ভারত থেকে।

পেঁয়াজের বাজারে ডিবি :

পেঁয়াজ মজুদ ও দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। তাদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে একাধিক গোয়েন্দা টিম মাঠে কাজ করছে।

আজ (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে মিন্টো রোডে ডিবি নিজ কার্যালয়ে এসব কথা বলেন মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে শনিবার দুপুর থেকে ডিবির লালবাগ বিভাগের একাধিক টিম চকবাজার ও শ্যামবাজার এলাকায় কাজ করেছে। গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করেছে।

মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান আরও বলেন, এই সময়ে কেউ যদি কালোবাজারি করে, পেঁয়াজ মজুদ করে, বেশি দামে বিক্রির করার পাঁয়তারা করে; তাহলে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

আপন দেশ/এবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়