Apan Desh | আপন দেশ

জামালপুরে সন্ত্রাসী হামলায় সাংবাদিক নাদিম নিহত

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৬:৫৯, ১৫ জুন ২০২৩

আপডেট: ১৭:২৩, ১৫ জুন ২০২৩

জামালপুরে সন্ত্রাসী হামলায়  সাংবাদিক নাদিম নিহত

গোলাম রাব্বানী নাদিম

সংবাদ প্রকাশের জেরে সন্ত্রাসীদের হামলায় খুন হয়েছেন জামালপুরের সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম। বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) বেলা পৌনে ৩টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

নিহত নাদিম বাংলানিউজের জামালপুর প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

এদিকে মৃত্যুর খবরে প্রতিবাদ সমাবেশ করে জামালপুরের সাংবাদিকরা। তারা অবিলম্বে নাদিমের হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবি জানান। 

বুধবার (১৪ জুন) অফিসের কাজ শেষে রাত ১০টার দিকে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম ও তার সহকর্মী আল মুজাহিদ বাবু। পথে বকশিগঞ্জ পাথাটিয়ায় পৌঁছালে অতর্কিত সামনে থেকে আঘাত করে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে ফেলে দেয়া হয় নাদিমকে।

এরপর ১০-১২ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সড়ক থেকে মারধর করতে করতে টেনে হিঁচড়ে এক অন্ধকার গলিতে নিয়ে এলোপাতাড়িভাবে আঘাত করেন তাকে। সেসময় সহকর্মী মুজাহিদ তাদের আটকাতে গেলে তাকেও মারধর করেন তারা।

পরে স্থানীয় বাসিন্দাসহ মুজাহিদ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু আঘাত গুরুতর হওয়ায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় উন্নত চিকিৎসার জন্য।

আরও পড়ুন<> বকশিগঞ্জে সাংবাদিককে পিটিয়ে ফেলে রেখেছিল দুর্বৃত্তরা

বুধবার রাত ১০টার দিকে বকশিগঞ্জের পাথাটিয়ায় ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের বুথের সামনে ঘটে যাওয়া এমন হামলার নৃশংসতার বিবরণ দেন সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমের সহকর্মী আল মুজাহিদ বাবু।

তিনি বলেন, সাধুরপারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহমুদ আলম বাবুর বিরুদ্ধে নাদিমসহ আমরা কয়েকজন নিউজ করেছিলাম সেখান থেকেই তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আছেন আমাদের ওপর। পরে আমাদের নামে ডিজিটাল আইনে মামলাও করেন তিনি। সেই মামলা গতকাল ময়মনসিংহের সাইবার ট্রাইব্যুনাল খারিজ করে দিয়েছেন। এ নিয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেওয়া হয়েছিল। এর দুই তিন ঘণ্টা পর রাতে অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে নাদিমের ওপর হামলা হয়।

আরও পড়ুন <> জামালপুরে সাংবাদিককে পিটিয়ে আহত, মামলা নেয়নি পুলিশ, উল্টো হুমকি

তিনি আরও বলেন, নাদিমকে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে গলা ধরে ফেলে দিয়ে তারপর পাশের একটি অন্ধকার গলিতে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে মারধর করেন মাহমুদ আলম বাবুর লোকজন। ঘটনার সময় ওই গলিতে অন্ধকারে আড়ালে দাঁড়িয়েছিলেন চেয়ারম্যান মাহমুদ আলম বাবু। সেসময় তার ছেলে ফয়সাল, রিফাত, রেজাউল, মনির, সাইদসহ আরও কয়েকজন ছিলেন। মারধরের সময় আমি আটকাতে গেলে আমাকেও তারা মারেন। পরে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসী বাহিনী চলে যায়। পরে নাদিমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়।

গত ১০ মে চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। এ নিয়ে বাংলানিউজে ‘দুইবার বিয়ের পরও সন্তান-স্ত্রীকে অস্বীকার করছেন ইউপি চেয়ারম্যান!’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

আরও পড়ুন <> বকশিগঞ্জে সাংবাদিকের ওপর হামলা, ৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ

পরে ১৪ মে তার স্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে ‘আমি আমার স্বামী চাই, একসঙ্গে সংসার করতে চাই’ শিরোনামে বাংলানিউজে আরও একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।  

পরে ২০ মে  সাবিনা ইয়াসমিন তার স্বামী মাহামুদুল আলম বাবুকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার অথবা পদ থেকে তার অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেন। বাবু  জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার সাধুরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এ নিয়েও বাংলানিউজে ‘আ.লীগ থেকে স্বামীর বহিষ্কার চেয়ে স্ত্রীর আবেদন’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়।  

এর আগে গত ১৪ মে ময়মনসিংহ সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে জামালপুরে নাদিমসহ দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করেন সাধুরপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহামুদুল আলম বাবু। ১৪ জুন আদালত মামলাটি খারিজ করেন।

হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শাস্তি দাবি করেছেন সাংবাদিক নেতারা। 

আপন দেশ/এবি/সূত্র: বাংলা নিউজ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়