Apan Desh | আপন দেশ

রাজউক ডুবছেই: চেয়ারম্যানের ক্ষমাপ্রার্থনা, কর্মচারী গ্রেফতার প্রতারণায়

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৬:৫১, ৩১ মে ২০২৩

আপডেট: ১৭:২০, ৩১ মে ২০২৩

রাজউক ডুবছেই: চেয়ারম্যানের ক্ষমাপ্রার্থনা, কর্মচারী গ্রেফতার প্রতারণায়

ফাইল ছবি

মাত্র ১২ দিন আগে হাইকোর্টে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা। কারণ প্লট বরাদ্দ নিয়ে আদালতের আদেশ যথাযথভাবে পালন করেননি তিনি। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ভবিষ্যতে আদালতের আদেশ যথাযথভাবে প্রতিপালন করবেন। 

রাজউকের শীর্ষ কর্মকর্তার আচরণ ভর করেছে তার অধস্তন কর্মকর্তা-কর্মচারীর ওপর। প্লটের নামে নারীর ৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে রাজউক কর্মচারী দেবাশীষ সাহাকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। চেয়ারম্যানের ক্ষমা প্রার্থনা আর দেবাশীস সাহাকে গ্রেফতাপরের আলোচনার ঝড় উঠেছে বিভিন্ন মাধ্যমে। প্রশ্ন উঠেছে রাজউকে এমন প্রতারকের সংখ্যা কতো? দেবাশীসের পর গোয়েন্দাজালে ধরা পড়ছেন কারা?  

দেবাশীস কুমার কাণ্ড :

দেবাশীষ কুমার সাহা। রাজউকের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী তিনি। প্লট বরাদ্ধ দেয়ার দায়িত্ব তার হাতে না থাকলেও ঝিলমিল ও পূর্বাচলে প্লট দেয়ার আশ্বাসে এক নারীর সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলেন। ওই নারীর কাছ থেকে প্রায় ৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (৩০ মে) তাকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগের ফাইন্যানসিয়াল ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম।

গোয়েন্দা-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার  মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন, বিপিএম-সেবা এ প্রতিবেদককে বলেন, ভুক্তভোগী নারীর বাবা-মা অসুস্থ থাকার সময় তাদের জমিজমা ও সম্পত্তি সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি রাজধানীর রাজউকে যাতায়াত করতেন। এসময় ওই নারীর সঙ্গে রাজউকের কর্মচারী দেবাশীষের পরিচয় হয়। ওই নারীর বাবা মারা যাওয়ার পর তার সঙ্গে  সুসম্পর্ক গড়ে তুলে দেবাশীষ। পরবর্তীতে দেবাশীষ ভুক্তভোগী নারীকে রাজধানীর ঝিলমিল এবং পূর্বাচলে প্লট দেয়ার আশ্বাস দেয়। ওই নারী তার ২টি ফ্লাট বিক্রির দুই কোটি ৬০ লক্ষ টাকা, ১৫০ ভরি স্বর্ণ বিক্রির এক কোটি ২০ লক্ষ টাকা, একটি প্লট বিক্রয় বাবদ দুই কোটি ১০ লক্ষ টাকা, সঞ্চয়পত্র বিক্রয় বাবদ ৫০ লক্ষ টাকা, প্রাইভেটকার বিক্রির ১০ লক্ষ টাকাসহ বিভিন্ন সময়ে সর্বমোট আট কোটি ৮০ লক্ষ টাকা দেবাশীষকে প্রদান করেন।

আরও পড়ুন: গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ: শাহ পরানের দুর্নীতির বাক্স ভরছে কোটি টাকায়

তিনি বলেন, ভুক্তভোগী নারী পরবর্তীতে তার প্লট বুঝিয়ে দেয়ার কথা বললে টালবাহানা শুরু করে দেবাশীষ। টাকা ফেরত চাইলে দেবাশীষ তা ফেরত দিতে অস্বীকার করে। এরই এক পর্যায়ে দেবাশীষ ভুক্তভোগী নারীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে রামপুরা থানায় মামলা দায়ের করে।

তিনি আরো বলেন, মামলা দায়ের করার পর তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় দেবাশীষের অবস্থান শনাক্ত করে গত মঙ্গলবার (৩০ মে) রাজধানীর রামপুরা থানা এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়।

এই কর্মচারীর গ্রেফতারের পর আজ বুধবার (৩১ মে) রাজউকে বেশ আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠে। পরস্পরকে বলতে শুনা যায়, চেয়ারম্যান আদালতে মাফ চেয়ে পার পেয়েছেন, দেবাশীস কুমার সাহা ধরা খেয়েছে, এমন প্রতারকের সংখ্যা রাজউক, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষসহ সকল সেক্টরেই রয়েছে। প্রচলিত কথায় আছে ‘রাজউকের ইট-পাটকেলও পয়সা খায়’।

আপন দেশ/জেডআই/এবি
 

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

জনপ্রিয়