Apan Desh | আপন দেশ

স্মার্টফোন রফতানিতে বাজার হারানোর শঙ্কায় ভারত

আপন দেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:৫৫, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

আপডেট: ১০:৫৭, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

স্মার্টফোন রফতানিতে বাজার হারানোর শঙ্কায় ভারত

ছবি: সংগৃহীত

প্রযুক্তি খাতে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজার হিসেবে পরিচিত ভারত। সেলফোন বা স্মার্টফোন উৎপাদনে অনেক কোম্পানিই এখানে কারখানা স্থাপন করেছে। যাদের মধ্যে অ্যাপল, স্যামসাং ও ফক্সকনও রয়েছে। কিন্তু শুল্কহার বেশি থাকায় স্মার্টফোন রফতানিতে চীন, ভিয়েতনামের কাছে বাজার হারানোর শঙ্কায় রয়েছে ভারত। খবর রয়টার্স।

গত বছর দেশটিতে স্মার্টফোন উৎপাদন বছরওয়ারি হিসেবে ১৬ শতাংশ বেড়ে ৪ হাজার ৪০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে। সে হিসেবে অন্যতম রফতানিকারক হিসেবে ভারত অনেকটাই এগিয়ে। তবে দেশটির তথ্য-প্রযুক্তিমন্ত্রী জানান, রফতানি খাতের প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে চাইলে শুল্কহার কমানোর মাধ্যমে বিদেশি কোম্পানিগুলোকে ব্যবসা পরিচালনায় আগ্রহী করে তুলতে হবে।

আরও পড়ুন>> হারানো মোবাইল ফোন খুঁজে পাবেন যেভাবে

অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে, কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরিতে, স্মার্টফোন উৎপাদনকে অন্যতম মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গত বছর উৎপাদন বাড়ার বিষয়ে মোদি সরকার জানায়, বিদেশি কোম্পানিগুলোকে আর্থিক প্রণোদনা দেয়ার কারণেই এ সফলতা এসেছে। 

কিন্তু অ্যাপলসহ অন্য কোম্পানিগুলোর আইনপ্রণেতা ও লবি গ্রুপ জানায়, চীনের বাইরে উৎপাদন কার্যক্রম স্থানান্তরে ভারতে উচ্চ শুল্কহার প্রতিবন্ধকতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেখানে ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড ও মেক্সিকোর মতো প্রতিষ্ঠান শুল্কহার কমিয়ে সেলফোন রফতানি বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে।

গত ৩ জানুয়ারি ভারতের অর্থমন্ত্রীর কাছে একটি চিঠি ও গোপন নথি পাঠান উপ-তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী রাজিব চন্দ্রশেখর। সেখানে অপ্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক শুল্কহারের কারণে স্মার্টফোন রফতানি খাতে অবনমনের বিষয়ে উদ্বেগ জানান। 

চন্দ্রশেখর জানান, শুল্কহার বেশি থাকায় ভারতে উৎপাদন খরচও বেশি। এছাড়াও ভূ-রাজনৈতিক পুনর্বিন্যাসের কারণে, অধিকাংশ কোম্পানি চীন থেকে সরবরাহ চেইন সরিয়ে নিচ্ছে। প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকতে হলে ভারতকে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে। অন্যথায় কোম্পানিগুলো ভিয়েতনাম, মেক্সিকো ও থাইল্যান্ডের দিকে অগ্রসর হতে পারে।

আরও পড়ুন>> স্মার্টফোনে রিয়েলমির ১০৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা

সার্বিক বিষয়ে চন্দ্রশেখর ও ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কোনো বক্তব্য পায়নি রয়টার্স। 

ভারতের অভ্যন্তরীণ পর্যায়ে স্মার্টফোন উৎপাদন বাড়াতে মেড ইন ইন্ডিয়া প্রকল্প কার্যকর করা হয়েছে। এর অধীনে অনেক যন্ত্রাংশ স্থানীয়ভাবে তৈরি করা হয়। তবে কোম্পানিগুলো সরবরাহ চেইন সংকটের কারণে আরও অনেক যন্ত্রাংশ চীনসহ অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি করে থাকে। স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদনকারীদের সুরক্ষায় এসব যন্ত্রাংশ আমদানিতে উচ্চ শুল্ক আরোপ করেছে ভারত সরকার। ফলে উৎপাদন খরচও বাড়ছে।

সম্প্রতি ভারতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত এরিক জানান, ভারতে যে হারে বিদেশী বিনিয়োগ হওয়া উচিত সেভাবে হচ্ছে না। উচ্চ শুল্কহারের কারণে কোম্পানিগুলো ভিয়েতনামসহ অন্যান্য দেশে স্থানান্তর হয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘কর আরোপের মাধ্যমে বাজারকে সীমিত করা হচ্ছে।’

অন্যদিকে ২০২৯ সাল নাগাদ বিশ্ববাজারে ২৯ শতাংশ বৈদ্যুতিক পণ্য উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু অফিশিয়াল নথির তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে দেশটিতে উৎপাদন হার মাত্র ৪ শতাংশ। অ্যাপল, ফক্সকন ও শাওমি কার্যক্রম বাড়ালেও হার অপরিবর্তিত রয়েছে। 

নির্মলা সিতারমণের কাছে পাঠানো চিঠিতে উপতথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী রাজিব চন্দ্রশেখর বার্ষিক বাজেটে প্রযুক্তিপণ্য আমদানিতে শুল্কহার কমানোর আহ্বান জানান। 

এর পরিপ্রেক্ষিতে অর্থমন্ত্রী কিছু যন্ত্রাংশের ওপর শুল্ক ১০ শতাংশ করার কথা বলেছেন। এতেও অধিকাংশ পণ্যের হার অপরিবর্তিত থাকবে, যা দীর্ঘমেয়াদে স্মার্টফোন রফতানিতে ভারতের অবস্থানকে প্রভাবিত করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

আপন দেশ/এসএমএ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়