Apan Desh | আপন দেশ

নারীরাই বেশি ইমোজি বোঝেন

আপন দেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:৩১, ৪ মার্চ ২০২৪

নারীরাই বেশি ইমোজি বোঝেন

ছবি: সংগৃহীত

নব্বইয়ের দশকে জাপানের সেলফোনে প্রথম ইমোজি ব্যবহার শুরু হয়। দ্রুতই বিশ্বজুড়ে সাড়া ফেলে দেয়। কেবল তরুণদের মধ্যেই নয়, বয়স্ক প্রজন্মের জন্যও এটি যোগাযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে ওঠে। দিনকে দিন এ ইমোজির ব্যবহার বেড়েই চলেছে। তবে ইমোজির অর্থ বোঝা ও ব্যবহারের জ্ঞান নারী ও পুরুষের মধ্যে সমান নয় বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে। 

ইমোজি ব্যবহারের প্রধান একটি কারণ হলো, মেসেজের ভাব আরও ভালোভাবে ফুটিয়ে তোলা। তবে কোনো ইমোজির নির্দিষ্ট ভাব বুঝে ওঠা সব সময় সম্ভব হয় না। ‘আনন্দাশ্রু যুক্ত চেহারা’—এ ধরনের ইমোজির অর্থ সবাই বোঝে, আর সবার কাছে এর অর্থও একই। 

কিন্তু এমন অনেক ইমোজি আছে ব্যক্তি ও সমাজ ভেদে যেগুলোর অর্থ ভিন্ন। কিছু ইমোজি এমন আছে যেগুলোর বিভিন্ন গোষ্ঠীতে অর্থ একেবারেই উল্টো। যেমন—চিৎকার করে কান্নার একটি ইমোজি আছে, এটি দিয়ে যেমন তীব্র শোক বোঝানো যায়, তেমনি এটি দিয়ে বাঁধভাঙা আনন্দও বোঝানো যেতে পারে।

আরও পড়ুন>> চিকিৎসায় এআই: আশীর্বাদ না অভিশাপ

ইমোজির ব্যবহার যেভাবে দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে, এর মোক্ষম অর্থ বোঝাটাও জরুরি হয়ে উঠেছে। ইমোজি ব্যবহারে লিঙ্গ পার্থক্য, ইমোজিগুলোর সঙ্গে পরিচিতি, ইমোজি যে আবেগ বোঝায় তা অনুসন্ধান করতে ২০২০ সালে জোন্স এবং তার সহকর্মীরা একটি গবেষণা করেন। 

গবেষণায় ২৯৯ জন কলেজ শিক্ষার্থীর (১৬৩ নারী ও ১৩৬ পুরুষ) ওপর অ্যাপল আইওএসের ৭০ ফেসিয়াল ইমোজির বিষয়ে অনলাইন জরিপ চালানো হয়। শিক্ষার্থীদের প্রত্যেকটি ইমোজি ২ সেকেন্ড ধরে দেখার পর নিম্নোক্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে বলা হয়। ১১ পয়েন্ট স্কেলে তাদের নম্বর দিতে বলা হয়—

*ওপরের ইমোজিটিকে আপনি কতটা ইতিবাচক/নেতিবাচক মনে করেন? 
*ওপরের ইমোজিটি আপনার কাছে কতটা পরিচিত? 

এছাড়া তাদের ছয় পয়েন্ট স্কেলে প্রতিটি ইমোজির সঙ্গে তারা কতটা পরিচিত তাও চিহ্নিত করতে বলা হয়। চারটি ভিন্ন প্রসঙ্গে শিক্ষার্থীরা কতবার ইমোজি পাঠিয়েছেন বা পেয়েছেন তাও জানতে চাওয়া হয়:

*কারও স্মার্টফোনে টেক্সট মেসেজ
*ফেসবুক পোস্ট বা মন্তব্যের মধ্যে
*অন্যান্য স্যোশাল মিডিয়া অ্যাপ্লিকেশন বা এক্স, ইনস্টাগ্রাম এবং স্ন্যাপচ্যাটের মতো সাইটগুলোতে
*ই–মেইল

সবশেষে, শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চাওয়া হয় যে তারা সঙ্গী, বন্ধু, পরিবারের সদস্য, সহকর্মী, অধ্যাপক বা সুপারভাইজারের মতো বিভিন্ন গোষ্ঠীর ব্যক্তির কাছে কতবার ইমোজি পাঠান। 

দেখা গেছে, নারীরা সাধারণত পুরুষদের তুলনায় ইমোজিগুলোকে বেশি নেতিবাচকভাবে দেখেন। নারীরা পুরুষের তুলনায় নেতিবাচক ও নিরপেক্ষ ইমোজিকে বেশি নেতিবাচকভাবে দেখেন। ইতিবাচক ইমোজির ক্ষেত্রে এমন কোনো ধরনের লৈঙ্গিক পার্থক্য ছিল না। এর আগেও অন্যান্য গবেষণায় উঠে এসেছে, নারীরা পুরুষের তুলনায় নেতিবাচক মুখভঙ্গি বেশি নেতিবাচকভাবে দেখেন।

আরও পড়ুন>> চোখই নিয়ন্ত্রণ করবে স্মার্টফোন

ইমোজি পরিচিতির ক্ষেত্রেও নারী ও পুরুষদের মধ্যে বেশ তফাৎ রয়েছে। নারীরা পুরুষের তুলনায় ইতিবাচক ও নেতিবাচক উভয় ইমোজি বেশি চেনে, তবে নিরপেক্ষ ইমোজির ক্ষেত্রে এ পার্থক্য চোখে পড়ে না। 

এছাড়া নারীরা পুরুষের তুলনায় ইমোজি বেশি ব্যবহার করে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। সাধারণত পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে মেসেজে কথা বলার সময় নারীরা বেশি ইমোজি ব্যবহার করে। তবে অধ্যাপক ও সুপারভাইজারদের সঙ্গে যোগাযোগের সময় ইমোজি ব্যবহারের ক্ষেত্রে এমন কোনো ধরনের লৈঙ্গিক পার্থক্য দেখা যায়নি। 

এসব ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষ—উভয়ই তুলনামূলক কম ইমোজি ব্যবহারের চেষ্টা করেন। তেমনি সঙ্গীর সঙ্গে ইমোজি ব্যবহারের ক্ষেত্রেও নারী–পুরুষের তেমন কোনো পার্থক্য দেখা যায় না। এক্ষেত্রে নারী ও পুরুষ—উভয়ই বেশি পরিমাণে ইমোজি ব্যবহার করে। 

গবেষণার ফলাফল বলছে, পুরুষের তুলনায় নারীদের ইমোজি সম্পর্কিত জ্ঞান বেশি। তারা ইমোজি ব্যবহারও করেন বেশি।

আপন দেশ/এসএমএ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

জনপ্রিয়