Apan Desh | আপন দেশ

ম্যারাডোনার মৃত্যু নিয়ে ফের ধোঁয়াশা

ক্রীড়া ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩:০৬, ৫ মে ২০২৪

ম্যারাডোনার মৃত্যু নিয়ে ফের ধোঁয়াশা

ফাইল ছবি

আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি ফুটবলার দিয়াগো ম্যারাডোনা ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর দেশটির রাজধানী বুয়েন্স আয়ার্সে ৬০ বছর বয়সে মারা যান। 

তার মৃত্যুতে শোকাহত হয়ে পড়ে গোটা ফুটবল বিশ্ব। তখন পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, হূদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে মারা যান এই বিশ্বকাপ জয়ী ফুটবলার। যদিও এ কিংবদন্তি ফুটবলারের মৃত্যুর চার বছর পেরিয়ে গেছে, কিন্তু তার মৃত্যু নিয়ে কমেনি ধোঁয়াশা।

২০২১ সালে ম্যারাডোনার পরিবার থেকে দাবি করা হয়, চিকিত্সকদের অবহেলার কারণে মারা যান বিশ্ব কাঁপানো এ ফুটবলার। এরপর এ নিয়ে আদালতে মামলাও করেন তারা। যার জের ধরে ম্যারাডোনার দেখভালের দায়িত্বে থাকা আট জন চিকিত্সক এবং নার্সের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেন আদালত।

এ তালিকায় ছিলেন দুই মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক অগাস্তিনা কোসাশভ ও ডক্টর লিওপোলে্দা লুক। পরে তাদের আইনজীবীদের অনুরোধে আবারো এ কিংবদন্তি ফুটলারের মৃত্যুর কারণ নিয়ে তদন্ত শুরু করেন আদালত। সেই তদন্ত রিপোর্টে উঠে আসে নতুন এক তথ্য।

নতুন তদন্ত রিপোর্টে দেখা যায়, ম্যারাডোনার মৃত্যুর কারণ হূদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ নয়, বরং তার মৃত্যুর অন্যতম কারণ নেশাজাত মাদক ‘কোকেন’র মতো কোনো পদার্থ। এই রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ আগুস্টিনা কোসাচভের আইনজীবী ভাদিম মিসচানচুক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এ রিপোর্টের মধ্য দিয়ে এই মামলাটি নতুন এক মোড় নিয়েছে। মানবদেহে এই মাদকের স্থায়িত্ব সর্বোচ্চ কয়েক দিন থাকে।’ চিকিত্সকদের আইনজীবীর কথা অনুযায়ী মৃত্যুর কিছুক্ষণ আগে কোকেন নেন ম্যারাডোনা। 

যদিও নতুন করে সামনে আসা এ তদন্ত রিপোর্টকে মিথ্যা বলে আখ্যা দিয়েছেন দিয়াগোর মেয়ে জিয়ান্নিনা ম্যারাডোনা। নতুন এ প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়ে অটোপসি রিপোর্টের ফল সামনে এনে দেখিয়েছেন— কিংবদন্তি এ ফুটবলারের মৃত্যুর কারণ ছিল পালমোনারি এডেমা।

এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘২০০৪ সালের ৯ মে থেকে আমার বাবা কোকেন নেয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন। সেটি অটোপসি রিপোর্টেও প্রমাণ হয়েছে। যেদিন বাবা মারা গেলেন, ওইদিন তার হূদযন্ত্র কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল।’ 

আরও পড়ুন <> বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে সন্ধ্যায় মুখোমুখি

ম্যারাডোনার মৃত্যুর দিন নিয়ে তার মেয়ে বলেন, ‘ওই দিন তার কণ্ঠ রোবটের মতো শোনাচ্ছিল। কারণ তার ফুসফুসে কিছু একটা হচ্ছিল। পৃথিবীর সবাই জানে তিনি হার্টের রোগী। তারপরও হার্টের রোগের জন্য কোনো মেডিকেশন দেয়া হয়নি এবং চিকিত্সররা তার ফুসফুসের দিকেও নজর দেয়নি। সবাই ব্যস্ত ছিল রুম পরিষ্কার নিয়ে, অ্যাকাউন্ট খালি করার মতো কাজের দিকে সবার নজর ছিল।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘নিজেদের কাজ ঠিকমতো না করার কারণেই আজ তারা এখানে। এখন তারা নিজেদের জেলে যাওয়া থেকে বাঁচতে নতুন করে এসব করছে। আমি কিছুতেই ভয় পাই না। প্রয়োজনে আমাকে ওদের মেরে ফেলতে হবে। তার আগে আমাকে চুপ করানো যাবে না।’

এদিকে মৃত্যুর পর এক কিংবদিন্ত ফুটবলারকে আর্জেন্টিনার রাজধানী থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিম অঞ্চল সান মিহুয়েল শহরে পারিবারিক কবরস্থানে তার মা-বাবার পাশে তাকে সমাহিত করা হয়েছে।

তবে গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় গণমাধ্যমের সূত্র অনুযায়ী জানা যায়, ম্যারাডোনার কিছু ভক্ত একটি আদালতে আবেদন জানান, বিশ্বকাপ জয়ী ফুটবলারকে তার পূর্বের সমাধিস্থান থেকে আর্জেন্টিনার রাজধানীতে নতুন করে সমাহিত করার জন্য।

আদালতে জমা দেয়া সেই চিঠিতে বলা হয়, ‘ম্যারাডোনার সমাধি বর্তমানের যেখানে আছে। সেখান থেকে নিরাপদ জায়গা রাজধানী একটি কবরস্থান। যাতে বিশ্বের সমস্ত মানুষ এবং আর্জেন্টিনার নাগরিকরা এই সর্বশ্রেষ্ঠ ফুটবলারকে শ্রদ্ধা জানাতে পারেন। তিনি আর্জেন্টিনার জন্য অনুপ্রেরণা।’

আপন দেশ/এমআর

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

জনপ্রিয়