Apan Desh | আপন দেশ

খুলনা-মোংলায় ট্রেন চলাচল শুরু হচ্ছে 

বাগেরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ০৯:৪০, ২ মে ২০২৪

খুলনা-মোংলায় ট্রেন চলাচল শুরু হচ্ছে 

ফাইল ছবি

খুলনা-মোংলা রেলপথে ট্রেন চলাচল অবশেষে শুরু হচ্ছে।ফলে প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ৭৩ বছর পর রেল যোগাযোগে যুক্ত হবে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মোংলা।

বুধবার (১ মে) গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রকল্পের পরিচালক মো. আরিফুজ্জামান ও পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের (পাকশী) বিভাগীয় প্রকৌশলী বীর বল মন্ডল। 

প্রকল্পের পরিচালক মো. আরিফুজ্জামান বলেন, ‘খুলনা-মোংলা রেলপথের বিভিন্ন ধাপের ফিনিশিংয়ের কিছু কাজ বাকি ছিল। সেগুলো সম্পন্ন করা হয়েছে। চূড়ান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষাও শেষ। বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচলের জন্য পথটি উপযোগী করে তোলা হয়েছে। তবে স্থায়ী জনবল নিয়োগের বিষয়টি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আটকে আছে। এজন্য অস্থায়ী জনবল দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরুর জন্য পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের (পাকশী) বিভাগীয় কর্মকর্তাদের কাছে সবকিছু বুঝিয়ে দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি মাসের যেকোনো দিন খুলনা-মোংলা রেলপথে ট্রেন চলাচল শুরু হবে।’

এদিকে, ট্রেন চলাচল শুরুর জন্য মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বিকালে খুলনা থেকে মোংলা রেলপথের চূড়ান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়। রেলওয়ের কর্মকর্তারা রেলপথের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখেন। 

নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘রেলপথের সব কাজ শেষে মঙ্গলবার চূড়ান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে। রেলপথ চালু করতে এখন আমাদের দরকার প্রয়োজনীয় জনবল। এই পথে আটটি স্টেশন ও লাইন ক্লিয়ারিংয়ের জন্য ৫৭৬ জন জনবলের অর্গানোগ্রাম তৈরি করা হয়েছে। সেটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে দেয়া হয়েছে।’

আরও পড়ুন <> এলপি গ্যাসের দাম নির্ধারণ আজ

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের বিভাগীয় প্রকৌশলী বীর বল মন্ডল বলেন, ‘চলতি মাসের যেকোনো দিন ট্রেন চলাচল শুরুর জন্য স্টেশনের আসবাবপত্র, রেলক্রসিংগুলোতে অস্থায়ী জনবল নিযুক্ত, ট্রেনের সময়সূচি, ভাড়া ও অন্যান্য বিষয় চূড়ান্ত করছি আমরা। এসব প্রক্রিয়া শেষ হলেই ট্রেন চলাচল শুরু হবে।’

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রকল্প ২০১০ সালের ২১ ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পায়। প্রকল্পটি তিনটি ভাগে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এর মধ্যে প্যাকেজ-১ রেললাইন নির্মাণ, প্যাকেজ-২ রূপসা নদীর ওপর রেলসেতু ও প্যাকেজ-৩ টেলিযোগাযোগ ও সিগন্যালিং সিস্টেম। এসব প্রকল্পের আওতায় মূল লাইনসহ রেলওয়ে ট্র্যাকের দৈর্ঘ্য ৮৬ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার। তার মধ্যে ৬৪ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেলপথ। আর রূপসা নদীর উপর নির্মাণ করা হয়েছে পাঁচ দশমিক ১৩ কিলোমিটার রেলসেতু।

জমি অধিগ্রহণ, রেললাইন, রেলসেতু নির্মাণসহ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল এক হাজার ৭২১ কোটি টাকা। ২০১৫ সালে সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় তিন হাজার ৮০১ কোটি ৬১ লাখ টাকা। ২০২১ সালে আবারও সময় ও ব্যয় বাড়ে। তখন দাঁড়ায় চার হাজার ২৬০ কোটি ৮৮ লাখ ৫৯ হাজার টাকা। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। সেই মেয়াদ ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত ধরা হয়। রূপসা নদীর উপর পাঁচ দশমিক ১৩ কিলোমিটার সেতু, ফুলতলা থেকে মোংলা পর্যন্ত ৬৪ কিলোমিটার পথ হলেও স্টেশনগুলোর ডাবললাইন হিসাব করে ৯১ কিলোমিটার পথ, নয়টি প্ল্যাটফর্ম এবং ১০৭টি ছোট সেতু ও নয়টি আন্ডারপাস নির্মাণ শেষ হয়েছে। সেইসঙ্গে সিগন্যালিং ও টেলিকমিউনিকেশন কাজও শেষ হয়েছে।

২০২৩ সালের ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভার্চুয়ালি এই রেলপথ উদ্বোধন করেন। এর আগে গত ৩০ অক্টোবর ফুলতলা থেকে মোংলা পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালানো হয়। কিন্তু স্থায়ী জনবল নিয়োগসহ নানা জটিলতায় ট্রেন চালু করা যায়নি। অবশেষে চালুর কথা জানা গেলো।

আপন দেশ/এমআর

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়