হিটস্ট্রোকে ৭ দিনে ১০ মৃত্যু

তীব্র তাপপ্রবাহে হিটস্ট্রোকে গত এক সপ্তাহে সারা দেশে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে আট জন পুরুষ দুইজন নারী। এ ছাড়া নিহত ১০ জনের মধ্যে সোমবার হিটস্ট্রোকে তিনজন মারা যান। তারা তিনজনই পুরুষ। এদিকে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে আরও পাঁচজন দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সকাল ৯টায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম এসব তথ্য জানিয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, হিটস্ট্রোকে নতুন করে মারা যাওয়া তিনজনের মধ্যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে মাদারীপুর জেলায়। আরেকজনের মৃত্যু হয়েছে চট্টগ্রাম জেলায়।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম গত ২২ এপ্রিল থেকে সারা দেশের সরকারি হাসপাতালে হিটস্ট্রোকের রোগীর তথ্য সংগ্রহ করা শুরু করেছে।

মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত সংগৃহীত তথ্যে হিটস্ট্রোকে দশজনের মৃত্যু ও পাঁচজনের হাসপাতালে ভর্তির তথ্য পাওয়া গেছে। মারা যাওয়া ১০ জনের মধ্যে দুজন মাদারীপুরের। এ ছাড়া চুয়াডাঙ্গা, খুলনা, হবিগঞ্জ, রাজবাড়ী, ঝিনাইদহ, লালমনিরহাট, বান্দরবান ও চট্টগ্রাম জেলায় একজন করে মারা গেছেন। তাদের বয়স ৩২ থেকে ৭৯ বছরের মধ্যে। তাদের প্রত্যেকের বাড়ি গ্রামাঞ্চলে।

এ ছাড়া, হিটস্ট্রোকে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া পাঁচজনের দুজন নারী। দুজনের বয়স ৪৫ বছরের বেশি। বাকি তিনজন পুরুষের একজনের বয়স ১২ বছর।

আরও পড়ুন <> সোমবার হিটস্ট্রোকে ৩ জনের মৃত্যু

স্বাস্থ্য অধিফতর বলছে, হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরের তাপমাত্রা অনেক বেশি থাকে (৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা তার বেশি), বমি বমি ভাব থাকে, শ্বাসপ্রশ্বাস দ্রুত হয়, হৃৎস্পন্দন বেড়ে যায়, ঘাম হতেও পারা আবার না–ও পারে, ত্বক গরম ও শুষ্ক অথবা স্যাঁতসেঁতে থাকতে পারে। হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তি সামঞ্জস্যহীন আচরণ করে, তার কথা জড়িয়ে যায়, এমনকি অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে।

জনস্বাস্থ্যবিদেরা ধারণা করছেন, হিটস্ট্রোকে আক্রান্তের সংখ্যা সরকারি হিসাবের চেয়ে বেশি হওয়ার শঙ্কা আছে। প্রথমত, স্বাস্থ্য অধিদফতর এখন শুধু সরকারি হাসপাতালের হিসাব নিচ্ছে, দেশের বিপুলসংখ্যক বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে কোনো রোগী যাচ্ছে কিনা, তা জানা যাচ্ছে না।

দ্বিতীয়ত, রোগীর কোন লক্ষণ দেখে হিটস্ট্রোক শনাক্ত হবে সেই ধারণাও চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীর মধ্যে পরিষ্কার ছিল না। অতিসম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদফতর একটি নির্দেশিকা তৈরি করেছে এবং সেই নির্দেশিকা অনুসরণ করে সরকারি চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, হিটস্ট্রোক ছাড়াও গরমজনিত আরও কিছু সমস্যা হয়। এর মধ্যে আছে: তাপজনিত শ্রান্তি, তাপজনিত সংজ্ঞালোপ, তাপজনিত পেশিসংকোচন, তাপজনিত ফুসকুড়ি। আর হয় তাপজনিত পানিশূন্যতা। প্রচণ্ড তাপ বিশেষ প্রভাব ফেলে অন্তঃসত্ত্বা নারী, শিশু ও প্রবীণদের ওপর। এ ছাড়া যেসব মানুষ দীর্ঘস্থায়ী রোগে ভুগছেন, তাদের ঝুঁকি বাড়ে গরমে।

আপন দেশ/এমআর