Apan Desh | আপন দেশ

সিলেট দোকান কর্মচারি হত্যা মামলায় ২জনের যাবজ্জীবন

সিলেট প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৯:৪৮, ১৬ নভেম্বর ২০২৩

সিলেট দোকান কর্মচারি হত্যা মামলায় ২জনের যাবজ্জীবন

ফাইল ছবি

সিলেট দোকান কর্মচারি সজল বিশ্বাস পটল হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন দু’জনকে যাবজ্জীবন দিয়েছেন আদালত। নিহত যুবক ছিলেন ফেঞ্চুগঞ্জের মুদি দোকানের কর্মচারী। আসামি শাকিল ও সুমনকে বয়স বিবেচনায় যাবজ্জীবন কারাদন্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও এ মামলায় আসামিদের পৃথক ধারায় ৫ বছরের কারাদন্ডেরও আদেশ দেন।
সজল হত্যার ঘটনার পর দিন দোকান মালিক ঋষিকেশ দে বাদি হয়ে ফেঞ্চুগঞ্জ থানায় ৫ আসামির নাম উল্লেখ করে মামলা করেন।

বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল ১১টায় সিলেটের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মশিউর রহমান চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করে। চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলায় মোট ১৯ জন সাক্ষী বিজ্ঞ আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন। রায়ে দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা থানার ভোলারকান্দি গ্রামের মৃত দছির আলীর ছেলে শাকিল (২০) ও মিয়াধন মিয়ার ছেলে সুমন আহমেদ (২২)।  
অপর তিন আসামি হত্যার ঘটনার সময়ে শিশু হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে আদালতে দোষীপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শিশু আদালতে তাদের বিচারিক কার্যক্রম বর্তমানে শুরুর পর্যায়ে রয়েছে।

মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট দেবব্রত চৌধুরী লিটন জানান, আইনের সঙ্গে সংঘাতে জড়িত স্থানীয় তিন শিশু প্রায়ই ঋষিকেশ দে এর মুদি দোকানে আসতো। ২০ বছর ধরে দোকানে কর্মচারী হিসেবে কর্মরত সজল বিশ্বাস পটলের কাছ থেকে শিশুরা বাকিতে জিনিসপত্র নিতো। পূর্বের বাকির টাকা না দিয়ে নতুন করে বাকিতে মালামাল দেয়ার জন্য দোকান কর্মচারী সজলকে তারা চাপাচাপি করতো। এ নিয়ে হত্যাকান্ডের পূর্বে ভিক্টিম সজলের সঙ্গে তাদের মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। এরই জের ধরে গত বছরের ২০ জুলাই রাতে স্থানীয় ৩ শিশুর সঙ্গে ওই এলাকায় বেড়াতে আসা আসামি শাকিল ও সুমনসহ সর্বমোট পাঁচ জন যুক্ত হয়ে দোকানের সামনের কালভার্টে দীর্ঘ সময় অবস্থান করে নিহত সজলকে হত্যার পরিকল্পনা করে। ঘটনার দিন নিহত সজল প্রতিদিনের মতো দোকান মালিকের বাড়ি থেকে রাতের খাবার শেষে দোকানে রাত যাপনের উদ্দেশ্যে ফেরত আসলে দোকানে ঢুঁকে ঘটনায় জড়িত ৫ জনের মধ্যে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ৪ জন ভিক্টিম সজলের গলায় গামছা পেছিয়ে একে অপরের সহায়তায় শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে। এসময় দোকানের বাইরে রাস্তার উপর একজন বাইরে দাঁড়িয়ে থেকে স্থানীয়দের আসা যাওয়ার দিকে লক্ষ্য রাখছিল।

সজল হত্যাকান্ড নিশ্চিত করার পর আসামিরা দোকানের ক্যাশে থাকা নগদ ৩ হাজার ২৩০ টাকা চুরি করে মরদেহ দোকানের মেঝেতে ফেলে রাখে। ঘটনাস্থল থেকে যাওয়ার সময় স্থানীয়রা এদের দেখে ফেলায় তারা দ্রুতই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে ফেঞ্চুগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে স্থানীয়দের সহায় তায় ভোর রাতে ঘিলাছড়া আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকা থেকে শাকিল ও সুমনসহ ৪ জনকে আটক করে। তাৎক্ষণিকই তারা স্থানীয়দের সামনে সজল হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী পরবর্তীতে হত্যাকান্ডে জড়িত অপর এক শিশুকে আটক করে পুলিশ। হত্যাকান্ডে নিজেদের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এক শিশুসহ ৩ জন বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করেন। এই মামলায় মোট ৩১ সাক্ষীর মধ্যে মোট ১৯ জন সাক্ষী আদালতে তাদের সাক্ষ্য প্রদান করেন। সব বিষয় পর্যালোচনা করে এ মামরার রায় প্রদান করা হয়।

আপন দেশ/এবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

জনপ্রিয়