ছবি: আপন দেশ
শহিদ মিনারে ফুল দিতে বাধা দেয়ায় পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) কর্মকর্তাদের দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এক নারী কর্মকর্তার গায়ে হাত তোলেছেন বিপরীতপক্ষ।
বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং ডিরেক্ট রিক্রুটেড অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
সৃষ্ট ঘটনার বিচার চেয়ে ডিরেক্ট রিক্রুটেড অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার বরাবর অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
জানা যায়, বুধবার সকালে প্রভাত ফেরি শেষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ এবং রেজিস্টার ফুল দেন। তারপর এক এক করে বিভিন্ন বিভাগ, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ফুল দেন। সবার শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের সংগঠন পাস্ট ডিরেক্ট রিক্রুটেড অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন ফুল দিতে আসেন। এ সময় কর্মকর্তা পরিষদ নেতারা ডিরেক্ট রিক্রুটেড অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনকে ফুল দিতে বাধা দেন। এক পর্যায়ে দুটি পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। দীর্ঘ সময় ধরে হাতাহাতি ও বাকবিতন্ডার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন।
এর কিছুক্ষণ পর ডিরেক্ট রিক্রুটেড অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা এ ঘটনার বিচার দাবিতে শহিদ মিনার চত্বরে বসে পড়েন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. হাবিবুল্লাহ, প্রক্টর ড. কামাল হোসেন, সহকারী প্রক্টর ড. মাসুদ রানা, ছাত্র উপদেষ্টা দফতরের পরিচালক ড. নাজমুল হোসেন এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দেন। পরে তারা শহিদ মিনারে ফুল দেন।
ডিরেক্ট রিক্রুটেড অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, তারা শহিদ মিনারে ফুল দিতে গেলে কর্মকর্তা পরিষদের সদস্যরা তাদের শহিদ মিনারে উঠতে বাধা দেয়। এক পর্যায়ে কর্মকর্তা পরিষদের সদস্যরা তাদের ফুলের ডালার ব্যানার ছিঁড়ে নেয়। এক নারী কর্মকর্তার গায়ে হাত তোলেন।
তবে, অভিযোগ অস্বীকার করে কর্মকর্তা পরিষদের দাবি, কোনো নারী কর্মকর্তার গায়ে হাত তোলা হয়নি বরং বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তাদের মধ্যে শৃঙ্খলা রক্ষার জন্যই ডিরেক্ট রিক্রুটেড অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনকে ফুল দিতে বাধা দেওয়া হয়েছে।
কর্মকর্তা পরিষদের সভাপতি হারুনুর রশিদ ডন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তাদের একটা সংগঠন থাকবে। সেখানে প্রশাসনের সুযোগ- সুবিধা লাভের জন্য নামমাত্র একটা সংগঠন খোলা হয়েছে। যার কোনো বৈধতা নাই। যেহেতু এই সংগঠনের কোনো বৈধতা নাই, সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে শৃঙ্খলা রক্ষার জন্যই আমরা বাধা দিয়েছি। এই কর্মকর্তাদের ফুল না দেওয়ার বিষয়টি প্রশাসনকে আগেই অবগত করেছি। যদি প্রশাসন আগেই ব্যবস্থা নিতেন, তাহলে আমরা তাদেরকে বাধা দিতাম না।
ডিরেক্ট রিক্রুটেড অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক জিএম শামসাদ ফখরুল বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তাদের যে কোনো সংগঠন খোলার অধিকার আছে। কর্মকর্তা পরিষদ সংগঠনে নানা অনিয়মের কারণে আমরা সেখান থেকে বের হয়ে আসি। আজকে আমরা ফুল দিতে গেলে তারা আমাদের ফুলের ডালার ব্যানার ছিঁড়ে নিয়ে যায় এবং এক নারী কর্মকর্তার গায়ে হাত তোলে। আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। প্রশাসন যদি এর সুষ্ঠু বিচার না করে, তাহলে আমরা শনিবার থেকে লাগাতার কর্মসূচি দেবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কামাল হোসেন বলেন, আমরা কর্মকর্তাদের দুটি সংগঠনকে শান্ত রাখার চেষ্টা করছি। উপাচার্য মহোদয়কে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। আপাতত পরিস্থিতি স্বাভাবিক। আশা করি, আগামীতে দুটি সংগঠন নিজেদের মধ্যে সুন্দর সম্পর্ক বজায় রাখবে।
আপন দেশ/এন/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।