Apan Desh | আপন দেশ

ভোটের ছোঁয়া বাজারে নেই, বাড়ছে পণ্যের দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১১:০৫, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩

আপডেট: ১১:১৭, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩

ভোটের ছোঁয়া বাজারে নেই, বাড়ছে পণ্যের দাম

ফাইল ছবি

আশা ছিল ভোটের আগে সরকার অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট চক্রে লাগাদ দিবে। নিত্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল থাকবে।  কিন্তু তার কোনো লক্ষ দেখা যাচ্ছে না। সিন্ডিকেট আরও বেপরোয়াছে।

পণ্যের সরবরাহ ঠিকঠাক আছে। কিন্তু কারসাজি করে বাড়াচ্ছে দাম। এক সপ্তাহর ব্যবধানে উলটে গেছে সব চিত্র। হঠাৎ কেন আলু ও ডিমের দাম বেড়েছে। কেন? এ প্রশ্নের জবাব নেই ব্যবসায়ীদের কাছে। 

ঢাকার ক্রেতাকে প্রতিকেজি আলু কিনতে হয় ৭৫ টাকায়। সাত দিন আগে ছিল ৬০-৬৫ টাকা। ঢাকার বাইরেও প্রায় একই চিত্র। অন্যদিকে সরবরাহ ঠিক থাকলেও হালিপ্রতি (৪ পিস) ডিমের দাম বেড়েছে ৩-৫ টাকা। পাশাপাশি দেশি পেঁয়াজ বাজারে এলেও ভারত রপ্তানি বন্ধের অজুহাতে পণ্যটি এখনো উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতার সঙ্গে ব্যবসায়ীদের প্রতারণার যেন আর শেষ নেই। 

কাওরান বাজারে পণ্য কিনতে আসা আক্রাম হোসেন বলেন, আলু, ডিমের দাম আবার বাড়ছে। যারা বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখবে তাদের ভূমিকা পর্যাপ্ত নয়। যে কারণে ফের বাড়তি দাম। পাশাপাশি বাজারে নতুন পেঁয়াজ এলেও এখনো বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ১৪০ টাকায়। দেখারও যেন কেউ নেই। সবাই ব্যস্ত নির্বাচন নিয়ে।

আরও পড়ুন <<>>  বেসরকারি শিক্ষকদের জন্য সুখবর

এদিকে পর্যাপ্ত মজুতের পরও দেশে হিমাগার মালিকদের কারসাজিতে গত জুন থেকেই অস্থির আলুর বাজার। সে সময় প্রতিকেজি আলু খুচরা বাজারে সর্বোচ্চ ৫৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়। পরে তদারকি জোরদার করলে কেজি ৩৫ টাকায় নেমে আসে। তবে তদারকি শিথিল করা হলে আগস্ট শেষে ফের বাড়তে থাকে দাম।

যাত্রাবাড়ী খুচরা বিক্রেতা মো. হেলাল বলেন, হিমাগার থেকে ফের আলুর দাম বাড়ানো হচ্ছে। সে কারণে পাইকারি বাজারে দাম বেড়েছে। ফলে বাড়তি দামে কিনে, বাড়তিতেই বিক্রি করতে হচ্ছে। এদিকে নতুন আলু বাজারে এসেছে। কিন্তু হিমাগার পর্যায়ে দাম বাড়ানোর কারণে ক্রেতা এখনো আলু কম দামে কিনতে পারছেন না।

বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবুর মতে, ৩৬-৩৭ টাকায় খুচরা বাজারে আলু বিক্রি সম্ভব। কিন্তু মজুতদারদের কারণে সেটা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন, কোল্ড স্টোরেজে খাবারের আলু যা ছিল তা দিয়ে ডিসেম্বর পুরো মাস চলবে। সেটাই হচ্ছে। সঙ্গে নতুন আলু বাজারে চলে এসেছে।

আরও পড়ুন<<>><<>> সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান আর নেই

কিন্তু কোল্ড স্টোরেজে যারা আলু সংরক্ষণ করছেন, তারা দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন। মাঠ থেকে নিয়ে পরিবহণ খরচ ও কোল্ড স্টোরেজ ভাড়া মিলে এক কেজি আলুর খরচ পড়ে ১৮-২০ টাকা। সংরক্ষণকারীরা ৬-৭ টাকা লাভ করে আলু বিক্রি করলে কোল্ডস্টোরেজ থেকে ২৬-২৭ টাকায় বিক্রি করতে পারত। সেটাই উচিত ছিল। কিন্তু হিমাগারে আলুর কেজি ৩৪-৪০ টাকা। ২৭ টাকার বেশি হওয়া উচিত নয়। আর বিভিন্ন হাত ঘুরে ভোক্তা পর্যায়ে ৩৬ টাকা বেশি হওয়ার কথা নয়। কিন্তু বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়। কারা দাম বাড়াচ্ছে তা সরকারও জানে। ব্যবস্থা নিলে মূল্য কমে আসবে। 

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান যুগান্তরকে বলেন, সবকটি পণ্যের সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। যারা এসব নিয়ন্ত্রণ করবে তারা নির্বিকার। কোনো অপশক্তির কারণে সংস্থাগুলো ব্যবস্থা নিতে পারছে না। এই সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। তা না হলে অসাধুরা ভোক্তাকে ঠকাতেই থাকবে।

বাজার তদারকি সংস্থা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর সূত্র জানায়, পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তদারকি জোরদার করা হয়েছে। প্রতিদিন অধিদফতরের পক্ষ থেকে কর্মকর্তারা অভিযান পরিচালনা করছে। অনিয়ম পেলে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেয়া হচ্ছে। 

আপন দেশ/এবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়