Apan Desh | আপন দেশ

দুধ-ডিম-মাংস দুই ঘণ্টায় শেষ, ক্রেতাদের ক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৬:২৩, ১৬ মার্চ ২০২৪

দুধ-ডিম-মাংস দুই ঘণ্টায় শেষ, ক্রেতাদের ক্ষোভ

ছবি: সংগৃহীত

নিম্নআয়ের মানুষের কথা বিবেচনায় রেখে রাজধানীতে কম মূল্যে দুধ, ডিম ও মাংস বিক্রি হচ্ছে। তবে বিক্রি শুরুর দুই ঘণ্টার মধ্যে শেষ হয়ে যায়। অনেক ক্রেতা প্রাণিসম্পদের কম মূল্যে পাঁচ ধরনের পণ্য কিনতে এসেও খালি হাতে ফিরে গেছেন। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ ক্রেতারা। ফেরত যাওয়া ক্রেতাদের আগামীকাল সকাল ১০টার মধ্যে আসতে বলেছেন অধিদফতরের কর্মচারীরা।

শনিবার (১৬ মার্চ) রাজধানীর মিরপুর-১ নম্বর ও কালশীতে এ ঘটনা ঘটে।

কালশীতে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর ভ্রাম্যমাণ ভ্যানের ক্যাশিয়ার মো. রহিম বলেন, দিন দিন চাহিদা বাড়ছে। আমরা গরু, খাসি, ব্রয়লার, খাসির মাংস, দুধ ও ডিম বিক্রি করছি। প্রতি কেজি গরুর মাংস ৬০০ টাকা, খাসি ৯০০ টাকা কেজি এবং ড্রেস্ড ব্রয়লার মুরগি ২৫০ টাকা কেজি। এছাড়া, দুধ ৮০ টাকা লিটার এবং ডিম ১১০ টাকা ডজন বিক্রি করছি। রোজার আগের দিন থেকে শুরু হয়েছে আমাদের এ কার্যক্রম।

‘রমজান মাসজুড়েই চলবে আমাদের দুধ-ডিম-মাংস বিক্রির কার্যক্রম। শুরুতে সেল কম হলেও এখন ভালো সেল হচ্ছে। শুরুতে দুধ-ডিম-মাংস বিক্রি করতে বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত অপেক্ষা করা লাগতো। কিন্তু এখন দেড় থেকে দুই ঘণ্টার মধ্যেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। আমরা প্রতিদিনের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য আনি।’

কালশীতে এক ক্রেতা প্রাণিসম্পদের এ পণ্য কিনতে এসে খালি হাতে ফিরে গেছেন। তাকে আগামীকাল সকাল ১০টার মধ্যে আসতে বলেছেন প্রাণিসম্পদের কর্মচারীরা।

তিনি বলেন, তাদের (প্রাণিসম্পদ অধিদফতর) পণ্যের দাম যে অনেক বেশি কম বিষয়টি সেরকম নয়। তবে যেহেতু সরকারি সেহেতু পণ্যটা খাঁটি হওয়ার কথা। এজন্যই আমি এর আগে দুইবার ও আজকে গরুর মাংস, ডিম ও দুধ নিতে এসেছিলাম। কিন্তু পেলাম না।

তিনি বলেন, তারা গরুর মাংস বিক্রি করছে ৬০০ টাকা কেজিতে। কিন্তু অনেক ব্যবসায়ী এ দামে গরুর মাংস বিক্রি করেছে। কয়েকদিন আগে তো সাড়ে ৫০০ টাকাও গরুর মাংস কিনেছি। এছাড়া, ব্রয়লার মুরগি ২৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি করেন তারা। কিন্তু বাজারেও এ একই দামে বা আরও কিছু কম দামে বিক্রি করে। বাজারের সঙ্গে তাদের খাসির মাংসের ১৫০-২০০ টাকার কম আছে। ডিম বাজারে আজকে ১১০ টাকা থেকে ১২০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু তারাও ১১০ টাকা ডজন বিক্রি করছে।

কালশীতে ভ্রাম্যমাণ ভ্যানের দায়িত্বপ্রাপ্ত অধিদফতরের উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা কালশীতে শুরু থেকেই দুধ-ডিম-মাংস বিক্রি করছি। প্রতিদিনই চাহিদা বাড়ছে। মিরপুরের অন্যান্য ভ্যানগুলোর চেয়ে কালশীতে চাহিদা বেশি। এজন্য আজকে আমরা এখানে ১০০ কেজি গরুর মাংস, ৫০ কেজি ব্রয়লার, ১০ কেজি খাসির মাংস, ২৪০০ ডিম এবং দুধ ১০০ লিটার বিক্রি করেছি। যেমন গতকাল কালশীতে ১৫০০ ডিম বিক্রি করলেও আজ ২৪০০ বিক্রি করেছি। চাহিদা অনুযায়ী দুধ-ডিম-মাংস আনা হচ্ছে। কারণ বেশি আনলে পঁচে যাওয়ার সম্ভবনা আছে। বাজারের সঙ্গে আমাদের পণ্যের মান ও দামে তফাৎ আছে বিধায় চাহিদা বাড়ছে।

তিনি বলেন, প্রতিদিন সকালে আমাদের পণ্যগুলো বিক্রি করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে বিক্রি না হলে বিকেল পর্যন্ত বিক্রি করতে হয়। সবার আগে গরুর মাংস শেষ হয়। গরুর মাংসের চাহিদা অনেক বেশি। অনেকে বেশি চায় কিন্তু আমরা দেই না। কিন্তু কেউ চাইলে আর যদি বেশি পরিমাণে থাকে তাহলে দুধ ও ডিম একটু বেশি দেয়া হচ্ছে।

ক্রেতাদের অভিযোগের বিষয়ে রফিকুল ইসলাম বলেন, মানুষের সবচেয়ে বড় অভিযোগ হলো- একজন ক্রেতা তিন থেকে চার কেজি গরুর মাংস চায়। কিন্তু আমরা তো দিতে পারি না। কারণ আমাদের উদ্দেশ্য তো ওইটা না। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল নিম্নআয়ের মানুষরা যেন রমজানে স্বল্পমূল্যে দুধ-ডিম-মাংস খেতে পারে। কিন্তু অনেক সময় ধনি মানুষরাও আসছে। কারণ, ধনি-গরিব লাইন দাঁড়ালে আমাদের দিতে হয়। সব অভিযোগ গরুর মাংস নিয়ে। সবাই গরুর মাংস বেশি পরিমাণে চায়। আর কোন পণ্য নিয়ে ক্রেতাদের অভিযোগ নেই।

গত ১০ মার্চ রমজান উপলক্ষ্যে ভ্রাম্যমাণ বাজারে সুলভমূল্যে দুধ, ডিম, মাংস ও মাছ বিপণন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান। প্রথম রমজান থেকে শুরু হয়ে ২৮ রমজান পর্যন্ত দুধ, ডিম ও মাংস বিপণন ব্যবস্থা রাজধানীর ২৫ স্থানে পরিচালিত হবে। এছাড়া, স্থায়ী বাজারসহ আরও পাঁচটি স্থানে মোট ৩০ পয়েন্টে এ বিক্রয় ব্যবস্থা চালু থাকবে।

বিক্রি চলছে যেসব স্থানে

নতুনবাজার (বাড্ডা), কড়াইল বস্তি (বনানী), খামারবাড়ি (ফার্মগেট), আজিমপুর মাতৃসদন (আজিমপুর), গাবতলী, দিয়াবাড়ী (উত্তরা), জাপান গার্ডেন সিটি (মোহাম্মদপুর), ষাটফুট রোড (মিরপুর), খিলগাঁও (রেল ক্রসিংয়ের দক্ষিণে), সচিবালয়ের পাশে (আব্দুল গনি রোড), সেগুনবাগিচা (কাঁচাবাজার), আরামবাগ (মতিঝিল), রামপুরা, কালসী (মিরপুর), যাত্রাবাড়ী (মানিকনগর গলির মুখে), বসিলা (মোহাম্মদপুর), হাজারীবাগ (শিকশন), লুকাস (নাখালপাড়া), আরামবাগ (মতিঝিল), কামরাঙ্গীর চর, মিরপুর-১০, কল্যাণপুর (ঝিলপাড়া), তেজগাঁও, পুরান ঢাকা (বঙ্গবাজার) কাকরাইল। আর স্থায়ী পাঁচটি বাজারগুলো হলো; মিরপুর শাহ আলি বাজার, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, নতুন বাজার (১০০ ফুট), কমলাপুর, কাজি আলাউদ্দিন রোড (আনন্দবাজার)।

আপন দেশ/এসএমএ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়