Apan Desh | আপন দেশ

বিমান বিধ্বস্তে নিহত কে এই প্রিগোজিন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:৪৮, ২৪ আগস্ট ২০২৩

আপডেট: ১২:২৮, ২৪ আগস্ট ২০২৩

বিমান বিধ্বস্তে নিহত কে এই প্রিগোজিন

ফাইল ছবি

রাশিয়ার ভাড়াটে যোদ্ধা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধে তিনি ও তার বাহিনী আড়াল থেকে প্রকাশ্যে আলোচনায় আসেন। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন তিনি। ছিলেন পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র। কিন্তু সময় পরিক্রমায় তিনিই হয়ে উঠেন পুতিনের সবচেয়ে বড় শত্রু।

বুধবার (২৩ আগস্ট) রাশিয়ার তেভের অঞ্চলে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ওয়াগনার প্রধান প্রিগোজিন নিহত হয়েছেন। বিমানটিতে তিনি ছাড়াও আরও নয় জন যাত্রী ছিলেন। এদের মধ্যে তিনজন ছিলেন ক্রু সদস্য। বিমানটি বিধ্বস্ত হয়ে সবাই নিহত হন। রাশিয়ার জরুরি পরিষেবা মন্ত্রণালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। দুর্ঘটনার শিকার প্রাইভেট জেটটি মস্কো থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গে যাচ্ছিল। তেভের অঞ্চলের উত্তর-পশ্চিমের খুজেনকিনো গ্রামের কাছেই এই বিমান দুর্ঘটনা ঘটে।

সেন্ট পিটার্সবুর্গে বেড়ে ওঠা প্রিগোজিনের। ১৯৮০-এর দশকে চুরি ও রাস্তায় ছিনতাইয়ের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে নয় বছর কারাগারে কাটিয়েছেন প্রিগোজিন। নব্বই দশক থেকে ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তার পরিচয়। ক্রেমলিনের বিভিন্ন খাবারের চুক্তি পাওয়ার মাধ্যমে ধনকুবের হয়ে ওঠেন তিনি। একসময় তিনি ‘পুতিনের শেফ’ হিসেবে পরিচিত পান।

২০১৪ সালে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল ডনবাসে রাশিয়াপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের পর প্রিগোজিন একজন নির্মম সেনাপতি হিসেবে আবির্ভুত হন। তিনি গড়ে তুলেন ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপ। এই বাহিনী ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে লড়াই করে। বিশ্বজুড়ে রাশিয়ার স্বার্থের পক্ষে কাজ করেছে।

ওয়াগনার যোদ্ধারা সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, সুদান, লিবিয়া, মোজাম্বিক, ইউক্রেন ও সিরিয়াতে রয়েছে এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে সিএনএন। বেশ কয়েক বছর ধরে তিনি কুখ্যাতি অর্জন করেছেন। বিশেষ করে মানবাধিকার লঙ্ঘন করার ক্ষেত্রে।

২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ শুরুর পর আলোচনায় চলে আসেন প্রিগোজিন। পূর্ব ইউক্রেনের সলেদার শহর দখলের রুশ অভিযানের নেতৃত্বে ছিল ওয়াগনার যোদ্ধারা। এটি বাখমুত থেকে কয়েক মাইল উত্তর-পূর্ব দিকে।

আরও পড়ুন <> রাশিয়ায় বিমান বিধ্বস্ত নিহত ১০

গত কয়েক মাস ধরে প্রিগোজিন রাশিয়ার সেনাবাহিনী, সেনাপ্রধান ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে সমালোচনা করে আসছেন। মে মাসে তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন বাখমুত থেকে তার যোদ্ধাদের প্রত্যাহার করা হবে। এর আগে কয়েক মাস ধরে পর্যাপ্ত গোলাবরুদ না পাওয়ার অভিযোগ করে আসছিলেন তিনি।

সর্বশেষ তীব্র অসন্তোষের প্রকাশ ঘটে ২৩ জুন। বিদ্রোহ করে বসেন প্রিগোজিন। রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বকে উৎখাতের জন্য ইউক্রেন সীমান্ত থেকে মস্কোর দিকে অভিযান শুরু করেন তিনি। পথে কয়েকটি শহর নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেন ওয়াগনার যোদ্ধারা। ওয়াগনারের নিয়ন্ত্রণে যায় গুরুত্বপূর্ণ একটি রুশ সেনাঘাঁটি।

প্রিগোজিনের বিদ্রোহের জেরে পুতিন সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েন। পরবর্তী সময়ে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকসান্দার লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় অভিযান বন্ধের ঘোষণা দেন প্রিগোজিন। সমঝোতায় বলা হয়, প্রিগোজিনসহ ওয়াগনার সেনারা রাশিয়া ছেড়ে বেলারুশে চলে যাবেন।

বিদ্রোহের পর ওয়াগনার সেনারা বেলারুশে চলে যান। তবে ওয়াগনারপ্রধান প্রিগোশিনের অবস্থান নিয়ে জল্পনাকল্পনা রয়ে যায়। সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়, তিনি বেলারুশে আছেন। এমনকি তার রাশিয়া সফর এবং পুতিনের সঙ্গে দেখা করার খবরও জানা যায়। কিন্তু কখনোই প্রকাশ্যে আসেননি তিনি।

আপন দেশ/আরএ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়