ইউক্রেন থেকে রোববার খাদ্য শস্য নিয়ে ছেড়ে গেছে শেষ জাহাজটি
কৃষ্ণসাগর দিয়ে ইউক্রেনের শস্য রফতানির জন্য একটি বিশেষ চুক্তি করেছিল রাশিয়া। তখন মধ্যস্থাকারী ছিল জাতিসংঘ ও তুরস্ক। সেই চুক্তির মেয়াদও বাড়ানো হয়েছিল কয়েক দফা। এবার বেঁকে বসেছে রাশিয়া। সাফ জানিয়ে দিয়েছে তাদের দাবি না মানলে আর এই চুক্তি নবায়ন করবে না। এদিকে রাশিয়া খাদ্য শস্য চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার ফলে বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট আরও তীব্র হবে।
এদিকে রাশিয়া খাদ্য শস্য চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার ফলে খাদ্য সংকট আরও তীব্র হবে। ফলে কোটি কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ। কারণ এই শস্য চুক্তির আওতায় ইউক্রেন কৃষ্ণসাগর দিয়ে খাদ্যপণ্য রফতানি করে থাকে।
এদিকে রাশিয়ার এমন সিদ্ধান্তে দুঃখ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। তিনি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, শস্য চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন পুতিন। তবে এ ব্যাপারে জাতিসংঘের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
অপরদিকে হোয়াইট হাউজের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মুখপাত্র অ্যাডাম হজ এক বিবৃতিতে বলেছেন, আমরা রাশিয়া সরকারকে অবিলম্বে তার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার জন্য অনুরোধ করছি।
>>> আরও পড়ুন: ক্রিমিয়া সেতুতে আবারও বড় বিস্ফোরণ, নিহত ২
আর জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস বলেছেন, শস্য চুক্তির মেয়াদ না বাড়ানোর রুশ সিদ্ধান্ত বিশ্বের জন্য একটি খারাপ বার্তা।
এর আগে স্থানীয় সময় রোববার (১৬ জুলাই) তুরস্কের পতাকাবাহী শস্য বোঝাই জাহাজ টিকিউ সামসুন ওডেসার কৃষ্ণসাগর বন্দর থেকে ছেড়ে যায়। ধারনা করা হচ্ছে, চুক্তি নবায়ন না হলে এটিই হবে শস্য চুক্তির আওতায় ইউক্রেন ছেড়ে যাওয়া শেষ জাহাজ।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আরআইএর জানিয়েছে, কৃষ্ণসাগর হয়ে নিরাপদে ইউক্রেনের শস্য রফতানির জন্য রাশিয়ার সঙ্গে দেশটির চুক্তিটি আর নবায়ন হবে না। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা আনুষ্ঠানিকভাবে তুরস্ক, ইউক্রেন ও জাতিসংঘকে তা জানিয়ে দিয়েছেন।
ওই খবরের পর ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, ইউক্রেন শস্যচুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগেই ‘কার্যত এটি শেষ হয়ে গেছে’।
তিনি বলেন, শস্যচুক্তি স্থগিত করা হয়েছে। যখনই শর্তগুলো পূরণ হবে, তাৎক্ষণিক রাশিয়া চুক্তিতে ফিরে আসবে।
যদিও গত শুক্রবার (১৪ জুলাই) পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলার পর তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেছিলেন, শস্যচুক্তির মেয়াদ বাড়ার সম্ভাবনার বিষয়ে তিনি আশাবাদী। এই বিষয়ে পুতিন ও তার মনোভাব একই।
প্রসঙ্গত গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেণে হামলা শুরু করে রাশিয়া। এরপর কৃষ্ণসাগর দিয়ে ইউক্রেনের শস্য রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বিশ্বজুড়ে দেখা দেয় খাদ্য সংকট। বেড়ে যায় দাম। বিশেষ করে দরিদ্রদেশগুলোতে।
পরে জতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় দেশ দুটির মধ্যে সমঝোতা চুক্তি হয়। এর আওতায় কৃষ্ণসাগর দিয়ে এতদিন শস্য রপ্তানি করে আসছে ইউক্রেন। ওই শস্য চুক্তির অধীনে ৩ কোটি ২০ লাখ মেট্রিক টন ভুট্টা, গম ও অন্যান্য শস্য ইউক্রেন রপ্তানি করেছে।
গত বছর ওই চুক্তির পর বেশ কয়েকবার নবায়ন করা হয়। চুক্তির সবশেষ মেয়াদ ছিল সোমবার (১৭ জুলাই) বিকেল পর্যন্ত। কিন্তু বেশ কিছু কারণ উল্লেখ করে রাশিয়া চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
আপন দেশ/এমএমজেড
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।