Apan Desh | আপন দেশ

বাংলাদেশে বহিরাগত হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করে চীন: শি

আপন দেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২:২৭, ২৪ আগস্ট ২০২৩

বাংলাদেশে বহিরাগত হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করে চীন: শি

ছবি: সংগৃহীত

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছেন, বাংলাদেশে বহিরাগত হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করে চীন। আমরা বাংলাদেশকে সমর্থন করি যেন দেশটি উন্নয়ন ও পুনরুজ্জীবন অর্জন করতে পারে। একইসঙ্গে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় বাংলাদেশকে সমর্থন করে বেইজিং। 

দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে ১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে বুধবার (২৩ আগস্ট) বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়। জোহানেসবার্গের হোটেল হিলটন স্যান্ডটনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এসব কথা বলেন শি জিনপিং। 

বৈঠকে ঢাকা ও বেইজিংয়ের মধ্যে উচ্চমানের বেল্ট অ্যান্ড রোড সহযোগিতা জোরদারের আহ্বান জানান চীনা প্রেসিডেন্ট। একইসঙ্গে তিনি বাংলাদেশ-চীনের মধ্যকার অর্থনৈতিক পরিপূরকতাকে পূর্ণ রূপ দেয়ার আহ্বান জানান।

অবকাঠামো, তথ্যপ্রযুক্তি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, কৃষিসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াতে উভয় পক্ষের প্রতি বৈঠকে আহ্বান জানান চীনা প্রেসিডেন্ট।

শি বলেন, চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে ঐতিহ্যগত বন্ধুত্ব রয়েছে। উভয়পক্ষ ২০১৬ সালে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারত্বে উন্নীত করেছে। বিষয়টি দুই দেশের সহযোগিতাকে আরও গভীর করার দিকটিকেই নির্দেশ করে।

বর্তমানে চীন ও বাংলাদেশ উভয়ে নিজস্ব উন্নয়ন ও নবশক্তি সঞ্চারের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে। চীনা পক্ষ বাংলাদেশের সঙ্গে উন্নয়ন কৌশলের সমন্বয় জোরদারে আগ্রহী। তারা বাংলাদেশের সঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাস্তবিক সহযোগিতাকে আরও গভীর করতে চাইছে। বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারত্বকে একটি নতুন স্তরে নিয়ে যেতে চায় চীন। উভয় দেশের জনগণ যেন আরও বেশি উপকৃত হয়, তেমনটিই চাওয়া চীনের।

আরও পড়ুন <> বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে চীন হস্তক্ষেপ করবে না: রাষ্ট্রদূত

চীনা প্রেসিডেন্ট বলেন, নিজ নিজ মূল স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে একে অপরকে দৃঢ়ভাবে সমর্থনের জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যেতে চায় বেইজিং। দুই পক্ষের উচিত কৌশলগত যোগাযোগ জোরালো করা। বিভিন্ন বিভাগ ও স্তরের মধ্যে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ-বিনিময় জোরদার করা।

একইসঙ্গে ব্যক্তি পর্যায়ে যোগাযোগ বাড়ানোর আহ্বান জানান শি জিনপিং। উভয় দেশের সংস্কৃতির পাশাপাশি জনগণের মধ্যে বন্ধন গভীর করার আহ্বান জানান তিনি।

নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে (ব্রিকস ব্যাংক) বাংলাদেশ যোগ দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান চীনা প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে বহুপক্ষীয় বিষয়ে সমন্বয় ও সহযোগিতা জোরদার করতে চায় চীন। আন্তর্জাতিক সমতা ও ন্যায়বিচারের পাশাপাশি উন্নয়নশীল দেশগুলোর স্বার্থ রক্ষায় চীন আগ্রহী।

বৈঠকে শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, ২০১৬ সালে শি জিনপিংয়ের বাংলাদেশ সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক।

চীনের প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, করোনা মহামারির বিরুদ্ধে বাংলাদেশের লড়াইসহ তার দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে চীন ঢাকাকে অমূল্য সহায়তা দিয়েছে। এ সহযোগিতা বাংলাদেশের উন্নয়নসহ বাংলাদেশের মানুষের জীবনযাত্রার উন্নতিতে সাহায্য করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ-চীনের সুসম্পর্ক পারস্পরিক শ্রদ্ধা, পরস্পরের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে।

চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের ১০তম বার্ষিকীতে শি জিনপিংকে অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ বাংলাদেশের জন্য উন্নয়নের একটি নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে ‘এক চীন নীতি’ মেনে চলে। আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা বাড়াতে চীনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করে বাংলাদেশ। চীনের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করতে বাংলাদেশ প্রস্তুত। এ ছাড়া ব্রিকসের মতো বহুপক্ষীয় ব্যবস্থায় সহযোগিতা জোরদার করতেও প্রস্তুত রয়েছে বাংলাদেশ। ব্রিকসের কার্যপদ্ধতি উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য নতুন উন্নয়নের সুযোগ নিয়ে আসবে বলে বিশ্বাস করে বাংলাদেশ। সূত্র : সিনহুয়া, জোহানেসবার্গ

আপন দেশ/আরএ

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়