Apan Desh | আপন দেশ

তিতাস আবাসিক গ্যাসের দাম বাড়াতে চায়

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১১:৫৩, ১৬ মে ২০২৩

আপডেট: ১৭:০৯, ১৬ মে ২০২৩

তিতাস আবাসিক গ্যাসের দাম বাড়াতে চায়

ছবি : আপন দেশ

গ্যাস সংকটের মধ্যেই আবাসিক খাতে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে তিতাস কর্তৃপক্ষ। এতে এক চুলার বিল এক হাজার ৩৭৯ টাকা এবং দুই চুলার (ডাবল বার্নার) এক হাজার ৫৯১ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। 

তিতাস গত ২ মে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব পাঠিয়েছে। গত বছর মে মাসে আবাসিকে সর্বশেষ গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়। তখন বিইআরসি সিঙ্গেল বার্নারে মাসে ৫৫ ঘনমিটার এবং ডাবল বার্নারে ৬০ ইউনিট গ্যাস ব্যবহৃত হয় এমনটি ধরে মাসিক বিল হিসাব করে। আদেশের আগে যা ছিল যথাক্রমে ৭৩ দশমিক ৪১ ও ৭৭ দশমিক ৩৮ ঘনমিটার।

তিতাস প্রস্তাবনায় উল্লেখ করে, ‘কম-বেশি ২৫ লাখ গ্রাহকের বিপরীতে কোনো সমীক্ষা-তথ্য বিশ্লেষণ ব্যতিরেকে বিইআরসি এক চুলার ক্ষেত্রে  ৫৫ ঘনমিটার ও দুই চুলার ক্ষেত্রে ৬০ ঘনমিটার গ্যাস ব্যবহার নির্ধারণ করায় সিস্টেম লস বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে একটি লাভজনক সরকারি প্রতিষ্ঠান আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।’

মিটারবিহীন আবাসিক গ্রাহকদের এক চুলার ও দুই চুলার বিপরীতে মাসিক গ্যাস ব্যবহার যথাক্রমে ৭৬ দশমিক ৬৫ ও ৮৮ দশমিক ৪৪ ঘনমিটার পুনর্নির্ধারণের আবেদন করে তিতাস। এ আবেদন অনুসারে প্রতি ঘনমিটার ১৮ টাকা করে প্রস্তাবিত দাম, আসে। প্রস্তাবনার পক্ষে তিতাস যুক্তি দিয়েছে, মিটারবিহীন আবাসিক গ্যাস ব্যবহারকারীরা বিইআরসি নির্ধারিত সীমার চেয়ে অতিরিক্ত গ্যাস ব্যবহার করেন।

বর্তমানে রান্নার গ্যাসের জন্য দুই চুলার (ডাবল বার্নার) মাসিক বিল এক হাজার ৮০ টাকা এবং এক চুলার মাসিক বিল ৯৯০ টাকা করা হয়েছে। সবশেষ ২০২২ সালের ৫ জুন গ্যাসের দাম বাড়ানোর সময় নতুন এ বিল নির্ধারণ করা হয়। আগে যা ছিল যথাক্রমে ৯৭৫ ও ৯২৫ টাকা। এরপর চলতি বছর ১৮ জানুয়ারি সরকারের নির্বাহী আদেশে শিল্প, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বাণিজ্যিক খাতে আবার গ্যাসের দাম বাড়ানো হলেও বাসাবাড়িতে বাড়ানো হয়নি। তখন প্রতি ইউনিটে সর্বোচ্চ ১৯ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হয়।

বর্তমানে তিতাসের বিতরণ এলাকায় ২৮ লাখ ৫৭ হাজার বৈধ আবাসিক গ্রাহক রয়েছে। এর মধ্যে ২৫ লাখ ২৫ হাজার নন মিটার আবাসিক গ্রাহক এবং তিন লাখ ৩২ হাজার প্রি-পেইড মিটারভিত্তিক আবাসিক গ্রাহক। এর মধ্যে এক লাখ ৫৫ হাজার একমুখী চুলা বা সিঙ্গেল বার্নার এবং ২৩ লাখ সাত হাজার দ্বিমুখী বা ডাবল বার্নার চুলার গ্রাহক রয়েছেন।

ইতোমধ্যে যারা প্রি-পেইড মিটার পাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন তাদের মাসিক খরচ গড়ে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে নেমে এসেছে বলে ভোক্তাদের মধ্যে আলোচনা আছে।

সর্বশেষ ২০২২ সালের জুনের নির্ধারিত মূল্যহার অনুযায়ী, আবাসিক গ্রাহকদের জন্য প্রতি ইউনিট ১৮ টাকা হারে দাম ঠিক করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সিঙ্গেল বার্নারের জন্য ৫৫ ঘনমিটার এবং ডাবল বার্নারের জন্য ৬০ ঘনমিটার গ্যাস বিবেচনায় নেয়া হয়েছে।

তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হারুনুর রশীদ মোল্লাহ বলেন, আমরা শুধু গ্যাস বিতরণ করি আর ১৩ পয়সা হারে মার্জিন পাই। তিনি বলেন, যারা প্রিপেইড মিটার ব্যবহার করে না তারা আনলিমিটেড গ্যাস ব্যবহার করে, বেশি পরিমাণ গ্যাস ইউজ করে। বিইআরসি প্রি পেইড মিটারে গ্যাসের ব্যবহার বিবেচনায় নিয়ে সিঙ্গেল বার্নারের জন্য ৫৫ ঘনমিটার আর ডাবল বার্নারের জন্য ৬০ ঘনমিটার বরাদ্দ করেছে।

হারুনুর রশীদ মোল্লাহ বলেন, কিন্তু বিষয় হচ্ছে মানুষের জন্য প্রি-পেইড মিটার থাকে তখন তারা কনসাসলি অনেক কম গ্যাস ব্যবহার করে। মিটার যখন থাকে না তখন আনলিমিটেড গ্যাস ব্যবহার করে। আমরা এটি বলার চেষ্টা করেছি। এ বিষয়ে তিতাসের নিজস্ব অনুসন্ধান ও জরিপের তথ্য বিইআরসিকে দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

তিতাসের আবেদন পাওয়ার কথা জানিয়ে বিইআরসি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল আমিন বলেন, ‘সেটি এখনো তালিকভুক্ত করা হয়নি। কালকের মধ্যে সেটি তালিকাভুক্ত হবে। তারপর এবিষয়ে মন্তব্য করা যাবে।’

ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, হাজার হাজার ছিদ্রে জরাজীর্ণ পাইপলাইন, সাবস্ট্যান্ডার্ড বিতরণ সিস্টেম দিয়ে তারা গ্যাস সরবরাহ করে যাচ্ছে। এটিকে সরবরাহ সিস্টেম না বলে ভোক্তাদের জন্য মৃত্যুফাঁদ বলাই ভালো। রক্ষণাবেক্ষণে চরম বিপর্যয়ের কারণে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে তাদের এমন আবদার আমি রীতিমতো দুঃসাহস মনে করি। বিস্মিত না হয়ে পারছি না।

তিনি বলেন, তাদের ওখানে নানা ধরনের দুর্নীতি, অপচয় ও তছরুফ হচ্ছে। সেগুলো প্রতিরোধের জন্য তাদের সক্ষমতা না হওয়া পর্যন্ত তাদের সব ধরনের সিস্টেম লস বেনিফিট (দুই শতাংশ), বিনিয়োগকৃত মূলধনের ওপর ১০ শতাংশ মুনাফা, ব্যয় অপেক্ষা আয় বেশি হওয়া সত্বেও তাদের ১৩ পয়সা করে বিতরণ চার্জ দেয়া হয়। এগুলো আমরা স্থগিত রাখতে বলেছি।

বিইআরসি এখন প্রতি চুলার জন্য যে টাকা নিচ্ছে সে পরিমাণ গ্যাসও দিতে পারছে না অভিযোগ করে তিনি বলেন, বিইআরসির কাছে এর প্রমাণ আছে। তারা ৪০ ঘনমিটার বিবেচনায় নিতে চেয়েছিল। এমন পরিস্থিতিতে আবার বরাদ্দ বাড়ানোর প্রস্তাবটি যুক্তি সঙ্গত নয়।

আপন দেশ/আরএ

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

শীর্ষ সংবাদ:

ভ্যাট বসলে মেট্রোরেলের সুনাম নষ্ট হবে: ওবায়দুল কাদের বান্দরবানের রুমায় সেনাবাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে তিনজন কেএনএ সদস্য নিহত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তরুণদের উদ্যোক্তা হতে বললেন গুরুত্বপূর্ণ সফরে ঢাকায় আসছেন অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং রাজধানীর আগারগাঁও ও মিরপুর ১০ নম্বরে অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, মেট্রো স্টেশনের প্রবেশপথে তালা পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী ঢাকাসহ ১০ অঞ্চলের উপর দিয়ে ৬০ কিমি বেগে বজ্রবৃষ্টির শঙ্কা জো বাইডেনের ‘ড্রাগ টেস্ট’ করতে বললেন ডোনাল্ড ট্রাম্প লিওনেল মেসির ইন্টার মায়ামি হারাল ডিসি ইউনাইটেডকে