Apan Desh | আপন দেশ

৫২ বছর ধরে ৯ গ্রামের নারীরা ভোট দেন না

চাঁদপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১১:২০, ৪ জানুয়ারি ২০২৪

আপডেট: ১১:২৪, ৪ জানুয়ারি ২০২৪

৫২ বছর ধরে ৯ গ্রামের নারীরা ভোট দেন না

ফাইল ছবি

উল্টোরথে চলছে ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৯ গ্রামের নারীরা।  কুসংস্কারের তোপে তারা অর্ধ শতাব্দী ধরে ভোট দিচ্ছেন না। এখানকার অনেক নারী মনে করেন, তাদের ভোট দেয়ার অধিকার নেই। তবে এখানকার নারীরা পুরুষের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কৃষি আবাদ থেকে শুরু করে হাট-বাজার, অফিস-আদালত, ব্যাংক-বীমা সব ক্ষেত্রেই অবদান রাখছেন। শিক্ষার হারেও পিছিয়ে নেই। শুধু ভোটেই বিপত্তি।

জানা গেছে, চাঁদপুরের সাহেবগঞ্জ, গৃদকালিন্দিয়া ও চরমান্দারি গ্রামসহ ৯ গ্রামের নারীরা ভোট দেননি গত ৫২ বছর ধরে। প্রতিবার নির্বাচনের সময় স্থানীয় প্রশাসন বহু চেষ্টা করলেও তাদের ভোটকেন্দ্রে নিতে পারছে না। তবে ভোট দিতে আগ্রহী তরুণ ভোটাররা। গত ইউপি নির্বাচনে দুই-একজন নারী ভোট দিয়েছিলেন। 

নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর ভারতের জৈনপুর থেকে আসা এক পীর খানকা স্থাপন করেন ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১৬ নম্বর রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নে। ওই সময় এলাকাটিতে মহামারি কলেরা ছড়িয়ে পড়েছিল। ওই সময় চলছিল স্থানীয় নির্বাচন। জৈনপুরের পীর তখন ফতোয়া দেন নারীরা যেন ‘বেপর্দা’ অবস্থায় ঘর থেকে বের না হন। এরপর থেকে কুসংস্কার গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে। ভোটদানে ধর্মে বিধিনিষেধ না থাকলেও বিরত থাকছেন ৯টি গ্রামের নারী। এরই মধ্যে কেটে গেছে প্রায় ৫২ বছর। এখনও ভোট না দেয়ার ধারায় রয়েছেন তারা। শুধু তাই নয়, মুসলিম নারীদের উদ্দেশে পীর ওই ফতোয়া দিলেও ইউনিয়নের হিন্দু-খ্রিষ্টান নারীরাও ভোটদান থেকে বিরত রয়েছেন।

এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তোফায়েল হোসেন জানান, ওই উপজেলার ৯ গ্রামের নারী ভোটারদের ভোটদানে উৎসাহিত করতে সচেতনতামূলক সভা-সমাবেশ করা হয়েছে। সভায় কয়েকশ নারী ভোটার উপস্থিত ছিলেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে তাদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। তারা আশ্বস্ত করেছেন, এবার ভোট দিবেন। এছাড়া এবার নারীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য ওই এলাকার জনপ্রতিনিধি ও যারা নারীদের নিয়ে কাজ করেন, তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, এবার নারীরা ভোট দিতে কেন্দ্রে আসবেন।

জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা কামরুল হাসান এ প্রতিবেদককে বলেন, সচেতনতামূলক সভার মাধ্যমে ওই ইউনিয়নের নারীদের বুঝিয়েছি। দেশের অগ্রযাত্রা এগিয়ে নেয়ার জন্য নারীদের অংশগ্রহণ দরকার। সরকার গঠন প্রক্রিয়ায় তাদের অংশগ্রহণ জরুরি। এসব বিষয় তাদের বোঝানো হয়েছে। সভায় যারা এসেছিলেন তারা সবাই হাত তুলে আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, এবার ভোট দিতে কেন্দ্রে যাবেন তারা।

আপন দেশ/এবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়