Apan Desh | আপন দেশ

কর্তাদের ম্যানেজ করে 

ঘাটাইলে বনের জমিতে স্থাপনা নির্মাণ

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি 

প্রকাশিত: ১২:০১, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

আপডেট: ১২:০২, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

ঘাটাইলে বনের জমিতে স্থাপনা নির্মাণ

ছবি : আপন দেশ

টাঙ্গাইলের ঘাটাইল বনবিভাগের ধলাপাড়া রেঞ্জের বিভিন্ন বিটে ফরেস্টের জায়গায় চলছে ঘর-বাড়ি নির্মাণের মহোৎসব। স্থানীয়রা বলছেন, বনকর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে প্রকাশ্যে তোলা হচ্ছে এসব স্থাপনা।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঘাটাইলের ঝড়কা বিটের ৩০০ গজ পশ্চিম-দক্ষিণে  আব্দুল আজিজ ওরফে কাশু নামের জনৈক ব্যক্তি দালান নির্মাণ করছেন। স্থানীয়দের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারা মুখ খুলতে রাজি হননি।

কারণ হিসেবে জানা যায়, কোনো কথা বললেই বনকর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যাবে।আর এর জন্য খেসারত বনবিভাগের মিথ্যা মামলায় হয়রানি। এমনকি বিনা কারণে হাজতবাস। বনের মামলায় বন সংশ্লিষ্টদের ছাড়া আর কারো সাক্ষীর দরকার পড়ে না। আর বনকর্মকর্তাদের এ মিথ্য মামলায় জড়িয়ে কামালপুর এলাকার নিরীহ এক নারী চা বিক্রেতাকে হাজত খাটতে হয়েছে। এভাবে ঘাটাইলের ছয়টি বিটে শত শত মানুষ বনের মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঝড়কা এলাকার একাধিক ব্যাক্তি জানান, বর্তমান রেঞ্জকর্মকর্তা ওয়াদুদুর রহমান সাত-আট বছর আগে এই ঝড়কা বিটের বিট অফিসার ছিলেন। ওই সময় তাকে ম্যানেজ করে এখানে শতশত লোক ঘর উঠিয়ে বসবাস করছেন।

বনের জায়গায় কীভাবে ঘর উঠাচ্ছেন জানতে চাইলে আব্দুল আজিজ ওরফে কাশু বলেন, এ জমিটি অনেক আগে থেকেই আমার দখলে রয়েছে। আমি এখন ঘর উঠাচ্ছি।এ কথা বলেই তিনি দ্রুত চলে গিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তির মাধ্যমে সাংবাদিকদের ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন। 

কাশু নামের ব্যক্তির ঘর তোলার অভিযোগ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত রেঞ্জার ওয়াদুদুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি ঝড়কা বিট অফিসারকে বলে দিয়েছি খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঝড়কা বিট অফিসার হেলাল উদ্দিন কোনো পদক্ষেপ নেননি।

আরও পড়ুন <> বিআরটিএ থেকে গায়েব ৯৫০ গাড়ির নথি

এদিকে দুই মাস আগে বটতলি বিটের আমতলি নামক স্থানে রাস্তার মোড়ে ছামাদ নামে এক ব্যক্তি বনের জায়গায় ঘর তোলেন। অথচ ওই জায়গায় সুর্য্য মিয়া নামে এক ব্যক্তি ঘর উঠালে তা ভেঙে দেন বিট কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন। অভিযোগ রয়েছে তার একদিন পরেই বিট কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে ছামাদ নামে এক ব্যক্তি রাতের আধারে ঘর তোলে জায়গার দখল নিয়েছেন। 

এ বিষয়ে বটতলি বিট কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য একাধিকবার তার অফিসে যাওয়া হয়; কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি। গত শনিবার বেলা ২টার দিকে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে (০১৭১৬৪৩৭০৬৬) কল করলে রিং বাজলেও তিনি ধরেননি।

স্থানীয়রা বলছেন, পাহাড় ও বন খেকো ফরেস্টার ওয়াদুদুর রহমানের বিরুদ্ধে আনীত এলাকাবাসির অভিযোগের বিষয়ে দুর্নীতি-দমন কমিশন কিংবা বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে তদন্ত করলে কেচো খুড়তে সাপ বেরিয়ে আসবে। 

টাঙ্গাইলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সাজ্জাদুর রহমান বলেন, বনবিভাগের জমি দখল হয়ে যাচ্ছে এটি নিয়মিত প্রক্রিয়া। আমরা নিয়মিত মামলা দিচ্ছি। আবার বিভিন্ন তদবির অঅসে মামলা না দিতে। আমি যতটুকু জানি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

টাঙ্গাইল বনবিভাগের জরিপ অনুযায়ী, ঘাটাইল উপজেলায় বনভূমির পরিমাণ ২৫ হাজার ৭৮৫ একর। এর মধ্যে দখল হয়ে গেছে প্রায় এক হাজার ৯০০ একর বনভূমি। যেখানে দখলদারের সংখ্যা পাঁচ হাজার ৪২১ জন।

অথচ, ১৯২৭ সালের সংশোধিত বন আইন এবং ২০১২ সালের বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ আইনে সংরক্ষিত বনে কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ বা পরিচালনা না করার নির্দেশ রয়েছে।

আপন দেশ/প্রতিনিধি/এমআর

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

শীর্ষ সংবাদ:

বন্দুকধারীর গুলিতে আহত স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো বাংলাদেশ প্রসঙ্গে অবস্থান পরিবর্তন করেনি পশ্চিমা বিশ্ব: ফখরুল অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী করোনায় আক্রান্ত সার আত্মসাৎ মামলায় সাবেক এমপি পোটনসহ পাঁচজন কারাগারে মৃত্যুদণ্ড চূড়ান্তের আগে কনডেম সেলে নয়: হাইকোর্টের রায় স্থগিত বিএনপি সরকার কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয়: প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজারে আরসার আস্তানায় র‌্যাবের অভিযান, গ্রেনেড ও রকেট শেলসহ গ্রেফতার ২ নোবেলজয়ী এলিস মুনরো মারা গেছেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তাপপ্রবাহের মধ্যে বৃষ্টির আভাস রাবি ছাত্রলীগের চার নেতা বহিষ্কার শিল্পী সমিতির নির্বাচন বাতিল চেয়ে নিপুণ আক্তারের রিট ইসরায়েলের সেনা ঘাঁটিতে ভয়াবহ আগুন