Apan Desh | আপন দেশ

দেশের অর্থনীতিতে স্পষ্ট ৭ বিপদ সংকেত

আপন দেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:৩৫, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

আপডেট: ১০:৩৮, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

দেশের অর্থনীতিতে স্পষ্ট ৭ বিপদ সংকেত

প্রতীকী ছবি

দেশের অর্থনীতি ক্রমশ নাজুক ঋণনির্ভর এবং সংকটজনক অবস্থায় যাচ্ছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনও আশার আলো দেখা যায়নি। অর্থনৈতিক সমস্যা মোকাবেলা করাই এখন সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় রকম চ্যালেঞ্জ।

সরকারের পক্ষ থেকেও অর্থনৈতিক সংকটের কথা অস্বীকার করা হচ্ছে না। বরং অর্থনীতিতে সাতটি বিপদ সংকেতকে সরকারের পক্ষ থেকে চিহ্নিত করা হয়েছে। আর এ বিপদ থেকে উদ্ধারের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় কাজ করছে। আগামী বাজেটে তার প্রতিফলন দেখা যাবে বলেও সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।

অর্থনীতির যে সাতটি বিপদ সংকেত সুস্পষ্টভাবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে তা হলো-

ব্যাংকিং খাতে অনিয়ম: ব্যাংকিং খাতে একটি বিশৃঙ্খল অবস্থা তৈরি হচ্ছে। জনআস্থার সংকট তৈরি হয়েছে ব্যাংকিং খাতে। বিশেষ করে ব্যাংক একীভূত করার কৌশলটি নিয়ে বিভিন্ন রকমের প্রশ্ন উঠেছে। ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে সেটি নিয়ে কথা উঠছে। খেলাপিদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের তাগিদ দেয়া হচ্ছে। ব্যাংকিং খাতের এ নাজুক পরিস্থিতি অর্থনীতির জন্য বড় ধরনের বিপদের কারণ হতে পারে বলেই অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

ঋণ নির্ভরতা বাড়ছে: বাংলাদেশের ঋণ নির্ভরতা বাড়ছে‌। সুদ এবং ঋণের দায় মেটানোর জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। যার ফলে সামনের দিনগুলোতে বৈদেশিক রিজার্ভের ওপর বড় ধরনের চাপ বাড়বে। এখনই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের চেয়ে নিচে নেমে গেছে। রিজার্ভ বাড়ানোর কোনও উদ্যোগই এখন পর্যন্ত সফল হচ্ছে না। 

সামনের দিনগুলোতে ঋণ এবং সুদ মেটাতে সরকারকে হিমশিম খেতে হবে বলেও কোনও কোনও অর্থনীতিবিদ মনে করছেন। অর্থনীতিতে এ বিদেশি ঋণ পরিশোধ এখন সরকারের জন্য একটি বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকেও বলা হচ্ছে যে, সামনের দিনগুলোতে ঋণের দায় মেটানোটা সরকারের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ।

মুদ্রাস্ফীতি: মুদ্রাস্ফীতি বেড়েই চলেছে। গত ১ বছরের গড় মুদ্রা ১০ এর কাছাকাছি। এর ফলে, জিনিসপত্রের দাম সীমাহীন বাড়ছে। সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে এবং এর ফলে জন অসন্তোষ তৈরি হচ্ছে।

প্রবাসী আয় কমে যাওয়া: প্রবাসী আয় যেভাবে বাড়ার কথা ছিল সেভাবে বাড়ছে না। প্রবাসী আয় কমে যাওয়া সরকারের জন্য একটা বড় ধরনের অস্বস্তির কারণ বলেই মনে করা হচ্ছে।

অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণের হতাশাজনক চিত্র: অর্থনৈতিক সংকট মেটানোর জন্য অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বাড়ানোর উপর গুরুত্ব দেয়া হয়। আর এ অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয়ের ক্ষেত্রেও তেমন কোনও আশাজনক বাস্তবতা দেখা যাচ্ছে না। অভ্যন্তরীণ আয় বৃদ্ধিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এখন পর্যন্ত সফল হতে পারেনি বলেই অনেক অর্থনীতিবিদ মনে করেন।

দুর্নীতি: একদিকে যেমন অর্থনৈতিক সংকট বেড়ে চলেছে অন্যদিকে, দুর্নীতিও কমছে না। ফলে কোন কিছুতেই অর্থনৈতিক সংকট কমিয়ে আনার মত কোন বাস্তব পরিস্থিতি থাকছে না বলেই মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।

বিদ্যুৎ এবং রফতানি আয়ের উপর আঘাত: বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট দেখা দিলে রফতানি আয়ের উপরেও একধরনের সমস্যা তৈরি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষ করে, আমদানি নির্ভর জ্বালানি খাত সামনের দিনগুলোতে অর্থনীতি ও রফতানি আয়ের উপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে বলেই মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। সব কিছু মিলিয়ে এ বিপদগুলোকে কাটিয়ে উঠা সরকারের জন্য একটি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ।

আপন দেশ/এসএমএ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ