ফাইল ছবি
সম্প্রতি নিজের শেষ ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন ঢাকাই ছবির জনপ্রিয় নায়িকা মৌসুমী। তিনি পুরদস্তুর ইসলামী ভাবাপন্ন হয়ে বলেছিলেন, মৃত্যুর পর তার মরদেহ যেন কাউকে দেখানো না হয়। একইসঙ্গে তিনি বলেন, তার ছবি যেন সবাই মোবাইল ফোন থেকে মুছে ফেলেন। মৌসুমী হজে যাওয়ার ইচ্ছার কথাও জানিয়েছেন।
এটি নিয়ে নানা প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হচ্ছে। এর মাঝে কিছু অংশ বিষয়টিকে ভালো দৃষ্টিকোণ থেকে দেখছেন। তাদের মত এমনটি হতেই পারে। যে কেউ ভালো হয়ে যেতে পারেন। তিনি মনে করতে পারেন অতীতে যা করেছেন সব ভুল। এ নিয়ে সমালোচনা থাকলেও তা ধর্তব্য নয়।
অনেকে আবার বলছেন এ সব নতুন কোনো ভং। মৌসুমীর বক্তব্য নিয়ে কথা বলেছেন আলোচিত ধর্মীয় বক্তা মিজানুর রহমান আজহারী। শুক্রবার (৭ এপ্রিল) নিজের ইউটিউব চ্যানেলে মৌসুমী প্রসঙ্গে কথা বলেন তিনি।
মৌসুমীর নাম উল্লেখ না করে মিজানুর রহমান আজহারী বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশে এক চিত্রনায়িকার আকুতির কথা শুনেছি। তিনি বলেছেন— আমার মৃত্যুর পর আমার সিনেমা, ভিডিওগুলো ডিলিট করে দেবেন। সারাজীবন পাপের পথে চলে, পাপের কর্মকাণ্ডে জড়িত থেকে শেষ জীবনে এটি বললে কি আসলে ডিলিট হয়।
এ সোশ্যাল মিডিয়ার জগতে নিরঙ্কুশ স্বাধীনতা বলে কিছুই নেই। আমি চাইলেই কি সব কিছু ডিলিট করতে পারব। তাই আমরা শেষ সময়ে না বুঝে, শালীনতার পথে, সত্যের পথে, কল্যাণের পথে এখন থেকেই যেন থাকি। সময় চলে যাওয়ার পর যেন আমরা না বুঝি।
আমাদের চিত্রনায়িকা যে বোন এ আকুতি পেশ করেছেন, আসলে কি তার পক্ষে গোটাবিশ্বে দর্শক-শ্রোতাদের কাছে তার মুভি, ভিডিওগুলোর যে সিন আছে, সেগুলো কি আসলে ডিলিট করা সম্ভব। দেখা যাবে, মৃত্যুর পরও সেগুলো চলতে থাকবে।
অন্য চিত্রনায়িকাদের উদ্দেশ্যেও কথা বলেন আজহারী। তিনি বলেন, এ বোনের কথা শুনে, রূপালি পর্দার অন্যান্য বোনেরা, আমরাও যেন একটু উপলদ্ধি করি, আমরা কোন পথে হাঁটছি। আমার কাজ, ক্যারিয়ার কি আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে আছে? এটা দিয়ে কি আসলে গণমানুষের কল্যাণ হচ্ছে। নাকি অশ্লীলতার দিকে ধাবিত হচ্ছি। একটু চিন্তা করি আমরা। একটু চিন্তা করি আমাদের লাইফস্টাইল সম্পর্কে।
মানুষের হৃদয়ে একটি নুর থাকে আর কোরআন একটি নুর। দুই নুর একত্রিত হলে আলোকিত হবে। প্রত্যেকের মধ্যে সেই সত্য আছে। একটু চিন্তা করলেই বেরিয়ে আসবে। সঠিক উত্তর পেয়ে যাবেন। চলচ্চিত্র জগতের পথটা কেমন। তবে শালীনভাবে কোনো কিছু উপস্থাপন করলে ভিন্নকথা। অশ্লীলতার দিকে ধাবিত করে এমন চলচ্চিত্র, এগুলোর জন্য আমরা কি জবাব রেডি করেছি।
মৌসুমীর সে স্টাটাস নিয়ে আজহারী বলেন, আমার যে বোন সোশ্যাল মিডিয়াতে যে আকুতি পেশ করেছেন, তার মরদেহ যেন কাউকে না দেখানো হয়। মৃত্যুর পর যেন ভিডিও ডিলিট করে দেয়া হয়। তার (মৌসুমী) দিকে খেয়াল করে অন্যান্য বোন তাদের লাইফস্টাইল নিয়ে একটু ভেবে দেখবেন। আমাদের দেশের অনেক বোনকে দেখেছি এবং ভারত ও পশ্চিমা বিশ্বের অনেক বোনকে দেখেছি, তারা সঠিক পথে ফিরে এসেছেন। অশ্লীলতার পথ থেকে ফিরে এসেছেন।
এর আগে মৌসুমীর মরদেহ না দেখার আকুতি নিয়ে কথা বলেছেন বিশিষ্ট আলেম শায়খ আহমাদুল্লাহ। এ ছাড়া মৌসুমীর হজ করা নিয়ে কথা বলেছেন পরিচালক মালেক আফসারী।
আপন দেশ/আরএ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।