Apan Desh | আপন দেশ

মিয়ানমার সীমান্তবাসীরা থাইল্যান্ডে পালাচ্ছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ২১:৪৬, ১২ এপ্রিল ২০২৪

মিয়ানমার সীমান্তবাসীরা থাইল্যান্ডে পালাচ্ছে

ছবি: সংগৃহীত

মিয়ানমারে জান্তা-বিরোধী বিদ্রোহী বাহিনীর কাছে সীমান্ত শহর মায়াওয়াদ্দির পতন হয়েছে। এরপর থাইল্যান্ডে পালিয়ে যাওয়া মানুষের ঢল থামছেই না। শুক্রবার (১২ এপ্রিল) সকালে থাই সীমান্ত ক্রসিংয়ে দেখা গেছে সারি সারি মানুষ। অনেকেই বিমান হামলার ভয়ে থাইল্যান্ডে পালাচ্ছেন। তারা মনে করছে আগামী দিনগুলোতে লড়াই আরও বাড়ার আশঙ্কা আছে। 

বিদ্রোহী বাহিনীর সঙ্গে কয়েকদিন ধরে চলা লড়াইয়ে থাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী মায়াওয়াদ্দি শহরের একটি সেতুর নিয়ন্ত্রণ হারায় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী।

বৃহস্পতিবার কেয়ন রাজ্যের মায়াওয়াদ্দি শহরের ওই সেতুটি থেকে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর প্রায় ২০০ সেনা পালিয়ে গেছে।

মিয়ানমারের সেনাশাসিত সরকার বেশ কয়েকটি অঞ্চলে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে লড়াই করছে। জান্তা বাহিনী সীমান্ত অঞ্চলের অনেকগুলো লড়াইয়ে পরপর পরাজয় বরণ করেছে।

মায়াওয়াদ্দি শহরটি থাইল্যান্ডের ম্যা সো শহরের কাছে জান্তা বাহিনী পিছু হটায় তারা আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত ক্রসিংয়ের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। মায়াওয়াদ্দিতে জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছে জান্তা বিরোধী গোষ্ঠী কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন (কেএনইউ)। শহরটির নিয়ন্ত্রণ করায় গোষ্ঠীটির অবস্থান শক্তিশালী হয়েছে।

তবে শহরটিতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর পাল্টা হামলার আশঙ্কা আছে। শহরটি পুনর্দখলের চেষ্টায় বিমান বাহিনীর সহায়তায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী সেখানে আবার অভিযান চালাতে পারে। ফলে আগামী দিনগুলোতে লড়াই আরও বাড়ার আশঙ্কা আছে বলেই মনে করছেন থাইল্যান্ডের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া স্টাডিজের এক সহকারী অধ্যাপক।

মায়াওয়াদ্দির এক অধিবাসী তার ৫ বছরের ছেলেকে নিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে থাইল্যান্ডে ঢুকে তিনি জানান, বিমান হামলার ভয়ে তিনি মিয়ানমারের সীমান্ত শহর ছেড়ে পালিয়ে এসেছেন।

থাইল্যান্ডের ম্যা সো শহরের সীমান্ত শহরে জড়ো হওয়া আরেক মা বলেন, বিকট শব্দে তার বাড়ি কেঁপে উঠেছিল। বোমার শব্দের কারণে ভয়ে তারা বাড়িঘর ছেড়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন। “থাইল্যান্ডে তো আর তারা বোমা মারতে পারবে না,” বলেন তিনি।

মিয়ানমারে লড়াই বাড়তে থাকায় মায়াওয়াদ্দি থেকে থাইল্যান্ডের ম্যা সো শহরে পালিয়ে যাওয়া মানুষের সংখ্যা এ সপ্তাহে দ্বিগুণ বেড়ে দিনে প্রায় ৪ হাজার হয়েছে।

বৃহস্পতিবার থাই প্রধানমন্ত্রী শ্রেথা থাভিসিন বলেন, মিয়ানমারের লড়াই থাইল্যান্ডে ছড়িয়ে পড়া উচিত হবে না।

স্থানীরা জানিয়েছেন, থাই শহর মায়ে সোটের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া মোই নদীর অপর প্রান্তের শহর মিয়ানমারের মায়বতী মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিমান হামলা চালাতে পারে।

থাইল্যান্ডে পালিয়ে আসা মো মোয়ে থেট সান নামে এক নারী বলেন, তাই আমি এখানে পালিয়ে এসেছি। তারা থাইল্যান্ডে বোমা ফেলতে পারে না।

থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শুক্রবার জানিয়েছেন, তার সরকার শরণার্থীদের আগমনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। তিনি মিয়ানমারের জান্তাকে সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী পার্নপ্রী বহিদ্ধা-নুকারা বলেছেন, তারা আমাদের প্রতিবেশী দেশ। আমরা সহিংসতা দেখতে চাই না। আমরা তাদের প্রত্যেকের সঙ্গে কথা বলতে চাই। তারা চাইলে আমাদের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ব্যবহার করতে পারে।

আপন দেশ/এবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়