Apan Desh | আপন দেশ

জিম্মি জাহাজের চার জলদস্যুর ছবি প্রকাশ

আপন দেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:৪৯, ১৬ মার্চ ২০২৪

জিম্মি জাহাজের চার জলদস্যুর ছবি প্রকাশ

ছবি : সংগৃহীত

ভারত মহাসাগরে জিম্মি হওয়া বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহতে অবস্থানরত চার সোমালীয় জলদস্যুর ছবি প্রকাশ করেছে ভারতীয় নৌবাহিনী।

শুক্রবার (১৫ মার্চ) বিকালে ভারতীয় নৌবাহিনীর মুখপাত্রের এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্ট থেকে ছবিটি প্রকাশ করা হয়। ছবিতে জাহাজে টহলরত জলদস্যুদের চিহ্নিত করা হয়েছে। যাদের সবার হাতেই ভারি অস্ত্র রয়েছে। তাদের জাহাজের উপরের অংশে দেখা গেছে।

এদিকে জাহাজটির অবস্থান পরিবর্তন হয়েছে। ভারতীয় নৌবাহিনী জানিয়েছে, এমভি আবদুল্লাহর হাইজ্যাক হওয়ার খবর পেয়ে গত মঙ্গলবারই ভারতীয় নৌবাহিনী দূরপাল্লার মেরিটাইম পেট্রল এয়ারক্র্যাফট এলআরএমপি পি-৮১ মোতায়েন করে। পরে ভারতীয় নৌবাহিনী একটি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করে। যুদ্ধজাহাজটি বৃহস্পতিবার জিম্মি জাহাজটিকে নজরদারি করতে শুরু করে।
নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘এমভি আবদুল্লাহর অবস্থান শনাক্ত করার পর জাহাজের নাবিকদের অবস্থা নিশ্চিত করার জন্য তাদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা করেছে এলআরএমপি। তবে জাহাজ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।’

ভারতীয় নৌবাহিনীর কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, মোতায়েন করা যুদ্ধজাহাজটি বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) সকালে ছিনতাই হওয়া জাহাজটির কাছাকাছি ভেড়ে। নৌবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এরপর এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের নিরাপত্তার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায় এবং জাহাজটি সোমালিয়ার জলসীমায় পৌঁছানো পর্যন্ত কাছাকাছি এলাকায় থেকে নজর রাখে।

এদিকে এমভি আবদুল্লাহকে আগের অবস্থান থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। সর্বশেষ ২৩ নাবিকসহ জিম্মি জাহাজটি সোমালিয়ার গারাকাড উপকূলে নোঙর করা ছিল। শুক্রবার জাহাজটিকে আরও প্রায় ৫০ নটিক্যাল মাইল উত্তরে গদবজিরান উপকূল থেকে চার নটিক্যাল মাইল দূরে নোঙর করা হয়।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএমওএ) পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়। কেএসআরএম গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, জাহাজটি আগের অবস্থান থেকে স্থান পরিবর্তন করেছে। মার্চেন্ট নেভির ক্যাপ্টেন আতিক ইউ এ খান গণমাধ্যমকে জানান, সোমালিয়ার স্থানীয় সরকারের নির্দেশক্রমে এমভি আবদুল্লাহ নোঙর তুলে স্থান পরিবর্তন করেছে। তিনি বলেন, জাহাজের বিভিন্ন অবস্থানে মেশিনগান এবং একে-৪৭ আগ্নেয়াস্ত্রসহ নিরাপত্তা প্রহরী বসানো হয়েছে।

আরও পড়ুন <> জবি ছাত্রীর ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আত্মহত্যা

জাহাজ ও নাবিকদের উদ্ধারের বিষয়ে কোনো অগ্রগতি আছে কিনা, জানতে চাইলে মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘নাবিকদের উদ্ধারে আমরা নানাভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। সরকারি পর্যায়ের পাশাপাশি আমরাও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছি। সমন্বিত চেষ্টা চলছে।’

জানা যায়, জাহাজে থাকা ২৩ নাবিকের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়া হলেও বর্তমানে নাবিকদের ব্রিজে থাকা স্যাটেলাইট ফোনের মাধ্যমে পরিবারের সঙ্গে কথা বলার অনুমতি দিয়েছে জলদস্যুরা।

গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় দুপুর দেড়টার দিকে ভারত মহাসাগরে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ সোমালীয় জলদুস্যদের নিয়ন্ত্রণে যায়।

জিম্মি নাবিকদের একাধিক অডিও বার্তাসহ বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, জাহাজটি সোমালিয়ার গ্যারাকাদ উপকূলে থেকে সাত নটিক্যাল মাইল দূরে নোঙর করার পর ১৯ জনের একটি নতুন দল জাহাজের নিয়ন্ত্রণ নেয়। তারা এখন বাংলাদেশি ২৩ নাবিককে জিম্মি করে রেখেছে। জাহাজটি ছিনতাই করার সময় গত মঙ্গলবার তাদের যে অর্ধশতাধিক সশস্ত্র দল ছিল, তারা নোঙর করার পর সেখান থেকে চলে গেছে। জলদস্যুদের প্রথম দলটি অনেকটা হালকা অস্ত্র বহন করছিল। এখন যারা জিম্মি করে রেখেছে, তাদের সবার হাতে ভারী অস্ত্র।

আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদল্লাহ জলদস্যুর কবলে পড়ে। জিম্মিদশা থেকে সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার বিকেলে জাহাজের প্রধান কর্মকর্তা আতিক উল্লাহ খান তার ভাই আবদুল্লাহ খান আসিফের কাছে হোয়াটসঅ্যাপে একটি অডিও বার্তা পাঠান এবং একই দিন সন্ধ্যায় জাহাজের ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ আবদুর রশিদ তার পরিবার এবং জাহাজ মালিক পক্ষের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সুযোগ পেয়েছেন বলে মিজানুল ইসলাম জানান।

আপন দেশ/এমআর

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ